ফাল্গুনের প্রস্তুতি (পর্ব-১) - Shajgoj

ফাল্গুনের প্রস্তুতি (পর্ব-১)

falgun

শীতের শেষ সময়গুলো ফাল্গুনকে বরণ করার পরিকল্পনা করতে করতেই কেটে যায় । ফাল্গুনের আগমণে প্রকৃতি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুতেই নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হয়। পহেলা ফাল্গুন নিয়ে সবারই কম-বেশি প্ল্যান থাকে। অনেকে চিন্তিত ও থাকেন ঐ দিনের সাজ-পোষাক নিয়ে। তবে এবারের ফাল্গুনের চিন্তা অনেকটাই কমে যাবে আপনাদের-এমন বিশ্বাস নিয়েই আজকের লেখা শুরু করছি। এ লেখাটিতে আপনাদের জানাবো পহেলা ফাল্গুনের উপযুক্ত পোষাকাদি সম্পর্কে। সেই সাথে পোষাকটিতে নতুনত্ব তথা স্বকীয়তা আনয়নের উপায়ও জানানোর চেষ্টা করব।

[picture]

Sale • Pigmentation, Color Protection, Hair Color

    শাড়ি:

    বাঙালি নারীদের সবচাইতে প্রিয় পোষাক হচ্ছে শাড়ি। আসলে শাড়িই একমাত্র পোষাক যা হাজার মানুষের ভীড়েও আপনাকে আলাদাভাবে উপস্থাপিত করতে পারে। ঠিকভাবে পরতে না পারলেও শাড়ি পরতে ভালোবাসে না এমন বাঙালি মেয়ে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই পহেলা ফাল্গুনের জন্য পোষাক হিসেবে চোখ বুজে বেছে নিতে পারেন শাড়িকে।
    আজকাল বাজারে নানা রঙ ও ডিজাইনের শাড়ি পাওয়া যায়। ফাল্গুনের শুরুতে শীত তেমন থাকে না, তাই সুতির শাড়ি পরেও আরাম পাবেন। তাঁত, কোটা বা জামদানি শাড়ির পাশাপাশি পরতে পারেন সিল্ক, হাফ সিল্ক, শিফন এমনকি কাতানের শাড়িও।  আপনার যেমন শাড়ি পরতে ভালো লাগে তেমন কিছুই পরতে পারেন। ট্রাডিশনাল লুক চাইলে কাতানের বিকল্প নেই । তাছাড়া নিজেও কাস্টোমাইজ শাড়ি তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে গজ কাপড় কিনে তাতে কয়েক ধরনের লেস লাগিয়ে নিতে পারেন কিংবা করিয়ে নিতে পারেন এমব্রয়েডারি বা কাট ওয়ার্কের কাজ।করাতে পারেন বাটিক বা টাইডাই এর কাজও। চাইলে হাতের কাজও করিয়ে নিতে পারেন কিংবা বসাতে পারেন এপ্লিক।এ ছাড়াও ২ রকম কাপড় কিনে কুচি স্টাইলেও তৈরি করে নিতেন আপনার পছন্দের শাড়িটি। কুচি ও আঁচলের কাপড়ের ভিন্নতা আপনার শাড়িটিকে অদ্বিতীয় লুক এনে দেবে; যা থাকবে অন্য সবার থেকে ভিন্ন। গজ কাপড় হিসেবে প্রিন্টেড জর্জেট বা শিফন, সুতি, কোটা, মসলিন, সিল্ক, ধুপিয়ান,ইন্ডি কাপড় বেছে নিতে পারেন।

    রঙ এর ক্ষেত্রে বাছাই করতে পারেন যে কোন কালারফুল কালার। শুধু হলুদ, কমলা বা বাসন্তি কালার ছাড়াও ট্রাই করতে পারেন কলাপাতা, অর্কিড, গাঢ় গোলাপি, সবুজের যে কোন শেড, কোরাল, মেজেন্টা, নীল বা বেগুনী; এমনকি সাদার যে কোন শেডও। তাছাড়া অনেকগুলো রঙের কম্বিনেশনও থাকতে পারে আপনার শাড়িতে অথবা রঙধনুর সাত রঙে আঁচল এবং যে কোন এক রঙের প্রাধান্যে হতে পারে পুরো শাড়িটি।

