ধূমপানে বিষপান! যারা ধূমপান করেন না, তারা যেমন এটা মানেন; যারা ধূমপান করেন, তারাও এই কথা মানেন। তবে কেন এই বিষপান? মাহে রমজান এই ধূমপান ত্যাগ করার উপযুক্ত সময়। গবেষণায় দেখা যায়, একজন ধূমপায়ী বছরে যে পরিমাণ কার্বন নির্গত করেন, তা একটি ইট তৈরির চুল্লী নির্গত করতে প্রায় একই সময় নেয়! ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে, যে কার্বন ধূমপানের মাধ্যমে আপনার শরীরে প্রবেশ করে, সে কার্বন কণা আপনার দেহে বাস করবে সামনের ২৩ বছর! এত কিছু জেনেও কি ধূমপান করবেন? দুঃখজনক হলেও সত্যি, অধিকাংশ ধূমপায়ী ধূমপানের যাবতীয় ক্ষতিকারক দিক জানা সত্ত্বেও দেদারসে চালিয়ে যান ধূমপান। কী উপায়ে ধূমপান ত্যাগ করবেন তাই দেখে নেই চলুন!
ধূমপান ত্যাগ করার উপায়
ধূমপায়ী দু’ধরনের হয়ে থাকে। প্রথম শ্রেনী তারা, যারা ধূমপানে আসক্ত হওয়া সত্তেও তা ছেড়ে দিতে চান। আর দ্বিতীয় শ্রেনীর ধূমপায়ী হচ্ছে তারা, যারা মনে করেন ধূমপান ছাড়া সম্ভব নয়। যাদের ডিকশনারিতে “অসম্ভব” বলে কিছু নেই, আর যারা এই ধূমপান ছাড়তে ইচ্ছুক, এই পোস্টটি তাদের জন্যই। এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। সিয়াম সাধনার এই মাসটিই হতে পারে আপনার বদভ্যাস ত্যাগের “পারফেক্ট” সময়! বলা হয়, পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। ধূমপানে আপনি থাকেন অপবিত্র। আর তাই, নিজেকে বর্জিত রাখুন ধূমপানের অপবিত্রতা থেকে, রাখুন রমজানের পবিত্রতা।
১) বাসায় ইফতার করার চেষ্টা করুন
এই রমজান মাসের প্রতিটি রোজা পালন করার দৃঢ় প্রত্যয় নিন। তাহলে দিনের পুরোটা সময় থাকতে পারছেন ধূমপানমুক্ত। ইফতার করার জন্য বেছে নিন পরিবার-পরিজন। বাইরে ইফতার করার পর অধিকাংশ সময় ধূমপান করা হয়ে থাকে। যারা সাওম পালন করেন, তারাও ইফতার করে একটি শলাকা প্রজ্জ্বলন করার লোভ সামলাতে পারেন না। তাই সচেষ্ট থাকবেন, বাসায় পরিবারের সাথে ইফতার করার জন্য। প্রয়োজনে বাইরের রেস্টুরেন্ট থেকে ইফতার এনে হলেও বাসায় ইফতার করার চেষ্টা করবেন। ধূমপান করার “ট্রিগারিং পয়েন্ট” এড়িয়ে চলার দরুন আপনার ধূমপান করার প্রবণতা কমে যাবে।
২) নামাজ ধরে রাখুন
নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। নিয়মিত নামাজ আপনাকে ধূমপানসহ আরো বাজে অভ্যাস থেকে দূরে রাখবে। ইফতারের পর নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। পাপ থেকে দূরে রাখতে নামাজ সর্বোত্তম ঔষধ। ধ্যান-চেতনায় পাপ করার ভয় নিয়ে আসুন। এতে করে ধূমপান করার স্পৃহা কমে আসবে।
৩) ইফতারের পর ধূমপায়ীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলুন
যাদের সাথে ধূমপান করা হয়, তারা যদি ধূমপান ত্যাগ না করে তবে তাদের সাথে ইফতারের পর দেখা না রাখাই মঙ্গলজনক। দিনের বেলা তাদের সাথে সাক্ষাৎ করুন। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পরিবারকে বেশি সময় দেয়ার চেষ্টা করুন। ট্রিগারিং পয়েন্টস, অর্থাৎ যেসব স্থানে গেলে ধূমপান সাধারণত করা হয়, সেসব জায়গায় না যাওয়ার, অথবা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
নিজেকে প্রমাণ করুন। নিজেকে মেলে ধরুন ভালো কিছুর জন্য, ভালো পথ হাসিলের জন্য। নিজের জন্য না হোক, নিজের কাছের মানুষদের জন্য হলেও পরিত্যাগ করুন বিষপান।
রমজানের এই রোজা শেষে খুশির ঈদ যেন সত্যিকারের খুশিতে রাঙ্গিয়ে দিতে পারেন ধূমপানের মৃত্যু থাবা থেকে নিজেকে মুক্ত করে, সে শুভ কামনা রইলো।
ছবি- সংগৃহীত: blog.gov