চোখের নীচের ডার্ক সার্কেল, পিম্পলের দাগ লুকানো কিংবা স্কিনের যে কোনো ইমপারফেকশন ঢাকা – এক কথায়, কনসিলার ছাড়া বেসিক মেকআপ বলতে গেলে অসম্পূর্ণ। প্রতিদিনের মেকআপ রুটিনে যারা ফাউন্ডেশন এড়িয়ে চলেন তারাও কনসিলারের সাহায্যে চটজলদি স্মুথ আর ফ্ললেস স্কিন পেতে চান। কনসিলারের ফর্মুলা ফাউন্ডেশন থেকে বেশ খানিকটা ঘন হয় এবং এর কভারেজের কারণে স্কিনের ইমপারফেকশনগুলো সহজেই ঢেকে যায়। মেকআপ ব্যাগের অ্যাসেনশিয়াল একটি প্রোডাক্ট হলেও কনসিলারের একটা সমস্যা আমরা প্রায়ই দেখি, সেটা হলো ক্রিজিং। অর্থাৎ অ্যাপ্লাইয়ের কিছুক্ষণের মধ্যেই কনসিলার চামড়ায় ভাঁজ ফেলে পুরো লুকটা কেকি করে দেয়। এই কারণে স্কিন দেখতে নিষ্প্রাণ লাগে এবং বয়স বেশি মনে হয়। কীভাবে কনসিলার ক্রিজিং এড়ানো যায় সেটারই ৬টি হ্যাকস সম্পর্কে জানাবো আজকের ফিচারে।
কীভাবে কনসিলার ক্রিজিং এড়ানো যায়?
কনসিলার অ্যাপ্লিকেশন ও প্রিপারেশন সংক্রান্ত সঠিক ধারণা থাকলে এই বিড়ম্বনা এড়ানো সম্ভব। চলুন চটজলদি ৬টি দারুণ হ্যাকস জানা যাক যা দিয়ে সহজেই রোধ করা যাবে কনসিলার ক্রিজিং।
১) কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের আগে আইক্রিম ব্যবহার করা
কনসিলারের ফর্মুলা বেশ ঘন হয় এবং সাধারণত এতে ময়েশ্চায়ের পরিমাণ কম থাকে। এজন্য কনসিলার সহজেই স্কিনকে ড্রাই করে দেয়। ড্রাই স্কিনে সরাসরি ফুল কভারেজের কনসিলার অ্যাপ্লাই করলে তা সহজেই ক্রিজ করে। এ কারণে চোখের নীচের ড্রাই স্কিন আর কনসিলার দুটো মিলে আন্ডার আই এরিয়া হয়ে ওঠে আরও ডিহাইড্রেটেড এবং কনসিলার ফেটে গিয়ে খুবই বাজে দেখায়।
চোখের নীচে ড্রাই স্কিনের কারণে হওয়া এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের আগে ব্যবহার করুন ভালো মানের আইক্রিম। আইক্রিম আপনার চোখের নিচের সেনসিটিভ অংশের আর্দ্রতা ধরে রাখবে এবং কনসিলার নিখুঁত ফিনিশিং দিবে।
২) লাইট ওয়েট কনসিলার বেছে নেয়া
অনেকে হেভি ও ফুল কভারেজ কনসিলারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও সচরাচর ব্যবহারের জন্য লাইট ওয়েট কনসিলারই উপযুক্ত। চেষ্টা করবেন এমন একটি কনসিলার বেছে নিতে যা লাইট ওয়েট, সেই সাথে প্রয়োজনীয় কভারেজও দেয়। এ ধরনের কনসিলারের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এটি সহজেই স্কিনে অ্যাবজর্ব হয়ে যায়। এতে মেকআপ হয় আরও নিখুঁত ও সুন্দর। হেভি কভারেজ ও ওয়েটের কনসিলার শুকিয়ে যায় বলে কম সময়ে ব্লেন্ড করাও বেশ কষ্টকর। এটি স্কিনকেও ড্রাই করে ফেলে। যার কারণে কনসিলার সহজেই ক্রিজ করে।
৩) সঠিক উপায়ে কনসিলার ব্যবহার করা
