গাঁদা ফুল চেনেন না এমন কেউ কি আছেন? এক কথায় সবাই উত্তর দেবে না। চকচকে উজ্জ্বল কমলা, হলুদ ও খয়েরি রঙের এই ফুলের প্রেমে পড়েননি এমনটা হতেই পারেনা। আজ আমি এই অতিপরিচিত গাঁদা ফুলের প্রতি আপনার প্রেম আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিতে জানাবো আমাদের ৩ ধরনের ত্বকের যত্নে গাঁদা ফুলের অসাধারণ ৩ টি ফেসমাস্ক সম্পর্কে।
আপনি যদি উইকিপিডিয়া গিয়ে গাঁদা ফুল সম্পর্কে একটু জানতে চেষ্টা করেন তাহলে দেখবেন যে এই ফুল অত্যন্ত ওষধি গুণ সম্পন্ন একটি উপাদান যাতে কিনা অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান ঠেসে ঠেসে ভরা। যা ত্বকের সাধারণ কাটা ছেড়া জনিত ইনফেকশন, ব্রণ, ফুসকুড়ি ও অন্যান্য যেকোন ত্বকের ব্যাক্টেরিয়া সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে।
ড্রাই স্কিনের জন্য গাঁদা ফুলের ফেসমাস্ক রেসিপিঃ
উপাদানঃ
-১০ থেকে ১৫ টি গাঁদা ফুলের পাঁপড়ি
-৪ থেকে ৫ ফোঁটা মধু
-১ টেবিল চামচ মিল্ক ক্রিম
-আধা টেবিল চামচ বেসন
রেসিপিঃ
প্রথমে গাঁদা ফুলের পাঁপড়িগুলো ভালোভাবে থেঁতো করে নিন। এবার এই ফুলের পাপড়ি থেঁতোর মধ্যে মধু, মিল্ক ক্রিম আর বেসন মিশিয়ে দিন। আবার আপনার ত্বকের চোখ আর ঠোঁটের এরিয়া বাদ দিয়ে যে কোন অংশে যেভাবে খুশি লাগান এবং ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ভেজা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে এই মাস্ক তুলে ফেলুন।
উপকারিতাঃ
-মধু ও মিল্ক ক্রিম প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যা আপনার ত্বকতে নরম ও কোমল করবে।
-গাঁদা ফুলের পাঁপড়ি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর সাথে সাথেই শুষ্কভাব রোধ করবে।
-বেসন আপনার ত্বকের ডিপ ক্লিন করবে।
গাঁদা ফুলের ফেসমাস্ক মিশ্র ত্বকের জন্য-
উপাদানঃ
-গাঁদা ফুলের পাঁপড়ি ১০ থেকে ১২ টি
-আধা টেবিল চামচ দই
-আধা টেবিল চামচ চন্দন পাউডার
রেসিপিঃ
গাঁদা ফুলের পাঁপড়িগুলো খুব ভালো করে থেঁতো করে একটি বাটিতে নিন। এবার দই আর চন্দন পাউডার এই ফুলের পাপড়ি থেঁতোর সাথে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না ক্রিমি আকার ধারণ করছে। এবার এই ক্রিমি পেস্ট মাস্ক আমারে আপনার ত্বকের চোখ আর ঠোঁটের অংশ বাদ দিয়ে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতাঃ
-গাঁদা ফুলের পাঁপড়ি ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার আর এটি ত্বকের বলিরেখা দূরে রাখে এবং ত্বকের ফুসকুড়ি রোধ করে।
-দই ত্বকের তামাটে ভাব দূর করে ও ত্বক ডিপ ক্লিন করে।
-চন্দন ত্বকের পোরসগুলো টাইট করে ও ত্বক পরিষ্কার করে।
গাঁদা ফুলের মাস্ক তৈলাক্ত ত্বকের জন্য-
উপাদানঃ
-১০ থেকে ১২ টা গাঁদা ফুলের পাঁপড়ি
-আধা টেবিল চামচ শুকনা আমলা পাউডারের গুঁড়া
-৫ থেকে ৬ ড্রপ লেবুর রস
-আধা টেবিল চামচ দই
রেসিপিঃ
আমলা পাউডার আর ফুলের পাঁপড়ি থেঁতো একসাথে মিশিয়ে এতে লেবুর রস ঢেলে দিন। এরপর পেস্ট ক্রিমি করতে দই দিয়ে দিন আর সব উপাদান আরেক দফা ভালোভাবে মেশান। এবার এই পেস্ট আপনার ত্বকের চোখ আর ঠোঁটের এরিয়া বাদে সারা মুখে মাস্কের মতো লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে আপনার মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতাঃ
-গাঁদা ফুলের নির্যাস আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে।
-লেবু আপনার তৈলাক্ত ত্বকের ব্ল্যাক হেডস আর ফুসকুড়ি কমিয়ে দেবে।
-দই ত্বক ক্লিন করবে ও উজ্জ্বল করবে।
– আমলা তৈলাক্ত ত্বকের পোরস গুলো টাইটেন করে ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করবে।
একবার ত্বকে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী যেকোন একটি মাস্ক ব্যবহার করেই দেখুন। প্রাকৃতিক জিনিস দিয়ে ত্বকের যত্ন করলে আর যাই হোক ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।
লিখেছেনঃ রুমানা রহমান
ছবিঃ তেলেগুওয়ান.কম