সবার চোখ মনের কথা বলুক বা নাই বলুক, তাই বলে চোখ দুখানি মলিন হয়ে থাকবে এমনটা তো কেউই চাইবেন না!
মুখের ত্বকের যত্নে অনেক মনোযোগী মানুষও প্রায় সময়ই তাদের চোখের কথা বেমালুম ভুলে যান। চোখের দেখভালের খবর মনে পড়ে তখনই, যখন চোখ নিয়ে কোন সমস্যায় পড়েন।
দীর্ঘদিনের অবহেলায় যখন চোখে মলিনতার ছাপ বসে যায়, হঠাৎ একদিন খুব যত্নে সাজানো মুখটাতে চোখগুলো কেমন প্রাণহীন লাগতে থাকে বা ডার্ক সার্কেলের আনাগোনা শুরু হয়, তখন খেয়ালে আসে চোখের কথা। কিন্তু আসলেই কি চোখ এমন হেলাফেলায় রেখে দেয়ার মতন বিষয়? ভাবুন তো একবার, যে চোখে আপনি দুনিয়া দেখছেন সেই চোখ দুটি দেখতে এমন মলিন লাগবে কেনো?
[picture]
শরীরের সার্বিক দেখভালের মধ্যেই চোখের যত্ন নেয়ার বিষয়টি হিসেব করে রাখুন। প্রতিনিয়ত যত্ন নিন চোখের। তাতে আপনার দৃষ্টি এবং সৌন্দর্য সবই অটুট থাকার সম্ভবনা বজায় থাকবে।
চোখের যত্নে মেনে চলতে পারেন যেসব টুকিটাকি পরামর্শ-
- ব্যায়াম আছে আপনার চোখের জন্যেও। মাঝেমাঝে বন্ধ চোখের একদম উপরের অংশে, অর্থাৎ ভ্রূর কোল ঘেঁষে নিচে এবং চোখের নিচের অংশে আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন। দুই বা চার আঙ্গুলের সাহায্যে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করুন এক মিনিট মতন সময় নিয়ে। ঠিক চোখের পাতায় কখনো হাত দিয়ে বেশি চাপ দিতে যাবেন না, তাতে উল্টো ক্ষতিই হতে পারে চোখের। তাছাড়া সরাসরি চোখে হাত দিয়ে চোখ রগড়ানোর অভ্যাস থাকলে সেটা অবশ্যই ছাড়তে হবে।
- দুই হাতের তালু একসাথে করে ঘষুন। হাতে উত্তাপ টের পেলে তখন ওই হাত নিয়ে বন্ধ চোখের পাতায় লাগিয়ে রাখুন। চোখের আরাম হবে অনেক।
- সবাই জানেন, যান্ত্রিক পর্দায় একটানা অনেকটা সময়ের দৃষ্টিপাত চোখের জন্য কতোখানি ক্ষতিকর। কিন্তু এই অভ্যাস তবুও কমবেশি সবার মধ্যেই থাকে, থেকেই যায়। এখন টেলিভিশন, মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার হচ্ছে যেকোন সময় চোখের সামনে চলতে থাকার সামগ্রী। কাজেই এর ভেতরে থেকেও চোখের সুরক্ষার কথা মাথায় রাখা উচিত। অন্তত আধাঘন্টা অন্তর অন্তর চোখদুটোকে বিশ্রাম দিন। বন্ধ করে রাখুন চোখ। এই বিশ্রামের সময়সীমা কমপক্ষে আধা মিনিট হওয়া লাগবে। যদি সম্ভব হয় তবে এক/দুই মিনিট বন্ধ রাখুন চোখ।
- চোখের সুরক্ষায় সবসময়ই চোখকে যথেষ্ট আর্দ্র রাখতে হবে। কাজেই দিনে যতোবার সম্ভব হবে চোখে পানির ঝাপটা দিন। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করুন, খুব দরকার না হলে অযথাই বেশি শীতল পানি দিয়ে চোখ ধোয়ার দরকার নেই। এবং অবশ্যই বেশি করে পানি পান করুন। পানির মাত্রা বেশি এমন ফলমূল খান নিয়মিত।
- সামুদ্রিক মাছ আর ঘন সবুজ রঙের শাকসবজি, এর চেয়ে বড় সুহৃদ চোখের আর কেউ নেই। আপন করে নিন এই খাবারগুলোকে।
- চোখের সৌন্দর্য বজায় রাখতেও খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না। চাইলে সপ্তাহের এক বা দুইদিনের সামান্য একটু যত্নেই সুন্দর চোখজোড়াকে প্রাণবন্ত রাখা যায়।
তার জন্য করতে পারেন এই কাজগুলো-
- সবার জানা, তাও আবার জানাই শসার কথা। শসার দুইটি পাতলা টুকরো চোখের উপর রেখে দিন, পনের মিনিটের বিশ্রামে যান। তারপর ভেজা কাপড়ে মুছে নিন চোখ বা ধুয়ে ফেলুন পানির ঝাপটায়। যখনই শসা কাটা হবে খাওয়ার জন্য, এটা করতে চেষ্টা করুন। অথবা সাপ্তাহিক হিসেব করে নিন নিজের সুবিধা মতন। এতে চোখের মলিন ছাপ দূর হবে, ডার্ক সার্কেল কমবে আর চোখ সতেজ দেখাবে তো অবশ্যই।
- আলুর কথাও অনেকেই জানেন, যা কিনা শসার মতোই চোখের রূপচর্চায় উপকারী বন্ধু। আলুর পাতলা টুকরো অথবা আলু থেঁতো করে রস নিয়ে সেটা লাগান চোখের উপর আর চারপাশে। দশ থেকে পনের মিনিট রাখলেই যথেষ্ট, তারপর স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির ঝাপটায় ধুয়ে ফেলুন।
- চা খেয়ে টি ব্যাগটা রেখে দিন মাঝে মাঝে। চায়ের পর্ব মেটানোর পর একটু অবসর পেলে সেই টি ব্যাগ বন্ধ চোখের পাতায় রাখুন খানিকটা সময়ের জন্য। চোখের শান্তি হবে, সাথে মনেরও।
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
মডেল –সানজিদা তন্বী
ছবি – সাইদ সিদ্দিকি