শরীর মোটা নয় কিন্তু পেটে অনেক মেদ কিংবা দেহের কিছু কিছু স্থানে মেদ জমায় খুবই অস্বস্তি বোধ করছি। এমন কথা অনেক বেশি শোনা যায় আজকাল। এর কি কোন গতি নেই? আছে অবশ্যই আছে। আসুন জেনে নিই পেটের মেদ কমানোর উপায় তথা পেটের মেদ কমাতে খাবার নিয়ে বিস্তারিত যা আপনার শরীররকে অবাঞ্ছিত মেদ থেকে রক্ষা করবে।
পেটের মেদ কমানোর উপায় কী?
১. প্রতিদিন সকালটা শুরু করুন লেবুর সরবত দিয়ে। এটা হলো পেটের মেদ কমানোর সবচেয়ে কার্যকরী ১টি পদ্ধতি। ১টি গ্লাসে হালকা গরম পানি নিয়ে তাতে লেবু চিপে সরবত করে নিন। সাথে একটু লবণ মিশিয়ে নিবেন। ইচ্ছে হলে একটু মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু চিনি মিশাবেন না। প্রতিদিন সকাল বেলা এই সরবতটি পান করুন। এই সরবত আপনার বিপাক প্রক্রিয়া বাড়ায় এবং পেটের মেদ কমায়।
২. সাদা ভাত কম খান অথবা কিছুদিনের জন্য ছেড়ে দিন সাদা চালের ভাত খাওয়া। সাদা চালের ভাতের বদলে বিভিন্ন গম জাতীয় শস্য যুক্ত করে নিন আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। তাছাড়া লাল চালের ভাত, গমের রুটি, ওটস, অন্যান্য শস্য যুক্ত করে নিতে পারেন।
৩. চিনি জাতীয় খাবার থেকে দূরেই থাকুন একটু। অর্থাৎ চিনিকে না বলুন এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন মিষ্টি, চকলেট, আইসক্রিম, ফিরনী, সেমাই ইত্যাদি থেকে কিছুদিন এর জন্য বিদায় নিয়ে নিন।
৪. উচ্চ তেল যুক্ত খাবার এবং কোল্ড ড্রিংকস শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চর্বি জমিয়ে রাখে। যেমন আমাদের পেট কিংবা উরু। সুতরাং বুঝেই ফেলেছেন যে এই খাবার গুলো তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে।
৫. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন যদি আপনি আপনার পেটের মেদ কাটিয়ে উঠতে চান তবে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান আপনার শরীরের বিপাকের হার বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার শরীরের বিষাক্ত উপাদানগুলোকে দূর করে দিবে। তাই পানিকে প্রাকৃতিক ক্লিঞ্জার বলা হয়।
৬. কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া সকাল বেলা চুষে খান এবং তার পরে লেবুর সরবতটি খান। এই চিকিৎসাটি আপনার ওজন কমানোর জন্য সাহায্য করবে এবং শরীরের রক্ত প্রবাহ সহজ করবে।
৭. যতদিন পেটের মেদ না কমবে ততদিন নন-ভেজ খাদ্য অর্থাৎ মাংস, মাছ, ডিম, দুধ বাদ দিতে হবে। তবে মাছের টুকরোর চামড়া ফেলে খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু তুলনামূলক কম খাওয়া উচিত।
৮. খাদ্য তালিকাটি ফল আর সবজি দিয়ে পরিপূর্ণ করে নিন। প্রতিদিন সকাল এবং বিকাল এই দুই সময় ফল ও সবজি খান। তবে এক্ষেত্রে পানি জাতীয় ফল বাছাই করুন। এই অভ্যাসটি আপনার দেহে এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ লবণের ঘাটতি পূরণ করবে।
৯. ঝাল খাবার খান। অবাক হচ্ছেন? অবাক হবেন না। ঝাল খাবেন কিন্তু ঝাল গুলো আসবে দারচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ থেকে। এগুলো রান্নায় ব্যবহার করুন। এই মশলা গুলো স্বাস্থ্যকর। এগুলো শরীরের ইনসুলিন সরবরাহ বাড়ায় এবং রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। তাই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী।
১০. পেটের মেদ কমাতে খাবার নিয়ে সাবধান হতেই হবে। তবে সবকিছুর পরেও মেদ কমাতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই।
মনে মনে ভাবছেন সব খাবারই নিষিদ্ধ। কিন্তু সুন্দর ও সুস্থ দেহ পেতে হলে তথা পেটের মেদ কমাতে খাবার নিয়ে কিছুটা তো সহ্য করতেই হবে। কথায় আছে না “কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হয়।”
ছবিঃ পিন্টারেস্ট.কম, টুইটার.কম, দ্যা কুরিয়ার