প্রোগ্রামে অ্যাটেন্ড করার জন্য খুব সুন্দর করে মেকআপ করেছেন। কিন্তু লাইট পড়লেই ফেইস দেখতে অতিরিক্ত হাইলাইটেড লাগছে। ফেইসের হাইলাইটিং পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত হাইলাইটার ইউজ করলে এ প্রবলেম হতে পারে। তাই গ্লোয়ি ও ড্রামাটিক লুক ক্রিয়েট করার জন্য পারফেক্ট ওয়েতে হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা জরুরি। আজ জানাবো হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।
গ্লোয়ি ও ড্রামাটিক লুক ক্রিয়েট করতে হাইলাইটার
আচ্ছা বলুন তো, আমরা কেন হাইলাইটার ইউজ করি? ফাউন্ডেশন, কনসিলার, প্রেসড পাউডার এসব অ্যাপ্লাই করলেই তো হয়ে যায়। আলাদা করে হাইলাইটারের কী প্রয়োজন? আমাদের ফেইসের কিছু হাইলাইটিং পয়েন্ট আছে। এটির সাহায্যে এই এরিয়াগুলো এনহ্যান্স করে ইয়ুথফুল, গ্লোয়ি ও ড্রামাটিক লুক ক্রিয়েট করা যায়। এই এরিয়াগুলোতে ন্যাচারালি লাইট হিট করে বলে হাইলাইটার অ্যাপ্লাইয়ে মেকআপ লুক আরও বেশি গ্লোয়ি ও ডিউয়ি হয়ে ওঠে।
হাইলাইটিং পয়েন্টস
হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করার আগে আমাদের জানতে হবে হাইলাইটিং পয়েন্টগুলো সম্পর্কে। ফেইসের কয়েকটি হাইয়েস্ট পয়েন্ট আছে। যেমন-
- চিকবোন
- ফোরহেড
- ব্রো বোন
- আই ইনার কর্ণার
- কিউপিড বো
- চিন
- নোজ ব্রিজ
এই এরিয়াগুলোতে লাইট ডিরেক্ট হিট করে। তাই হাইলাইট করতে হবে এই এরিয়াগুলোকেই। কিন্তু ভুল জায়গায় অ্যাপ্লাইয়ের কারণে প্রোপারলি ফিচারগুলো হাইলাইটেড হয় না। তাই সঠিক নিয়মে হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা জরুরি।
অ্যাপ্লাই করবেন যেভাবে
ফেইসের হাইলাইটিং পয়েন্টস সম্পর্কে তো জানা হলো। কিন্তু কীভাবে অ্যাপ্লাই করলে ফেইসে গ্লোয়ি ও ড্রামাটিক লুক ক্রিয়েট হবে সেটা কি জানেন? চলুন তাহলে এ বিষয়েই এখন জানা যাক।
চিকবোন
অনেকে চিকবোনের বাইরে অথবা নিচে হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করেন। এতে ফেইস দেখতে ওয়াইড লাগে। হাইলাইটার অ্যাপ্লাইয়ের বেস্ট প্লেস হচ্ছে চিকবোনের ঠিক উপরে অ্যাপ্লাই করা। এতে ফেইস লিফটেড দেখায় এবং বোন স্ট্রাকচার এনহ্যান্স হয়। ফেইসের এই হায়ার পয়েন্টে যখন লাইট পড়ে, তখন ফেইস আরও ইয়াংগার লুকিং ও ফ্রেশ লাগে।
ফোরহেড
এটি ফেইসের হাই পয়েন্ট। ফেইসে ড্রামাটিক লুক ক্রিয়েট করার জন্য ফোরহেড সেন্টারে খানিকটা হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করে নিন। হেয়ার লাইনের সেন্টার থেকে নোজ ব্রিজের উপর পর্যন্ত স্ট্রেইট ডাউনওয়ার্ড করে লাগিয়ে নিন। আপনার ফোরহেড যদি ছোট হয় তাহলে হাইলাইটারের সাহায্যে খুব সহজেই বড় দেখানো যায়। যাদের স্কিন বেশি অয়েলি তারা এটি স্কিপ করতে পারেন।
নোজ ব্রিজ
হাইলাইটার মানেই যে হাইয়েস্ট পয়েন্টগুলোতে বেশি বেশি অ্যাপ্লাই করতে হবে তা কিন্তু মোটেও নয়। অনেকে পুরো নোজে হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করেন। এতে নোজ আরও বেশি পয়েন্টি লাগে। তাই ন্যাচারাল ও গ্লোয়ি লুকের জন্য নোজের ঠিক উপরে ও নিচের অংশে অ্যাপ্লাই করুন। রেডিয়েন্ট লুক ক্রিয়েট করার জন্য নোজ হাইলাইটিং হতে পারে গেইম চেঞ্জার।
চিন
চিন এরিয়া এনহ্যান্স করার জন্য শুধু মিডল অংশে হাইলাইটার ইউজ করতে হবে। নইলে দেখতে আনন্যাচারাল লাগবে।
ব্রো বোন
অনেকেই আই ব্রো বোনের পুরো এরিয়া হাইলাইট করেন। এটি দেখতে বেশ আনন্যাচারাল লাগে এবং আই শেইপ সঠিকভাবে ডিফাইন হয় না। ব্রো বোন এর ঠিক নিচের অংশে হাইলাইটার ইউজ করুন। এতে আই এরিয়া প্রোপারলি ডিফাইন হবে।
আই ইনার কর্ণার
ফেইসের ডালনেস যেন বোঝা না যায় সেজন্য আই ইনার কর্ণারকে হাইলাইট করা জরুরি। তবে খেয়াল রাখবেন বেশি পরিমাণ হাইলাইটার যেন ইউজ করা না হয়। এতে ফেইস ওভার ড্রামাটিক দেখাতে পারে। আইলুক এনহ্যান্স করার জন্য আই ইনার কর্ণারে অল্প পরিমাণ হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করে নিন।
আই এরিয়া ব্রাইট করার জন্য আপনাদের একটি ট্রিকস জানিয়ে রাখি। মেকআপ করার পরও চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল নিয়ে অনেকের দুশ্চিন্তা শেষ হয় না। এমন হলে আন্ডারআই কনসিলারের সাথে এক ড্রপ ক্রিমি হাইলাইটার মিক্স করে নিন। এতে ডার্ক সার্কেল নিউট্রালাইজ হবে এবং চোখের আশেপাশের এরিয়া আরও ব্রাইট হয়ে উঠবে।
কিউপিড বো
লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করা শেষে কিউপিড বো’র উপর খানিকটা হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করে নিন। এতে লিপস দেখতে ফুলার লাগবে। সেই সাথে লিপ কালারকেও হাইলাইট করবে।
বেশি পরিমাণে অ্যাপ্লাই করে ফেললে কী করবো?
হতেই পারে হাইলাইটার অ্যাপ্লাইয়ের সময় একটু বেশি পরিমাণে অ্যাপ্লাই করে ফেলেছেন। যদি আপনার ক্ষেত্রেও এমন হয়, তাহলে একটি ক্লিন মেকআপ ব্রাশ দিয়ে এক্সেস হাইলাইটারটুকু ঝেড়ে ফেলুন। চাইলে স্পঞ্জও ইউজ করতে পারেন। আরও একটি উপায় হচ্ছে অল্প পরিমাণ কনসিলার (লিকুইড অথবা ক্রিম) অথবা পাউডার প্রোডাক্ট (প্রেসড অথবা সেটিং পাউডার) লাগিয়ে নেয়া। এগুলো অ্যাপ্লাইয়ে হাইলাইটার কিছুটা লাইট হয়ে আসবে। হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করার জন্য ফ্যান ব্রাশ, কোণ শেইপড ফ্লাফি ব্রাশ বা আঙুল ব্যবহার করতে পারেন।
কোন স্কিনে কেমন হাইলাইটার?
হাইলাইটার সাধারণত তিন ধরনের হয়। যেমন-
- লিকুইড
- পাউডার
- ক্রিম
আমরা অনেকেই না বুঝে হাইলাইটার চুজ করে ফেলি। যার কারণে ভালোভাবে স্কিনে সেটি ব্লেন্ড হয় না। স্কিন টাইপ অনুযায়ী কীভাবে হাইলাইটার চুজ করবেন চলুন জেনে নেই-
ড্রাই স্কিন- যাদের স্কিন বেশি ড্রাই তারা যদি পাউডার হাইলাইটার ইউজ করেন তাহলে সেটি ভালোভাবে ব্লেন্ড নাও হতে পারে। এমন স্কিনের জন্য ক্রিম বা লিকুইড হাইলাইটার চুজ করা বেটার।
অয়েলি স্কিন- স্কিনের অয়েলি ভাব কমিয়ে ন্যাচারাল ও গ্লোয়ি ইফেক্ট দিতে হেল্প করে পাউডার হাইলাইটার।
কম্বিনেশন স্কিন- যাদের স্কিন একইসাথে ড্রাই ও অয়েলি অর্থাৎ কম্বিনেশন স্কিন, তারা ক্রিম বা পাউডার হাইলাইটার যে কোনোটাই ইউজ করতে পারেন। এতে স্কিন বেশি ড্রাই বা অয়েলি মনে হবে না।
সব স্কিন টোনেই কি হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা যাবে?
হাইলাইটার সব ধরনের স্কিন টোনেই অ্যাপ্লাই করা যাবে। শুধু আপনার স্কিন টোনে স্যুট করে এমন হাইলাইটার খুঁজে নিতে হবে। স্কিন টোন অনুযায়ী যেভাবে হাইলাইটার শেইড বেছে নিবেন-
ফেয়ার স্কিন টোন- ওপাল (Neutral, white gold with soft pink pearl) বা পার্ল শেইডের হাইলাইটার
মিডিয়াম স্কিন টোন- গোল্ডেন বা পিচ শেইডের হাইলাইটার
ডাস্কি স্কিন টোন- গোল্ড, ব্রোঞ্জ বা কপার শেইডের হাইলাইটার
কোন স্কিন টোন অনুযায়ী কেমন হাইলাইটার চুজ করবেন এবং কীভাবে হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করবেন তা নিয়ে আমাদের অনেকেরই কনফিউশন থাকে। আশা করি এই কনফিউশনগুলো কিছুটা হলেও ক্লিয়ার করতে পেরেছি। এখন নিশ্চয়ই হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা নিয়ে ভাবতে হবে না। অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টসসহ স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।
ছবিঃ সাজগোজ