কনসিলার কীভাবে অ্যাপ্লাই করতে হবে এ নিয়ে ইন্টারনেট ঘুরলে একেক জায়গায় একেক তথ্য পাওয়া যায়। তবে মেকআপ এর জগতে খুব প্রচলিত একটি কথা হচ্ছে, ‘লেস ইজ মোর’ অর্থাৎ ভালো ফলাফল পেতে হলে ব্যবহার করতে হবে অল্প পরিমাণ প্রোডাক্ট। কনসিলারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কনসিলার ক্রিজিংয়ের অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাপ্লাই করা। প্রোডাক্ট বেশি হলে সেটা ব্লেন্ড করাও বেশ কষ্টসাধ্য। এই বিড়ম্বনা এড়াতে ট্রায়াঙ্গেল শেইপে কনসিলার অ্যাপ্লাই করে নিতে পারেন। এতে ফেইস ব্রাইট দেখাবে এবং এটা ডিসকালারেশনও ফিক্স করবে।
আন্ডার আই পাফিনেসের ভিজিবিলিটি কমাতে এই স্টেপটি দারুণ হেল্পফুল। কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের পর খুব বেশি রাব করা যাবে না, এতে মেকআপ আনইভেন দেখাবে। ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ড্যাব ড্যাব করে নিন, এতে মেকআপ লুক হবে পারফেক্ট ও ফ্ললেস।
৪) কনসিলার সেট করে নেয়া
কনসিলার কিছুক্ষণ পর ছড়িয়ে যায় বলে বাজেভাবে ক্রিজিং হয় এবং পুরো লুক নষ্ট করে দেয়! এ সমস্যা এড়াতে অ্যাপ্লাইয়ের পর ভালো মানের ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নিন। ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার যেহেতু ড্রাই তাই এটি কনসিলার দীর্ঘসময় পরও ছড়িয়ে যেতে দেয় না।
৫) বেক করে নেয়া
বেকিং হচ্ছে বেশ খানিকটা পাউডার অ্যাপ্লাইয়ের পর কিছুক্ষণ একে সেট করতে দেয়া, এরপর ব্রাশের সাহায্যে অতিরিক্ত পাউডার ঝেড়ে ফেলা। এতে মেকআপ লং লাস্টিং হয়। আমাদের মতো গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় মেকআপ গলে যাওয়া একটি বড় সমস্যা। কনসিলার যেহেতু ক্রিমি আর হেভি প্রোডাক্ট, তাই গরমে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি। এজন্য একে বেক করে নিলে দীর্ঘক্ষণ ঝামেলামুক্ত থাকা যায়।
৬) বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহার করা
মেকআপ অ্যাপ্লিকেশনের সবচেয়ে কমন দুটি টুলস হচ্ছে ব্রাশ ও বিউটি ব্লেন্ডার। এ দুটির মাঝে বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে কনসিলার অ্যাপ্লাই করা সবচেয়ে কার্যকর। এতে ইজিলি বেশ স্মুথ ফিনিশিং পাওয়া যায়। ব্রাশের সাহায্যে কনসিলার অ্যাপ্লাই করলে অনেক সময় ক্রিজি লুক দেয়। তাই ঝামেলা এড়াতে বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহার করাই শ্রেয়।
এই তো জেনে নিলেন, ক্রিজিং এড়ানোর জন্য দারুণ কয়েকটি হ্যাকস। এভাবে কনসিলার অ্যাপ্লাই করে দেখুন, ফ্ললেস মেকআপ পেতে আর কোনো ঝামেলাই হবে না! কনসিলারসহ অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টস পেয়ে যাবেন সাজগোজে। অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের চারটি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের মেকআপ, স্কিন ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট।
ছবিঃ সাজগোজ