‘বিয়ার্ড তো নিজ থেকেই গ্রো করে, তাই এর শেইপও নিজ থেকেই হবে। এর আলাদা করে যত্ন নেয়ার প্রয়োজন নেই।’ অনেক ছেলেরই ধারণা এমন। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে বিয়ার্ড গ্রো করার পর এর সঠিক যত্ন না নিলে দেখতেও ভালো লাগবে না, আর ড্যানড্রাফ ও ইচিনেসের প্রবলেমও বেড়ে যাবে। প্রতিদিন বিয়ার্ড ক্লিন এবং সঠিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে এই সমস্যাগুলো একদম কমে আসবে। আর এখন তো ছেলেদের ফ্যাশনে বিয়ার্ড ইম্পরট্যান্ট একটি পার্ট। তাছাড়া বিয়ার্ড ক্লিন বা হেলদি না থাকলে অফিসের মিটিং বা ইউনিভার্সিটির প্রেজেন্টেশনে মোটেও আপনাকে প্রেজেন্টেবল লাগবে না। যার কারণে কনফিডেন্স লেভেলও বাড়বে না। তাই বিয়ার্ড হতে হবে হেলদি। হেলদি বিয়ার্ড পাওয়ার জন্য কেমন রুটিন ফলো করতে হবে সেটাই জানাবো আজকের আর্টিকেলে।
হেলদি বিয়ার্ড পাওয়ার জন্য যেমন রুটিন ফলো করতে হবে-
১) রেগুলার ওয়াশ করুন
গাল ভর্তি দাড়ি মানেই কিন্তু হেলদি বিয়ার্ড নয়! কারণ প্রতিদিন ডাস্ট পার্টিকেলস, ফুড অ্যান্ড ড্রিংকস পার্টিকেলস, ডেড স্কিন সেলস ইত্যাদি বিয়ার্ডে লেগে থাকে। আর এগুলো ক্লিন না করলে বেড়ে যেতে পারে ইচিনেস প্রবলেম। এ সমস্যা কমাতে সপ্তাহে অন্তত দুইবার বিয়ার্ড শ্যাম্পু দিয়ে ওয়াশ করে নিন। যদি আলাদা করে শ্যাম্পু ইউজ না করতে চান তাহলে এমন কোনো প্রোডাক্ট ইউজ করুন যেটি একইসাথে ফেইস ও বিয়ার্ড ক্লিন করবে।
২) বিয়ার্ড ময়েশ্চারাইজড রাখুন
ইচিং প্রবলেমের কারণে অনেকে বিয়ার্ড বড় করতে চান না। তাছাড়া ইচিং হলে বেশ আনকমফোর্টেবল লাগে। নরমাল হেয়ারের চেয়ে বিয়ার্ড কিছুটা রাফ হয়। তাই হেলদি বিয়ার্ডের জন্য অয়েল বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। এটি বিয়ার্ডের সাথে সাথে স্কিনকেও ময়েশ্চারাইজড রাখে। এছাড়া ফেসিয়াল হেয়ার সফট রাখতে এবং হেয়ার গ্রোথ প্রমোট করতেও এটি বেশ হেল্পফুল। বিয়ার্ড অয়েল অ্যাপ্লাইয়ের সঠিক সময় হচ্ছে গোসলের পর। কয়েক ড্রপ অয়েল হাতের তালুতে নিয়ে পুরো দাড়িতে ও গোঁফে ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করে নিন। স্কিন যদি অনেক বেশি ড্রাই হয় সেক্ষেত্রে প্রতিদিন ইউজ করতে হবে। এছাড়া সপ্তাহে ২/৩ দিন ইউজ করলেই চলবে।
৩) ড্যানড্রাফ কিওর করুন
চুলে ড্যানড্রাফ হয় এটা তো সবাই জানি, তাই বলে কি বিয়ার্ডেও ড্যানড্রাফ হয়? হ্যাঁ, চুলের মতো বিয়ার্ডেও ড্যানড্রাফ হয়। তবে এটি দূর করা যায়। স্কিনের অনেকখানি জায়গা বিয়ার্ড দিয়ে কভার করা থাকে বলে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস খুব সহজে আক্রমণ করে। Malassezia নামে এক ধরনের ইস্ট ওভার গ্রোথ করতে পারে। এই ইস্টের কারণে স্কিনে রেডনেস, ফ্লেকিনেস দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যাগুলো দূর করার জন্য বেছে নিতে হবে সঠিক শ্যাম্পু। এছাড়া যেসব প্রোডাক্টে ১% হলেও ketoconazole নামে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট থাকে, সেগুলো বিয়ার্ড ড্যানড্রাফ করতে বেশ হেল্পফুল। এটি একটি অ্যান্টি ফাঙ্গাল ইনগ্রেডিয়েন্ট যেটি ফাঙ্গাস ও ইস্ট প্রিভেন্ট করতে হেল্প করে। যদি ড্যানড্রাফ সমস্যা বেশি হয়, সেক্ষেত্রে ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারেন।
৪) বিয়ার্ড ট্রিম করুন
বিয়ার্ড কেয়ার রুটিনে অ্যাসেনশিয়াল একটি পার্ট হচ্ছে বিয়ার্ড ট্রিম করা। অনেকে কেঁচি দিয়ে ট্রিম করেন। তবে ট্রিমিং এর আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে ট্রিমার ইউজ করা। বিয়ার্ড গ্রো করতে চাইলে ৬/৮ সপ্তাহ পর পর এবং শেইপ করতে চাইলে ৩/৪ সপ্তাহ পর পর ট্রিম করা উচিত। তবে হ্যাঁ, এটার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। আপনি আপনার সুবিধামতো ট্রিম করতে পারেন।
৫) নিয়মিত আঁচড়ে নিন
চুল ভালো রাখতে আমরা যেমন রোজ চুল আঁচড়াই, তেমনই সুন্দর দাড়ি পেতে হলে রোজ দাড়িও আঁচড়াতে হবে। এতে যেমন দাড়িতে জট লাগবে না, তেমনই শেইপও ঠিক থাকবে। অনেকেই বলেন, বিয়ার্ড এক ডিরেকশনে গ্রো করে না। প্রতিদিন আঁচড়ালে রাইট ডিরেকশনে বিয়ার্ড হেয়ার গ্রো করবে। এছাড়া খাবার খাওয়ার সময় ফুড পার্টিকেলস দাড়ির ফাঁকে আটকে যায়। নিয়মিত আঁচড়ালে এগুলো রিমুভ হয়।
৬) অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন
স্কিন হাইড্রেটেড রাখতে এবং সুদিং ফিল পেতে অ্যালোভেরা জেল বেশ হেল্পফুল। ফেসিয়াল হেয়ার ময়েশ্চারাইজের জন্য এটি খুব ভালো কাজ করে। সেই সাথে ড্রাই স্কিন সফট রাখে। বিয়ার্ডে ফিরিয়ে আনে শাইন।
ছেলেদের স্কিন কেয়ার রুটিন মেয়েদের চেয়ে একটু আলাদা। কারণ আলাদাভাবে এই রুটিনে অ্যাড হয় বিয়ার্ড কেয়ার। কিন্তু নিয়মিত যত্নের অভাবে বিয়ার্ডও হয়ে উঠতে পারে আনহেলদি। নিজেকে কনফিডেন্টলি প্রেজেন্ট করতে তাই বিয়ার্ড কেয়ার করাও জরুরি। মেয়েদের প্রোডাক্টের পাশাপাশি সাজগোজের ওয়েবসাইট ও অ্যাপেও কিন্তু আলাদা করে মেন’স ক্যাটাগরি আছে। ট্রিমার, শেভিং ক্রিম, স্কিনকেয়ার ও গ্রুমিং প্রোডাক্টস সবই পেয়ে যাবেন একই প্ল্যাটফর্মে। প্রোডাক্টগুলো অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম এবং সাজগোজের চারটি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) থেকে কিনতে পারেন।
ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক