আপনি কি এ্যাবিউজড?- পর্ব এক - Shajgoj

আপনি কি এ্যাবিউজড?- পর্ব এক

abused

আমার বাবা মায়ের সংসার জীবন প্রায় তেত্রিশ বছরের, এই তেত্রিশ বছরে একটা দিনও বাবাকে মায়ের সাথে কোনদিন একটা জোরে কথা বলতে শুনিনি| বরং উল্টোটা হয়, কর্মক্ষেত্রে বিশাল ডাকাবুকো আমার বাবা জুতো না খুলে বা পাপোষে পা না মুছে ঘরে ঢুকলে মায়ের বকুনি খেয়ে চুপসে যেতেন প্রায়ই| আমার আর আমার পিচ্চি বোনের কাছে ডমেস্টিক ভায়োলেন্স বলতে বোঝাতো এটুকুই| তবে সত্যিকার অর্থে এটা এ্যাবিউজ নয়, বরং এ্যাবিউজ হচ্ছে ভয়াবহতম একটি ব্যাধি যা এর ভিকটিমের জীবনটিকে শেষ করে দেয়|

একটু বড় হয়ে জানলাম, এই এ্যাবিউজের শিকার হতে পারেন যে কেউই| এটি ছেলে বা মেয়ে, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, ধনী বা গরীব যে কারো ক্ষেত্রে হতে পারে| শুধু বৈবাহিক নয়, প্রেমের বা পারিবারিক সম্পর্কেও এ্যাবিউজ হতে পারে| এ্যাবিউজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মূল সমস্যা হচ্ছে, ভিকটিম জানেনই না তাঁকে অপব্যবহার করা হচ্ছে| তাঁর অবস্থা হয় পদ্মা নদীর মাঝির কুবেরের মত:

Sale • Oil Control, Acne Treatment, Dull Skin Treatment

    [picture]

    “গরীবের মধ্যে সে আরও বেশি গরীব, ছোটলোকের মধ্যে আরও বেশি ছোটলোক| সকলেই যাহা জানে, মুখ ফুটিয়া তাহা বলিবার অধিকার তাহার নাই”

    এই অধিকারহীন মানুষগুলোর জন্যে এই লেখাটি| এর থিওরিটিকাল দিকটি নিয়েছি সমাজবিজ্ঞানী লেনর ওয়াকারের প্রায় 1500 এ্যাবিউজ ভিকটিমের উপর করা একটি স্টাডি থেকে প্রাপ্ত “সাইকেল অফ এ্যাবিউজ” থিওরি থেকে, আর প্র‍্যাকটিকাল দিকটি নিয়েছি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভিকটিমের কাছ থেকে|

    বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আমি একজন বিবাহিতা নারী ভিকটিমের দৃষ্টিতে লেখাটি লিখছি, আপনারা এর সারাংশটি আপনাদের নিজেদের সম্পর্কের সাথে তুলনা করে মিলিয়ে নিতে পারেন আপনি এ্যাবিউজড কিনা| প্রথম পর্বে শুধু এটুকুই থাকবে|

    সাইকেল অফ এ্যাবিউজ হচ্ছে সম্পর্কের অপব্যবহারের একটি কমন প্যাটার্ন| এর ধাপগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা করছি:

    10368866_1613859785557653_825172928520862749_o

    উত্তেজনা পর্ব:

    কলেজের বান্ধবীদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল মিতা, ছয়টার মধ্যে ফেরার কথা| অনেক দিন পর পুরোন বান্ধবীদের সাথে গল্প করতে গিয়ে সময় খেয়াল ছিলনা, ফিরতে ফিরতে সাতটা বেজে গিয়েছিল| আর যায় কোথায়, প্রথমে সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট, কথা বলা বন্ধ, পাশাপাশি আসা বন্ধ| গোটা সংসারে একটা ঝড়ের পূর্বাভাস| মিতা বুঝতে পারছে, কপালে খারাবী আছে| এই সামান্য কারণে ভয়ে সিঁটিয়ে আছে ও, রীতিমত প্যানিক এ্যাটাক হচ্ছে| কাজে মন দিতে পারছেনা, অজানা ভয়ে বুক দুরুদুরু করছে| স্বামী রিশাদও ফুলছে মনে মনে| এত বড় সাহস মিতার! আজ দেখে নেবে ওকে, ডাক্তারী পাস করে বড্ড বাড় বেড়েছে ওর|

    এই যে দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা, সামান্য কারণে অসুস্থ্য পরিবেশ সৃষ্টি, এটা হচ্ছে এ্যাবিউজ সাইকেলের প্রথম ধাপ|

    ঘটন পর্ব:

    “মিতা, এখন কটা বাজে?”- কড়া গলায় প্রশ্ন করল রিশাদ| মিতার বুকের ভেতর তখন কেউ হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে কেউ| “সাড়ে সাতটা” – বলামাত্র ঠাস ঠাস দুই গালে দুটো থাপ্পড় বসিয়ে দিলো রিশাদ| “হারামজাদী বস্তির ছেমড়ি, ভদ্র ঘরে বিয়ের পরেও তোর ঢলাঢলির খায়েশ যায়নাই না? ডাক্তারি পাস করেছিস বলে খুব বাড় বেড়েছে, না? লাত্থি দিয়ে তোর বাপের বাড়ি পাঠায়ে দিবো ফকিরের জাত! তোর বাপ তো ছিল দুই পয়সার কেরানী, তোর মা আস্তা ডাইনী- তুই তো এরকম হবিই! কাল থেকে তোর বাইরে যাওয়া বন্ধ, তোর বখাটে ভাইটাকে একটা টাকা পাঠালে জবাই করে ফেলব”-বলেই চলেছে রিশাদ| হাউমাউ করে কাঁদছে মিতা, জানে, এরকম চলবে আগামী সপ্তাহখানেক|

    এই মানসিক, শারীরিক, অর্থনৈতিক অত্যাচারের অংশটিকে বলা হয় ঘটনপর্ব|

    পুনর্মিলন পর্ব:

    সপ্তাহখানেক পার হয়েছে, রিশাদের মেজাজ এখন ভাল| খারাপও লাগছে কিছুটা, এতটা খারাপ ব্যবহার না করলেও পারত| মিতাকে নিয়ে বাইরে খেতে গিয়েছে, সরি বলেছে| তবে কথা শোনাতে ছাড়েনি, দেরি করাটাই যে আসল দোষ মিতার এ নিয়ে সে নি:সন্দেহ| আর স্বামীরা ওরকম একটু আধটু গায়ে হাত তুলতেই পারে, এটা নিয়ে মিতা যেন বাড়াবাড়ি না করে, পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে ও|

    “সংসার”(?!) এর স্বার্থে মিতাও মেনে নিয়েছে এটা| কিছু না হোক, এখন তো ভাল আছে!

    প্রশান্তি পর্ব:

     রিশাদ ভুলেই গিয়েছে চড় থাপ্পরের কথা| এমন একটা ঘটনা যে ঘটেছে তা মনেই নেই ওর| মিতাকে আদর করেছে, শপিং এ নিয়ে গিয়েছে, আর এমন করবেনা বলে প্রমিজ করেছে| মিতাও প্রচন্ড খুশি, যাক, সংসারে সুখ আসছে তাহলে! এভাবে মাসখানেক হানিমুন পিরিয়ড চলার পর রিশাদ আজ আবার রাগ| কারণ: মিতার ফেসবুক প্রোফাইলে লাইক দিয়েছে রাজীব, মিতার মেডিকেল স্কুলের ক্লাসমেট| কত বড় সাহস, নিশ্চয়ই ওর আড়ালে কথাও বলে!

    মিতাও বুঝতে পেরেছে, দুর্ভোগ আসছে কপালে ওর|

    “মিতাআআআআ!?!” চিৎকার করে ডাকছে রিশাদ, হাতে চামড়ার বেল্ট|

    কাঁপতে কাঁপতে স্বামীর কাছে গেল ও| তারপর?

    আবার সেই একই চক্র, নিজেই মিলিয়ে নিন|

    প্রিয় পাঠক, চক্র তো জানলেন, এবার কিছু উদাহরণ দেই এবিউজের| গায়ে হাত না তুলেও ভীতি প্রদর্শন, চাপ প্রয়োগ, অপদস্ত করা, শাস্তি দেওয়া বা পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্নকরনের মাধ্যমে এবিউজ সম্পাদিত হয়। এক্ষেত্রে অত্যাচারিতকে নীচু করে, অপমান করে বা ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করা হয়।

    যেমন:

    ১। অপমান/ছোট করা, একান্তে বা অন্যের সামনে। উদাহরনঃ “এত চড়া আইশ্যাডো দিয়েছ কেনো? ভূত লাগছে।“ অথবা “অন্য মোটা মানুষকে নিয়ে হাসার আগে নিজেকে দেখ, তুমি কি!!”

    ২। নিয়মিত নারী’র মতামত, ইচ্ছা, প্রয়োজন, বুদ্ধি, আদর্শ, মনোভাব, আকাঙ্খা ইত্যাদিকে তুচ্ছ ও খাটো করা। যেমন—“এই শপিং করার দরকার ছিল কি? তোমার তো যথেষ্ট কাপড়চোপড়/জুতা/গয়না আছে!” অথবা “এত আবেগ কেন দেখাও মানুষের সামনে? নিজেকে সংযত করতে শিখো তো!”

    ৩। ব্যঙ্গ বা খোঁচা মেরে অপমান করা, নারীকে নিজের কাছেই তুচ্ছ করানো। যেমন—“তুমি তো মোটা, স্লীম হও না কেন?” অথবা “রান্নাটাও করতে শেখ নি, কী সংসার করবে?”

    ৪। নিজেদের করা অপমান এর মাত্রা কম করতে উলটো নারীকে বলা যে সে অতিরিক্ত সংবেদনশীল, ঠাট্টা-ও বোঝে না। যেমন—“আরে আমি তো দুষ্টামি করে তোমাকে কালো আর মোটা ডাকি!”

    ৫। নারীকে নিয়ন্ত্রণ করা, বাচ্চাদের মত। যেমন—“এত মানুষ তোমাকে ফোন করে কেন? জানো না নাম্বার ছড়িয়ে যেতে পারে? তুমি যাকে তাকে ফোন নম্বর দিবে না বা ফেসবুকে এ্যাড করবে না।“ অথবা “বড়দের মত ব্যবহার শিখতে হবে তোমাকে, বেফাঁস কথাবার্তা বলে আমাকে আর নিজেকে ছোট কর কেন?”

    ৬। সারাক্ষণ নারীর ব্যবহার কে শোধন বা পরিবর্তন করা। যেমন—“এরকম পাগলের মত জোরে হাসো কেন?” অথবা “আর সবাইকে নিজের অর্জন জানাতে হবে কেন? তুমি অনেক অহংকারী”

    ৭। অনুমতি ব্যতীত নারী কোন কাজ করতে পারে না। যেমন—বাইরে যাওয়া, বাজার করা, বন্ধুবান্ধব কে নিমন্ত্রণ করা ইত্যাদি।

    ৮। নারীকে অর্থনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা। যেমন—“তুমি টাকাপয়সা খরচের কি বোঝ? আগে নিজে আয় কর।“ অথবা “খালি খালি ফোন বিল বাড়াও কেন? দেশে এত কথা বলে কী হবে?”

    ৯। নারীর অর্জন, সাফল্য, আশা এবং স্বপ্ন ইত্যাদিকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং তুচ্ছ করা। যেমন—“তুমি একলাই পিএইচডি করো নাকি? এরকম অনেকেই আছে, তুমি এমন স্পেশাল কে?”

    ১০। সবসময় নিজেকে সঠিক আর নারীকে ভুল প্রমাণ করা। যেমন—“তুমি দুনিয়াদারীর কিছুই বোঝ না, কার প্রতি কেমন ব্যবহার করতে হবে জানো না।“

    ১১। নারীকে ভৎসর্নাপূর্ণ বা অবজ্ঞামূলক দৃষ্টি বা শরীরী ভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে কোন কাজে নিরস্ত করা।

    ১২। সর্বদা নারীর ভুল, ত্রুটি বা অক্ষমতা নিয়ে কথা বলা। যেমন—“তুমি তো বাসার কাজ করতে পারো না, বাপের বাড়িতে থেকে তো কিছুই কর নি তাই এই অবস্থা!”

    ১৩। আজগুবি, মিথ্যে বা কাল্পনিক দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করে নারীকে ছোট করা। যেমন—“তোমার তো আচরণগত সমস্যা আছে, যার-তার সাথেই ফ্রেন্ডলি হয়ে যাও আর গল্প করতে বসে যাও”

    ১৪। নিজেদের কে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা সহ্য না করতে পারা। নিজে নিজেকে নিয়ে উপহাস করার অক্ষমতা।

    ১৫। নিজেদের মতের সামান্য অমিলকে সহ্য না করতে পারা।

    ১৬। নিজেদের ব্যবহারের পিছনে অজুহাত দেওয়া, অন্যকে দোষারোপ করা এবং দুঃখ প্রকাশ করতে অক্ষমতা পোষণ করা। যেমন—“তুমি তো জানই যে আমি কাজের চাপে থাকি, ব্যাঙ্ক ঋণ, বাসার চিন্তা ইত্যাদি-ও আমাকে প্রচুর পীড়া দেয়। এমন অবস্থা একটু রাগ উঠে যেতেই পারে, তোমার বোঝা উচিৎ!”

    ১৭। বার বার নারী’র প্রতি সীমা লঙ্ঘন করা এবং তার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন। যেমন—“তুমি তো ঠিকভাবে পোশাক পড়তেও জান না, দেখতেই হাস্যকর লাগে। যাও বদলে আসো।“ অথবা অহেতুক তার ফোন, সোশাল নেটওয়ার্ক প্রোফাইল, ইমেইল, চিঠিপত্র ইত্যাদি বিনা অনুমতিতে দেখা ও তাতে অপছন্দের কিছু পেলে ঝগড়া করা।

    ১৮। নিজের সমস্যা, অশান্তি আর জীবনের প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদির জন্য নারীকে দোষারোপ করা। যেমন—“তোমার জন্যই এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করে এইসব ঝামেলায় পড়েছি। আমার তো ইছা-ই ছিল না, শুধু তোমার কথায় বিয়ে করতে হলো!”

    ১৯। গালিগালাজ করা, অপমান সূচক সম্বোধন করা, তীব্র সমালোচনা করা।

    ২০। আবেগী আচরণ অনুপস্থিত থাকা, আবেগীয়ভাবে নারীর থেকে দুরত্ব রাখা, সহমর্মিতা, সমব্যাথীতা না থাকা। যেমন—অসুস্থতার সময় বিরক্তি প্রকাশ করা, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়াতে অনীহা ইত্যাদি।

    ২১। শারীরিক সম্পর্ককে নারীর বিরুদ্ধে মানসিক শাস্তি হিসেবে ব্যবহার করা, এরূপ সম্পর্ক থেকে নারীকে বঞ্চিত করা।

    ২২। নারীর প্রতি উদাসীনতা, কথা না বলা, তাকে অগ্রাহ্য করা, যেকোন ছোট ছোট সাহায্য করতে অনীহা প্রকাশ করা। যেমন—“আমার পক্ষে এখন গাড়ি চালিয়ে তোমাকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়, নিজে যেভাবে পার চলে যাও।“ অথবা ঘরের কাজে সাহায্য না করা।

    ২৩। নারীর আবেগ-অনুভূতি কে তুচ্ছ এবং হাস্যাস্পদ করা। যেমন—“এত কাঁদো বা হাসো কেন? সবকিছুই তোমার অতিরিক্ত।”

    ২৪। নারীকে আলাদা একজন অস্তিত্ব বা মানুষ হিসেবে না ভেবে, নিজের-ই বর্ধিত রূপ বা অংশ হিসেবে ভাবা, নিজের ইচ্ছা মত তার ব্যক্তিত্ব কে নিয়ন্ত্রণ বা বদলানোর চেষ্টা করা। যেমন—“তুমি জানো আমি অতিরিক্ত আবেগী বা বন্ধুবৎসল না, কাজেই তুমি-ও তেমনটা হতে পারবে না।“

    ২৫। নিজেদের নিপীড়ক স্বাভাব কে স্বীকার না করা। যেমন—“আরে আমি তো কখনোই ওকে সিরিয়াসলি কোন অপমান করি নি, শুধু ঠাট্টা করেছি ওর সাথে, ও-ই তো বুঝে না।“

    ২৬। ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নারীকে নিয়ন্ত্রণ করা। যেমন—অহেতুক ঝগড়া করা, রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যাওয়া, বাইরে থেকে ঘরে ঢুকতে না দেওয়া ইত্যাদি।

    উপরের উদাহরণগুলো লিখে পাঠিয়েছেন আমেরিকা প্রবাসী পিএইচডি গবেষক অনিতা রহমান( ছদ্মনাম)|

    প্রিয় পাঠক, আপনার সাথে কি এমন কিছু হচ্ছে ? বা আপনি নিজেই মনের অজান্তে পার্টনারকে এমন করছেন না তো?

    দ্রুত চিহ্নিত করুন! যদি মিলে যায়, You have a MAJOR problem to solve.

    কি করবেন এমন হলে?

    আপাতত: সঙ্গে থাকুন , দ্রুতই আসছি সমাধান জানাতে|

    লিখেছেনঃ মাসরুফ  হোসেন

    ছবিঃ মাসরুফ হোসেন, devonsafeguardingchildren

    3 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort