মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করার আতংকের নামই ব্রণ। ব্রণ আমাদের মুখের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয়। ব্রণ আমাদের বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। যেমন- ত্বকের তৈলাক্ততা বেড়ে যাওয়া, ধুলো-ময়লা জমা, হরমোনের পরিবর্তন,পরিমাণমতো পানি ও সঠিক খাবার গ্রহণ করা না হলে ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। আমরা সবাই জানি মুখে ব্রণ অবস্থায় সাবান বা ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ সাবান বা ফেইস ওয়াশে প্রচুর পরিমাণে ক্ষার ও কেমিক্যাল থাকে। তাই সেটা আপনার মুখে ব্রণ অবস্থায় একদমই ব্যবহার করা ঠিক না। এই সময়ে আপনার ত্বক আরো সেনসেটিভ হয়ে যায়। তাই এই সময়ে আপনার ত্বকে নিতে হবে একটু বাড়তি যত্ন। ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করা না হলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া, ধুলো এবং তেল জমে এতে লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে ব্রণের সৃষ্টি হয়। তাই চলুন আজকে জেনে নেই কীভাবে ব্রণ দূরীকরণে ৫টি প্রাকৃতিক ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করা যায়!
৫টি প্রাকৃতিক ফেইস ওয়াশ বানানোর নিয়ম
১) উপটান ও নিমের ফেইস ওয়াশ
উপটান ফেইস ওয়াশ বানাতে লাগবে-
১. উপটান- ১চা চামচ
২. কাঁচা হলুদ বাটা- ১চা চামচ
৩. তাজা নিম পাতা- ১/৪চা চামচ বাটা
৪. লেবুর রস বা কমলা লেবুর রস- ১চা চামচ
ব্যবহারবিধি
উপরের সব উপকরণ একসাথে নিশিয়ে মুখে লাগান। আপনি চাইলে একটু বেশি পরিমাণে নিয়ে করতে পারেন এবং ৩/৪দিন পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরে রেখে ব্যবহার করা যাবে। প্রতিবার মুখ ধোয়ার সময় অল্প পরিমাণে নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণটি মাত্র ৭দিন ব্যবহার করলে আপনার মুখের ব্রণ থেকে মুক্তি পাবেন!
২) হলুদের ফেইস ওয়াশ
হলুদের ফেইস ওয়াশ বানানোর নিয়ম-
১. কাঁচা দুধ– ১চা চামচ
২. হলুদ গুঁড়া- ১চা চামচ
৩. অ্যালোভেরা জেল- ১/২চা চামচ
ব্যবহারবিধি
উপরের সব উপাদান অর্থাৎ কাঁচা দুধ ,হলুদ গুঁড়া ,অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ৫মিনিট পর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বকের কোমলতা বাড়বে এবং সেই সাথে ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করবে। আপনি ফিরে পাবেন ঝামেলা মুক্ত ত্বক।
৩) ৫টি প্রাকৃতিক ফেইস ওয়াশ এর মধ্যে উপটান ও মধুর ফেইস ওয়াশ একটি
উপটান ও মধুর ফেইস ওয়াশ বানাতে যা লাগবে-
১. উপটান- ১চা চামচ
২. মধু- ১চা চামচ
৩. লেবুর রস- ১চা চামচ
৪. গোলাপজল- ১চা চামচ
ব্যবহারবিধি
উপটান, মধু, লেবুর রস এবং গোলাপজল এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ২/৩মিনিট ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। দিনে ৩বার ব্যবহার করতে হবে। আপনি চাইলে এই মিশ্রণটি ৩/৪দিন পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরে রেখে সংরক্ষণ করতে পারেন। এই ফেইস ওয়াশটা প্রাকৃতিক ফেইস ওয়াশের মধ্যে অন্যতম।
৪) আলু ও শসার ফেইস ওয়াশ
আলু ও শসার ফেইস ওয়াশ বানাতে যা লাগবে-
১. আলু কুচি- ১/২চা চামচ
২. শসা কুচি- ১/২ চা চামচ
৩. টক দই- ১চা চামচ
৪. কাঁচা হলুদ বাটা- ১ চা চামচ
৫. পুদিনা পাতা- ১চা চামচ
ব্যবহারবিধি
আলু কুচি, শসা কুচি, কাঁচা হলুদ বাটা, টক দই ও পুদিনা পাতা দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ২/৩মিনিট ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের কালচে ভাব দূর করার সাথে সাথে মুখে আনবে লাবণ্যতা।
৫) পুদিনা ও হলুদের ফেইস ওয়াশ
পুদিনা ও হলুদের ফেইস ওয়াশ বানাতে যা লাগবে-
১. পুদিনা পাতা- ১চা চামচ
২. দারুচিনি- ১চা চামচ
৩. মধু- ১চা চামচ
৪. হলুদ গুঁড়া- ১চা চামচ
ব্যবহারবিধি
পুদিনা পাতা, দারুচিনি, হলুদ গুঁড়া, মধু দিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। ৩/৪মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি ৪/৫ব্যবহারের করলেই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
উপরোক্ত ফেইস ওয়াশগুলো অবশ্যই প্রতিদিন ৩বার ব্যবহার করতে হবে। তবে আপনি যদি প্রাকৃতিক ফেইস ওয়াশ বানাতে ঝামেলা মনে করেন, তবে মার্কেটের কিছু ভালো ফেইস ওয়াশ আপনার রেগ্যুলার স্কিন কেয়ারে ব্যবহার করতে পারেন। অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে পেতে সাজগোজ আপনাদের আস্থা হতে পারে। সাজগোজের দুইটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর যদি অনলাইনে কিনতে চান, তবে শপ.সাজগোজ. কম থেকে বেছে নিতে পারেন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনার মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। কারণ, আপনার মুখে সারা রাত ধরে অনেক তেল জমা হয়ে থাকে। আর এই তেল থেকেও ব্রণের সৃষ্টি হয়। আর হ্যাঁ, মনে করে বাইরে থেকে এসে সাথে সাথে মুখে ফেইস ওয়াশ করে ফেলবেন। বাইরের ধুলোবালি থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন। অবশ্যই ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। কারণ, এই সময়ে ত্বক পরিষ্কার না করলে সারা রাত ধরে আপনার মুখে রোগ জীবাণু বহন করে ব্রণের উপদ্রব বাড়িয়ে দেবে। এভাবে ত্বক পরিষ্কার পরিছন্ন রাখলে কিছু দিনের মধ্যে আপনি পাবেন ব্রণ মুক্ত লাবণ্যময় চেহারা।