অফিসে কাজের চাপ, তার উপর অফিসের বাইরেও মাঝে মাঝে যেতে হচ্ছে। এই ব্যস্ততার মাঝে নিজের রূপচর্চার কথা ক’জনেরই বা মনে থাকে? এতকিছুর মাঝে খানিকটা অবসরে নিজেকে একটু সুন্দর রাখার জন্য মনোযোগী হলে ক্ষতি কী? কাজের ফাঁকে একটু সময় করে যদি আমরা ফ্রেশ হয়ে নিই তাহলে দেখতে যেমন ভালো লাগে, মনটাও থাকে ফুরফুরে। অফিসে চটজলদি কীভাবে সাজগোজ করবেন সে ব্যাপারে আজ কিছু টিপস দেবো।
একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, শত ব্যস্ততার মাঝেও খানিকটা অবসর মিলেই যায়। আর সে সময়টায় সেরে নেওয়া যায় চটজলদি রূপচর্চা। প্রায় সময়েই বিভিন্ন পত্রপত্রিকা কিংবা ম্যাগাজিনে, অফিসের কাজের ফাঁকে বিভিন্ন শারীরিক কসরত বা রূপচর্চা বিষয়ে টিপস দেওয়া থাকে। প্রায় সময়েই এগুলো চোখে পড়ে। করা হয়ে আর ওঠে না সময় স্বল্পতার কারণে। এ কথা সত্যি, সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে বের হওয়ার সময় নিজের বেজ মেকআপটাও ঠিকমতো করে আসা যায় না। সেখানে অফিসে বসে রূপচর্চার করাটা অকল্পনীয়। আবার ট্রাফিক জ্যাম ঠেলে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত অর্ধেক হয়ে যায়। শরীরজুড়ে থাকে অবসাদ। তখন আর কারোও ইচ্ছে করে না রূপচর্চা নিয়ে মাথা ঘামাতে। তবে দিনের বড় একটা সময় যেহেতু অফিসেই কেটে যায় সে কারণে অফিসে বসেই সেরে নেওয়া উচিত ত্বকের যত্ন ও রূপচর্চা। আসলে পুরোটাই নির্ভর করবে নিজের মাইন্ড সেটআপের উপর। একবার মাইন্ড সেটআপ করে নিলে দেখা যাবে ব্যাপারটা রুটিন ওয়ার্কের মতো হয়ে গেছে। আর রূপচর্চার ব্যাপারটা যে খুব কঠিন বা সময় সাপেক্ষ তা কিন্তু নয়। খুব অল্প সময়ে নিজেকে রিফ্রেশ করে নেওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সঙ্গে প্রয়োজনীয় জিনিস রাখতে হবে। যেমন—ফেসওয়াশ, সানস্ক্রিন, টিস্যু এবং প্রয়োজনীয় কসমেটিকস। কসমেটিকসগুলো ব্যাগেই রাখতে পারেন। তবে অন্য জিনিসগুলো একটা ছোট বক্সে ভরে অফিসে আপনার নিজস্ব লকারে রেখে দিন। সময়-সুযোগ বুঝে সেগুলো ব্যবহার করুন, অফিসে সাধারণত এসির ভেতর থাকতে হয়। এতে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয় বেশি। আর তৈলাক্ত ত্বক আরও বেশি চিটচিটে হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সুযোগ পেলে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন। আর মুখ তেলতেলে হলে টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে নেবেন। এক ফাঁকে কটন বলে গোলাপ জল লাগিয়ে মুখটা মুছে ফেলুন। অনেক ফ্রেশ ও সতেজ লাগবে। এসিতে থাকতে থাকতে ঠোঁট শুকিয়ে যায়। তাই সম্ভব হলে মাঝে দু’একবার লিপস্টিক মুছে নতুন করে লাগান। আর ব্যাগে লিপগ্লস রাখুন। কিছুক্ষণ পর পর হালকা একটু লিপগ্লস লাগিয়ে নিন। ফ্রেশ দেখাবে। অফিসের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে যেমন সানস্ক্রিন লাগিয়েছিলেন, তেমনি অফিসের কাজে বাইরে বের হতে হলে আবার লাগান। ভাবতে পারেন, একবার তো লাগিয়েছি। আসলে এটা ২-৩ ঘণ্টার বেশি কাজ করে না। তাই তিন ঘণ্টা অন্তর অন্তর লাগানোই ভালো। বিশেষ করে যাদের ঘোরাঘুরির মধ্যে থাকতে হয়।
টিপসঃ
-সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বেসিক একটা মেকআপ সবাই করে থাকে। সেই বেজ মেকআপ ঠিক রাখতে হলে বার বার মুখে হাত দেওয়া যাবে না।
– ঠিক তেমনি ভাবে বারবার চুলে হাত দেওয়া উচিত নয়। এতে করে চুলের বাউন্সি ভাব নষ্ট হয়।
– দিনের বেশির ভাগ সময় যেহেতু এসির মধ্যে কাজ করতে হয় সেহেতু তৈলাক্ত ত্বক আরও বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে হাতের কাছে সবসময় টিস্যু রাখতে হবে। তবে ওয়েট টিস্যু কখনই নয়।
-আবার অন্যদিকে শুষ্ক ত্বক আরও বেশি ড্রাই বা শুষ্ক হয়ে যায়। তাই মাঝে মধ্যেই টোনার স্প্রে করা উচিত।
-কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যেই ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজড গ্লস ব্যবহার করা উচিত। এতে ঠোঁট ফাটবে না।
– হাত ধোয়ার পর হ্যান্ড লোশন লাগিয়ে নিতে হবে। তা না হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে।
-অফিসে থাকা অবস্থায় দেড় থেকে দু লিটার পানি পান করা উচিত। এতে করে ত্বক ভালো থাকবে।
এ কাজগুলো হাঁটতে চলতেই করা যায়। খুব বেশি স্ট্রেস নেওয়ার প্রয়োজন নেই। সারাদিন সতেজ থাকাই কাম্য।
লিখেছেনঃ রোজেন
ছবিঃ ইউনিভার্সালস্ক্রিবালস.কম