মেকআপের সাথে সাথে বিভিন্ন হেয়ারস্টাইল করতে তো আমরা সবাই পছন্দ করি। যখন হেয়ার স্টাইলিং পারফেক্ট হয়, তখন আমাদের এক্সাইটমেন্ট একদম ডাবল হয়ে যায়! তবে যাদের চুল পাতলা, তারা যখন কোনো অকেশন কিংবা ইভেন্টের আগে হেয়ার স্টাইল করেন, তখন বেশ চিন্তায় পড়ে যান। তারা মনে করেন যেহেতু তাদের চুলে ভলিউম কম, তাই যে হেয়ারস্টাইল-ই করা হোক না কেন, চুল ফ্ল্যাট দেখাবে! পাতলা চুলে স্টাইলিং নিয়ে এমন সিচুয়েশনে অনেকেই পড়েন।
আসলে পাতলা চুলে হেয়ারস্টাইল করা কিছুটা ট্রিকি, তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আজকের ফিচারে আমি শেয়ার করবো ফ্ল্যাট বা পাতলা চুলের জন্য পারফেক্ট ৩টি হেয়ারস্টাইল, যেগুলো আপনারা নিজেরাই ঘরে বসে খুব কম সময়ে ইজিলি করে ফেলতে পারবেন। তাহলে দেখে নেই চলুন।
পাতলা চুলে স্টাইলিং
অনেকের চুল জেনেটিক্যালি পাতলা হয়ে থাকে। আবার অনেকেরই হরমোনাল সমস্যা, লাইফ স্টাইলে চেঞ্জ কিংবা ভুল কোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার কারণে চুল পড়ে পাতলা হয়ে যায়। তবে চুল পাতলা হওয়ার কারণ যেটাই হোক না কেন, মেকওভারকে কমপ্লিট করতে হেয়ারস্টাইল কিন্তু করতেই হবে, তাই না? চলুন জেনে নেওয়া যাক পাতলা চুলে কোন কোন স্টাইল ইজিলি করা যায়।
হেয়ারস্টাইল ১- ফ্রন্ট টুইস্ট
যাদের চুল পাতলা, তাদের বেশিরভাগেরই চুলের সামনের অংশে ভলিউম কম থাকে। যদি আপনার ক্ষেত্রেও এমন হয়, তাহলে এই হেয়ারস্টাইল ট্রাই করতে পারেন। মিডিয়াম থেকে লং লেন্থের চুলের জন্য এই স্টাইলটি একদম পারফেক্ট।
- প্রথমেই চুল ভালোভাবে আঁচড়ে নিন
- যেকোনো একপাশের সামনের দিকের চুলগুলো থেকে কিছুটা অংশ আলাদা করে নিন
- তারপর ধীরে ধীরে টুইস্ট করতে থাকুন
- এরপর টুইস্ট করা চুল পেছনে নিয়ে ক্লিপের সাহায্যে আটকে নিন
- সেইম প্রসেসে সেকশন করে অন্যপাশেও চুল টুইস্ট করে আটকে নিন
- তারপর পেছনের চুলগুলো দিয়ে হালকা হাতে মেসি বান বা খোঁপা করে নিন অথবা ছেড়েই রাখুন
ব্যস! হয়ে গেলো ইজি ও ট্রেন্ডি হেয়ারস্টাইল। যেহেতু আমার চুল পাতলা, তাই এই হেয়ার স্টাইলটি আমি প্রায়ই করে থাকি। পাতলা চুলে স্টাইলিং করতে যেয়ে ডেইলি যদি আপনি স্ট্রাগল করে থাকেন, তাহলে এভাবে একবার ট্রাই করে দেখুন।
হেয়ারস্টাইল ২- কার্লিং
পাতলা ও স্ট্রেইট চুলে ইনস্ট্যান্ট ভলিউম আনতে হেয়ার কার্ল করা একটি দারুণ ট্রিক। এক্ষেত্রে আমার সাজেশন হলো চুলে লুজ কার্ল করুন। শুধুমাত্র নিচের অংশটুকু কার্ল করতে পারেন, কারণ পাতলা চুলে এভাবে কার্ল করা হলে চুল দেখতে অনেকটা ভলিউমিনাস ও বাউন্সি লাগে।
- প্রথমেই চুলে হিট প্রোটেকটিং স্প্রে বা সিরাম ইউজ করে নিন
- তারপর হেয়ার কার্লার দিয়ে খুব সাবধানে হেয়ার কার্ল করতে থাকুন
- কার্ল করার পর আপনার হেয়ার লেন্থ শর্ট হলে চুল ছেড়েই রাখতে পারেন
ওয়েস্টার্ন ড্রেস, কামিজ বা শাড়ির সাথে এভাবে হেয়ারস্টাইল করুন, দেখতে কিন্তু ভালোই লাগবে৷ ট্র্যাডিশনাল ভাইব আনতে যদি হাতের কাছে ফুল থাকে, তাহলে চুলের একপাশে ফুল ক্লিপের সাহায্যে আটকে দিন।
আবার চুলের লেন্থ যদি মিডিয়াম বা লং হয়, তাহলে কার্ল করার পর চুলে লুজ বেণি করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে চাইলে সাধারণ বেণি করতে পারেন, আবার ফ্রেঞ্চ বেণিও খুব সুন্দর লাগবে৷ যদি সাধারণ বেণি করেন, তাহলে বেণির প্রত্যেকটা সেকশন আঙুলের সাহায্যে একটু লুজ করে দিন৷ এভাবে হেয়ারস্টাইল করে আপনারা যেকোনো অকেশন যেমন- গায়ে হলুদ, বিয়ে কিংবা দাওয়াতে অ্যাটেন্ড করতে পারবেন।
হেয়ারস্টাইল ৩- ব্যাক কম্বিং
ব্যাক কম্বিং এমন একটি ট্রিক যেটার মাধ্যমে পাতলা চুলেও স্টাইলিং করা যায় খুব সহজে। ইনস্ট্যান্টলি চুলে ভলিউম আসে, তাই না? ব্যাক কম্বিং ট্রিক ফলো করে বিভিন্নভাবে হেয়ারস্টাইল করা যায়।
- প্রথমে চুলের সামনের দিক থেকে কিছুটা চুল একটা চিরুনির সাহায্যে আলাদা করে নিয়ে টিজ করুন
- অথবা ফ্রন্ট পাফ না করেও মাঝ বরাবর সিঁথি করে নিয়ে পেছনের চুল হালকা পাফ করতে পারেন
- টিজিং কম্ব নিয়ে মাঝের চুলগুলো ব্যাক কম্ব করা শুরু করুন
- পাফ করা হয়ে গেলে পেছনে ক্লিপের সাহায্যে চুলগুলো আটকে নিন
- চাইলে হেয়ার স্প্রে দিয়ে পাফ সেট করে নিতে পারেন
- এবার সামনে ছেড়ে রাখা চুলগুলো পছন্দমতো স্টাইলিং করে নিন (বেণি বা টুইস্ট করতে পারেন)
পেছনের চুল চাইলে ছেড়েও রাখতে পারেন। নিচের দিকে কার্ল করে নিলে দেখতে দারুণ লাগবে। তবে যদি কোনো ফরমাল ইভেন্ট হয়, তাহলে পেছনের চুলগুলো দিয়ে পনিটেইল করে ফেলুন। এতে স্লিক লুক আসবে, আবার দেখতেও স্মার্ট লাগবে। অফিস, মিটিং, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদির জন্য এই হেয়ারস্টাইল একদম পারফেক্ট।
এই ৩টি হেয়ারস্টাইল করতে কম সময় লাগে, আর ঘরে বসে নিজে নিজেই খুব সহজে করা যায়। তাই এই হেয়ারস্টাইলগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন। বিশেষ করে যাদের চুল পাতলা, তাদেরকে এই ধরনের হেয়ারলুক দারুণ স্যুট করে।
বোনাস টিপস
পাতলা চুলের জন্য ভলিউম লেয়ার ও শর্ট লেয়ার কাট একদম পারফেক্ট। চুলে ভলিউম আনতে কনসার্ন অনুযায়ী সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ইউজ করুন। এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত হবে না যেগুলো চুলকে আরও ফ্ল্যাট ও ফ্রিজি করে দেয়! এছাড়াও চুল হেলদি রাখতে সপ্তাহে অন্তত দু’বার হেয়ার অয়েল অ্যাপ্লাই করুন। চাইলে উইকেন্ডে হেয়ার মাস্কও ইউজ করতে পারেন। যারা পাতলা চুল নিয়ে সমস্যায় আছেন, তাদের জন্য অ্যালোভেরা ও আমলার হেয়ার প্যাক ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
হেয়ার স্টাইল ও টিপস একই সাথে জানা হয়ে গেলো! চুলে যা-ই ইউজ করুন না কেন, প্রোডাক্টগুলো যেন অথেনটিক হয়, সেটা নিশ্চিত করুন। অথেনটিক স্কিন কেয়ার, মেকআপ ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টসের হিউজ কালেকশন থাকায় আপনারা প্রয়োজনীয় জিনিস পারচেজ করতে পারেন সাজগোজ থেকে। অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