বলা হয়ে থাকে, দিনের বেলা সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট। বাইরে বের হওয়ার আগে কিংবা ঘরে থাকলেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু কেন? সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই না করলে কী হয়? কোন বয়স থেকে সান প্রোটেকশন নিতে হবে? কেন টিনেজ থেকেই রেগুলার সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত? আজকের ফিচারে আমরা কিছু বেসিক ইনফরমেশন শেয়ার করবো। যারা টিনেজার বা স্কিনকেয়ারে একদমই বিগেইনার, তাদের জন্য আজকের ফিচারটি হেল্পফুল হবে আশা করি।
সানস্ক্রিন কেন ব্যবহার করবেন?
পল্যুশনের কারণে পৃথিবীর ওজন স্তর ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে আর সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে চলে আসছে। UVA ও UVB রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট! এর কোনো অল্টারনেট অপশন নেই।
১) এজিং সাইনস প্রিভেন্ট করতে
ইয়াংগার লুকিং স্কিন কার না পছন্দ? রিংকেলস বা ফাইন লাইনস অল্প বয়সেই ফেইসে ভিজিবল হোক, সেটা আমরা কেউ চাই না, রাইট? সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৫ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে যারা নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেছেন তাদের রিংকেলস পরার চান্স অন্যদের তুলনায় ২৪% কম। টিনেজ থেকেই যদি প্রোপার সান প্রোটেকশন নেওয়া হয়, তাহলে চল্লিশের কোঠায়ও আপনার ত্বক থাকবে হেলদি ও ইয়াং!
২) স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
সাধারণত ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হয়। তবে সানস্ক্রিন ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখে শুধু তাই নয়, এটি স্কিন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। বেশিরভাগ স্কিন ক্যান্সারের জন্য আল্ট্রা ভায়োলেট রেডিয়েশন দায়ী। তাই টিনেজ থেকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
৩) সানবার্ন ও স্পটস প্রিভেন্ট করতে
সূর্যের UVB রশ্মির কারণে আমাদের স্কিনের এপিডার্মিস লেয়ারে মেলানোসাইট সেলস ট্রিগার হয়ে যায়। যার কারণে তখন এক্সেস মেলানিন তৈরি হয়। ফলে ত্বকের উপরিভাগে ব্রাউন পিগমেন্ট দেখা দেয়, একে বলা হয় সানট্যান। স্পটস, সানবার্ন প্রিভেন্ট করতে চাইলে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই ও ২ ঘন্টা পর পর রিঅ্যাপ্লাই করা কিন্তু মাস্ট।
৪) স্কিন ওভারঅল হেলদি রাখতে
ত্বক সুস্থ রাখার জন্য কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রোটিনগুলোর কার্যকারিতা ও গঠনে বাধা দেয় ইউভি রশ্মি। তাই ডে টাইমে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা জরুরি, যা স্কিনকে সুরক্ষিত রেখে হেলদি ও ইয়াং লুকিং স্কিন এনশিওর করে।
টিনেজ থেকেই রেগুলার সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যে একদম শুরু থেকেই আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে সানস্ক্রিন ইনক্লুড করা কতটা জরুরি। টিনেজে স্কিনে হেলদি গ্লো থাকে, তেমন কোনো সিরিয়াস স্কিন কনসার্ন থাকে না। তাই সানস্ক্রিন কিন্তু অনেকেই স্কিপ করেন। এর প্রয়োজনীয়তা সেই সময়ে বোঝা যায় না। কিন্তু দিনের পর দিন সান প্রোটেকশন ছাড়া আপনি যখন বাইরে বের হচ্ছেন, আপনার অজান্তেই স্কিনের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস, আনইভেন স্কিনটোন, ডার্ক প্যাচেস- আরও কত কত প্রবলেম! তাই সময় থাকতেই সচেতন হোন।
সানস্ক্রিনের ধরন
১) ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন বা মিনারেল সানস্ক্রিন যাতে টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড ও জিংক অক্সাইড থাকে। এটি ইউভি রশ্মিকে প্রতিফলিত করে ও কিছু রে হিটে কনভার্ট করে বাইরে বের করে দেয়, যার ফলে এই ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে না।
২) কেমিক্যাল সানস্ক্রিনে থাকে avobenzone ও octisalate এর মতো উপাদান যা স্কিনে পেনিট্রেট হয়ে যায় এবং কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে ইউভি রশ্মিকে হিটে কনভার্ট করে। অর্থাৎ সেটাকে ইনঅ্যাকটিভ করে দেয়। এতে স্কিন ড্যামেজ প্রিভেন্ট হয় এবং স্কিন প্রোটেকটেড থাকে।
৩) হাইব্রিড সানস্ক্রিনে ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল UV ফিল্টারস এর কম্বিনেশন দেখা যায়। এটি Broad-spectrum প্রোটেকশন প্রোভাইড করে আপনার ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।
কোন সানস্ক্রিনটি আমার জন্য পারফেক্ট?
আপনার যদি একনে প্রন ও অয়েলি স্কিন হয়, তাহলে বেছে নিন লাইট ওয়েট ও নন কমেডোজেনিক সানস্ক্রিন। যদি ড্রাই স্কিন হয়, তাহলে চুজ করুন ময়েশ্চারাইজিং সানস্ক্রিন। বাংলাদেশের আবহাওয়াতে SPF 30 থেকে SPF 60 উপযুক্ত। সাধারণত SPF 35 ৯৭% ইউভি রে ব্লক করে। SPF 50 প্রায় ৯৮% ইউভি রে ব্লক করতে পারে। তাই আপনার বাজেট, স্কিন টাইপ সবকিছু মিলিয়ে রাইট প্রোডাক্টটি চুজ করতে পারেন।
কখন সানস্ক্রিন ব্যবহার করবো?
বাইরে যাওয়ার আধা ঘন্টা আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। দুই আঙুলে সানস্ক্রিন নিন, এরপর ড্যাব ড্যাব করে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। মিনারেল সানস্ক্রিন অনেক সময় হোয়াইট কাস্ট দেয়, তাই সময় নিয়ে ইভেনলি অ্যাপ্লাই করুন। সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে ময়েশ্চারাইজার এবং ব্যবহারের পর ফেইস পাউডার অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
কতবার ব্যবহার করতে হবে?
প্রোপার সান প্রোটেকশনের জন্য ২/৩ ঘন্টা পর পর সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট। অনেকেই বুঝতে পারেন না সানস্ক্রিন কীভাবে রিঅ্যাপ্লাই করবেন। সেক্ষেত্রে মেকআপ ওয়াইপস দিয়ে ফেইস মুছে নিয়ে অথবা নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেইস হালকা করে মুছে তারপর রিঅ্যাপ্লাই করতে পারেন। যারা মেকআপ করে বাইরে যান, তারা রিঅ্যাপ্লাই এর জন্য SPF যুক্ত কমপ্যাক্ট পাউডার ইউজ করতে পারেন। তবে মেকআপ প্রোডাক্টে অনেক সময়ই এনাফ সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর থাকে না, তাই এদিকটাও খেয়াল রাখবেন।
টিনেজ থেকেই রেগুলার সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা এবং দিনশেষে ডাবল ক্লেনজিং করার অভ্যাস করে ফেলুন। ভালো কোয়ালিটির সানস্ক্রিনে ইনভেস্ট করলে সেটা কিন্তু বিফলে যাবে না। যারা আজ এই ফিচারটি পড়লেন, আশা করি সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা নিয়ে তারা আর আলসেমি করবেন না! সাজগোজের ৯টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকে বেছে নিতে পারেন অথেনটিক প্রোডাক্ট আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক