আজ আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি ক্যারিয়ার সচেতন হয়ে উঠেছি। সময়ের সাথে তাল রেখে আজ অনেকেই গতানুগতিক চাকরির বদলে নতুন কিছুর সন্ধান করে চলেছে। আজ তাই এমন ধরনেরই একটি নতুন ক্যারিয়ারের কথা জানাবো। কেমন হয় যদি সারা পৃথিবীই হয় আপনার অফিস? ভাবছেন এমন চাকরি হয় নাকি? নিশ্চয়ই হয়। এমনই একটি চাকরি হল বিমান সেবিকার। আজ তাই এয়ার হোস্টেস, কেবিন ক্রু বা বিমান সেবিকা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ারকে কীভাবে বেছে নিতে হয় তারই কিছু সুলুক সন্ধান দিব।
এটি একটি গ্ল্যামারাস ক্যারিয়ার, রয়েছে উচ্চ বেতনের পাশাপাশি আরো অনেক সু্যোগ সুবিধা। তবে এই জীবিকাটি কিন্তু মোটেই সহজ নয়।এর জন্য চাই অক্লান্ত পরিশ্রম করার ক্ষমতা এবং ভীষণ মনঃসংযোগ। নিজেক হতে হবে ভীষণ স্মার্ট।যে কোনো বিপদের সময় বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে।
বিমান সেবিকার কাজ কী?
অনেকেই ভাবেন বিমান সেবিকার কাজ মানেই খাবার পরিবেশনের কাজ। বিমান সেবিকার দায়িত্ব তার থেকেও অনেক বেশি। সব রকম সেফটি ও সিকিউরিটির দায়িত্ব থাকে বিমান সেবিকার ওপরে।
বিমান সেবিকা হতে গেলে ঠিক কী কী যোগ্যতা থাকা দরকার?
বিমান সেবিকা হতে গেলে নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হল হায়ার সেকেন্ডারি বা সমতুল্য পাস আউট হতে হবে। তবে আজকাল এয়ারলাইন্স গুলো গ্র্যাজুয়েটদের বেশি পছন্দের তালিকাতে রাখে।
– বয়স ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২৭ বছর অবধি হতে পারে। তবে বয়সের তালিকা এয়ার লাইন্স ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
– চাকরিতে অ্যাপ্লাই করার সময় অবিবাহিত হতে হবে।
– সাঁতার জানতে হবে। সেফটি প্রসিডিওরের জন্য এটা ভীষণ জরুরী।
– শরীরে কোন ট্যাটু থাকা চলবেনা। কোনো কাটা দাগ বা ব্রণ ইত্যাদির দাগ থাকা চলবে না।
– চোখে চশমা থাকা চলবেনা। সাধারণত ৬/৬ ভিশন থাকতে হয়।
-সাধারণত উচ্চতা মিনিমাম ১৬০ সেমি (মহিলা) ও ১৭০ সেমি (পুরুষ) হতে হবে। এটা এয়ারলাইন্স ভেদে ভিন্ন হতে পারে। উচ্চতার সাথে ওজনের একটা সামঞ্জস্য থাকতে হবে। যেমন কারো উচ্চতা যদি ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হয় তাহলে তাহলে তার ওজন হওয়া উচিত ৫০ কেজি থেকে ৫৪ কেজির মধ্যে।
-ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকাটা কিন্তু একদম মাস্ট।
-ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।
অন্যান্য ক্যারিয়ারের মত এই ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেশি। কারণ সাধারণত এয়ারলাইন্সের সংখ্যা তুলনামূলক কম। মনে রাখতে হবে একবার অ্যাপ্লাই করার পরে সফল না হলে ৬ মাসের আগে সেই একই কোম্পানিতে পুনরায় অ্যাপ্লাই করা যায় না। তাই অ্যাপ্লাই করার আগে করতে হবে প্রচুর হোমওয়ার্ক। এবার জেনে নেয়া যাক ঠিক কী কী বিষয় আপনাকে অন্যান্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে-
-ইংরেজি হতে হবে ভীষণ ঝরঝরে। কোন রকমের জড়তা থাকা চলবে না। ইংরেজি ছাড়াও যদি অন্যান্য বিদেশী ভাষা শিখে ফেলতে পারেন সেটা আপনার জন্য একটা বিরাট বড় অ্যাডভান্টেজ হবে।
-যদি ৬ মাস থেকে ১ বছর কোনো চাকরি করার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে সু্যোগটা কিন্তু অনেকটাই বেড়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে কোনো কাস্টমার সার্ভিসের চাকরি করাই ভালো। আপনি বেছে নিতে পারেন কল সেন্টার, রিসেপশনিস্ট ইত্যাদি চাকরিকে।
চাকরির স্বার্থে আপনাকে দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বাধা ধরা সময় থাকে না। বা ছুটির নির্দিষ্ট কোনো দিন থাকে না। উৎসবের মাঝেও কাজ করতে হতে পারে। আপনাকে সব সময় তৈরি থাকতে হবে। এটাই এই চাকরির একটি সমস্যা তবে যদি রোজ রোজ ১০টা-৫টার চাকরি ও চার দেয়ালের মধ্যে নিজেকে আটকে রাখতে না চান তবে এই চাকরিটা আপনার জন্য একদম পারফেক্ট।
গুড লাক
লিখেছেনঃ নন্দিনী পোদ্দার
ছবিঃ বিজনেসইন্সাইডার.কম