প্রকৃতিতে চলছে রূপ বদলের সাথে সাথে রঙের ছড়াছড়ি আর সেই রঙে নিজেকে রাঙ্গাবেন না তাই কি কখনও হয়? তাই আপনার সাজ পোশাকে থাকুক একটু ভিন্নতা। পহেলা ফাল্গুনে যেন আপনাকে মনে হয় বসন্তের দূত। আপনি ও যেন প্রকৃতির সাথে মিলে-মিশে বসন্তের বসন্ত বার্তা নিয়ে এসেছেন। সবাই চোখ বুজে বেছে নিয়েছেন বাসন্তী রঙের কাপড়টা তা সুতি , তাঁত, সিল্ক, হাফ সিল্ক ,বা শিফন হোক না কেন রংটা বাসন্তীই চাই। তবে চিন্তায় আছেন শাড়ির সাথে কীভাবে ম্যাচিং করে সাজবেন। তাই আসছে পহেলা ফাল্গুনে আপনার সাজসজ্জায় কিছুটা সাহায্য করতে আমাদের এই আয়োজন।
বেইজ মেকাপঃ
প্রথমত রোদের জন্য মুখে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে ৫-৮ মিনিট অপেক্ষা করুন। সানস্ক্রিন শুকিয়ে এলে আবার বেইজ মেকআপ শুরু করা যাবে। দিনের বেলার জন্য ফাউন্ডেশন কে না বলাটাই ভালো। তাই বেইজ মেকাপের জন্য বিবি ক্রিম বা টিন্টেড ময়েস্চারাইজার লাগান। কন্সিলার দিয়ে মুখের ছোটখাট দাগ গুলো ঢেকে দিতে পারেন। ফাইনাল ফিনিশিং দিতে লুজ পাউডার বা ফেইজ পাউডার বুলিয়ে নিন। যখন আপনি বুঝবেন আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেছে , তাহলে আপনার বেইজ মেকআপ তৈরি হয়ে গেল। এরপর ইচ্ছে হলে হালকা পিচ বা গোলাপি রঙের ব্লাশন লাগাতে পারেন।
চোখের সাজঃ
চোখের সাজের জন্য প্রথমে একটু খানি আই প্রাইমার লাগিয়ে নিন (যদি থাকে) না দিলেও সমস্যা নেই। তাহলে আপনার আই মেকাপ দীর্ঘক্ষন স্থায়ী হবে। চোখের সাজের জন্য ব্যবহার করুন উজ্জ্বল রং গুলো যেমন ব্রাউন, গোল্ডেন, কপার ,সোনালি বাদামি, লালচে সোনালি ইত্যাদি রঙের আইশ্যাডো। এরপর চোখে মোটা করে কাজল লাগান এবং চোখের পাপড়িতে মাশকারা লাগান এক কোট। ব্যাস হয়ে গেল আপনার চোখের সাজ।
চুলের সাজঃ
আপনি যদি চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন তাহলে ব্লো ডাই , আয়রন বা স্পাইরাল রোল করে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। চুলের এক পাশে ক্লিপ দিয়ে তাজা ফুল গুঁজে দিতে যেন না ভুলে যান। সামনে দুই পাশ থেকে চুল টুইস্ট করে টেনে পেছনে নিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে নিতে পারেন। শাড়ি পরলে শাড়ির সাথে চুলে খোঁপা বা বেণি টাই বেশি ভালো লাগে। গাঁদা বা বেলি ফুলের মালা দিয়ে জড়িয়ে নিন আপনার বেণীটি। আবার ছোট ছোট ফুল বসিয়ে দিতে পারেন পুরো বেণীতে। খোঁপা করলে খোঁপার একপাশে দিতে পারেন বড় একটি ফুল যেমন জারবেরা বা গোলাপ ইত্যাদি। আবার ফুলের মালা দিয়ে ও জড়িয়ে নিতে পারেন আপনার খোঁপাটি ।
ফুলের সাজঃ
ফুলের সাজ বলতে, অনেকে গয়না হিসাবে ফুলকে বেছে নেয়। সেক্ষেত্রে কানের দুল ,গলায় মালা ,মাথায় প্রিন্সেস ব্যান্ড বা চুলের সাজে ফুল কিংবা হাতে মালা পেঁচিয়ে নেওয়া যায়। ফুলের সাজ বলতে, অনেকে গয়না হিসাবে ফুলকে বেছে নেয়। সেক্ষেত্রে কানের দুল ,গলায় মালা ,মাথায় প্রিন্সেস ব্যান্ড বা চুলের সাজে ফুল কিংবা হাতে মালা পেঁচিয়ে নেওয়া যায়। তবে প্রাধান্য পাবে গাঁদাফুল, বেলী ,গন্ধরাজ, গোলাপ , জারবেরা ইত্যাদি। বাসন্তী রঙের কারণে পহেলা ফাল্গুন গাঁদা ফুলের সাজকে সবাই বেশি পছন্দ করে।
গয়নাঃ
যেহেতু সাজ পোশাক সম্পূর্নই হালকা তাই গয়নাটা ও হালকা মানের দেশীয় গহনা গুলো বেছে নিন। সালোয়ার-কামিজ , ফতুয়া , পাঞ্জাবীর সাথে মাটি, কাঠ কিংবা মেটালের দুল পরুন। গলায় কিছু না পরাটাই ভালো। হাত ভর্তি চুড়ি পরুন। হাতের জন্য বেছে নিন কাঠ, মাটি, মেটাল বা কাঁচের রেশমি চুড়ি। শাড়ি পরলে গলায় পরতে পারেন লম্বা পুঁতির মালা। হাত ভর্তি পরুন কাঁচের রেশমি চুড়ি।
জুতাঃ
সারা দিনের সাজের জন্য বেছে নিন স্লিপার বা অল্প উচ্চতার হিল। আর আপনি যদি হাই হিলে অভ্যস্ত থাকেন তাহলে হাই হিলকেও আপনার সঙ্গী করতে পারেন। সোজা কথা আপনি যেটায় আরামদায়ক মনে করেন।
সবশেষে, কপালে পরুন বড় একটি লাল টিপ বা কুমকুম দিয়ে ডিজাইন করে টিপ এঁকে নিতে পারেন। আপনার সাজে সিগ্ধতা আনতে ঠোঁটের জন্য বাছাই করুন হালকা রঙের লিপস্টিক। এরপর ঠোঁটে লিপগ্লস বুলিয়ে নিন এবং আপনার সাজে সজীবতা ধরে রাখতে ব্যবহার করুন হালকা সুগন্ধি।
লিখেছেনঃ জুঁই শতাব্দী
ছবিঃ লেটেস্ট ফ্যাশান টুডে.কম