    যদি সাদা রঙের শাড়ি পরতে চান এর আঁচল, পাড় এবং ব্লাউজে আনতে পারেন অভিনবত্ব। ফাল্গুনের কোন একটা শেড এর কন্ট্রাস্ট ব্লাউজ আপনাকে দিতে পারে স্বস্তির অনুভূতি। শাড়িটি এক রঙা হলে বেছে নিতে পারেন প্রিন্টেড ব্লাউজ।এথনিক টাচ চাইলে কাতান কাপড় দিয়ে ভরাট গলার ডিজাইনে বানান ব্লাঊজটি। আর শাড়িটিতে যদি কারুকাজ বেশি থাকে তবে সিম্পল ব্লাউজ নিন। স্লিভলেস বা ফুল স্লিভ যাই হোক না খেয়াল রাখুন তা যেন আপনার শাড়িটির সাথে মানানসই হয়। সারাদিন বাইরে ঘোরাঘুরির প্ল্যান থাকলে পিঠ খোলা ব্লাউজ এড়িয়ে যেতে পারেন। কেননা রোদ যত মিষ্টিই হোক না কেন, ইউভি রে সব সময় ই ক্ষতিকর। এক রঙা  ব্লাউজে এমব্রয়ডারী করানো যেতে পারে, সেই সাথে করাতে পারেন জারদৌসি ওয়ার্কও। ফেব্রিক নির্বাচনে খেয়াল রাখুন,তা যেন অবশ্যই ভালো কোয়ালিটির হয়। আপনার শাড়িটি যত সাধারণই হোক না কেন এমন একটি ব্লাঊজ অনায়াসে পরতে পারেন আর হয়ে উঠতে পারেন সকলের মধ্যমণি।

    শাড়ির কথা আসলেই জুয়েলারির কথা চলে আসে। চিরায়ত সোনার গহনার পাশাপাশি যে কোন গহনাই ভালো লাগে শাড়ির সাথে। সুতির শাড়ি হলে মাটির গয়না পরতে পারেন। কিংবা কাঠ বা পুঁতির গয়নাও ভালো লাগবে সুতি শাড়ির সাথে। হাত ভর্তি চুরি পরতে পারেন। তবে যদি সম্পূর্ণ ব্লাঊজে জমকালো কাজ থাকে তবে গলা ও হাত বাদ দিয়ে কানে ঝোলানো দুল পরে নিন। মাথায় ছোট টিকলি, টায়রা বা ঝাপটা ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে কোমরে বিছা ও পায়ে নূপুরও পরে নিতে পারেন। যাদের নাক ফোরানো আছে তারা অন্যদিনের চেয়ে ভিন্ন কিছু ট্রাই করুন। হতে পারে নথ বা আকারে একটু বড় কোন নোসপিন। যারা হিজাব করেন তারা ঝাপটা ব্রোচ ব্যবহার করুন। হেড ব্যান্ড ও ব্যবহার করতে পারেন।

    যারা সারাদিন বাইরে ঘুরাঘুরি করবেন তারা হাই হিল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, কেননা এতে পায়ের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই বলে একেবারে ফ্ল্যাট না পরে ট্রাই করতে পারেন মিডিয়াম বসানো হিল বা সেমি ফ্ল্যাট জুতোগুলো। মোটামুটি আকারের ব্যাগ নিতে পারেন যাতে পানির বোতল, ছাতা সহ প্রয়োজনীয় সব কিছু রাখতে পারেন। নয়ত শাড়ির সাথে বটুয়া ব্যাগ বেশ ভালো মানায়। চাইলে মানানসই ক্লাচও ট্রাই করতে পারেন।

    আসুন জেনে নিই কোথায় পাবেন আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো-

    শাড়ি কিনতে যেতে পারেন বসুন্ধরা সিটি, গাউসিয়া, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, মৌচাক, মিরপুর বেনারসি পল্লীতে। তাছাড়া সম্পূর্ণ দেশীয় আমজের জন্য আমাদের বুটিক শপগুলো তো আছেই। আড়ং, কে ক্রাফট, নগর দোলা, বাংলার মেলা, অন্যমেলা, অঞ্জনস এ ট্র্যাডিশনাল সহ সব রকম শাড়িই পাওয়া যায়। আর গজ কাপড় কিনতে হলে চলে যান চাঁদনী চক, ইসলাম পুর বা আনারকলি সুপার মার্কেটে। শাড়ি বা ব্লাউজ সব রকম গজ কাপড়ই পেয়ে যাবেন এখানে।

    গাউসিয়া,চাঁদনি চক, নিউ মার্কেট এমনকি ফুটপাতেও অনেক সময় মন মত জুয়েলারী পেয়ে যেতে পারেন। তাছাড়া বড় বড় মার্কেট ও শো রুমেও আমদানীকৃত অনেক জুয়েলারী পাবেন। চাইলে রূপার উপর বানিয়েও নিতে পারেন।

    (আজকের লেখাটি শাড়ি নির্ভর,পরবর্তী লেখায় অন্য সব পোষাকও থাকবে ইন শা আল্লাহ)

    লিখেছেন- রোজা স্বর্ণা

    ছবি- ফানকাফাটকা.কম

    0 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort