বলা যায়, ২০২২ সালে এসেই হেভি ফাউন্ডেশন ও কনট্যুর এর ট্রেন্ড বদলে যেতে শুরু করলো। এই বছরে তো পুরোদমেই হেভি মেকআপ লুকের জায়গা দখল করে নিয়েছে সফট ডিউয়ি ফ্রেশ লুক। ন্যাচারাল স্কিন টেক্সচার ঠিক রেখে ‘নো মেকআপ’ মেকআপ লুকেরই ট্রেন্ড চলছে। রেড কার্পেটের সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে বিয়ের কনে, সবাই প্রিফার করছে সফট বা নিউট্রাল লুক। বলিউড সেলিব্রেটিদের বিয়ের আসরে সফট পিংক টোনের ব্রাইডাল মেকআপের প্রশংসা সবার মুখে মুখে। রোজি পিংক ব্লাশ পুরো মেকআপ লুককেই যেন ফুটিয়ে তুলেছে। আজকের ফিচার থেকে জেনে নিন ব্লাশ ট্রেন্ড এর আদ্যোপান্ত।
ব্লাশ কেন অ্যাপ্লাই করবেন?
১) ফ্রেশ ও নিউট্রাল লুক সবাই প্রিফার করে। ডেইলি লাইফের স্ট্রেস, পল্যুশন, টায়ার্ডনেস এসব কিছুর কারণে অনেক সময়ই ফেইস মলিন দেখায়। এক্ষেত্রে একটুখানি ব্লাশ হতে পারে গেইম চেঞ্জার! মেকআপের মাধ্যমে ন্যাচারাল লুক ফুটিয়ে তুলতে অ্যাপ্লাই করুন পিংকিশ বা হালকা শেইডের ব্লাশ।
২) লিকুইড কিংবা ক্রিমি টেক্সচারের ব্লাশ মেকআপ লুকে স্মুথ আর ফ্ললেস ফিনিশ দেয়। ব্লাশ আপনার টোটাল লুককে কমপ্লিট করে, সেটা হোক পার্টি মেকওভার বা রেগুলার মেকআপ লুক।
কীভাবে অ্যাপ্লাই করবেন?
শার্প ও লিফটেড লুক এখন ট্রেন্ডি। তাই প্রথাগতভাবে চিকে ব্লাশ অ্যাপ্লাই করা হলেও এখন চিকবোনের উপরে টেনে ব্লাশ অ্যাপ্লাই করা হয়, যাতে পুরো লুকটাই লিফটেড মনে হয়। তাই এখন জাস্ট মেকআপ ব্রাশে একটু ব্লাশ নিয়ে ফেইসে ডাস্টিং না করাটাই হবে সময়ের উপযোগী। তবে আপনি যদি কে-ড্রামা বা কোরিয়ান পপ কালচারের ভক্ত হোন, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা! রেগুলার লুকের ক্ষেত্রে ক্রিম বেইজড ব্লাশ ফিঙ্গার টিপসের সাহায্যে চিকে ব্লেন্ড করতে পারেন। এতে সফট ন্যাচারাল লুক পাওয়া যায় ইনস্ট্যান্টলি। খেয়াল রাখুন ব্লেন্ডিং যাতে স্মুথ ও পারফেক্ট হয়।
ব্লাশ ট্রেন্ড
ব্লাশ সাধারণত ৩ ধরনের হয়-
- লিকুইড
- ক্রিম
- পাউডার
লিকুইড ব্লাশ
একটা সময় ক্রিম ব্লাশ এর প্রচলন বেশি হলেও পরবর্তীতে পাউডার ব্লাশ মোটামুটি একচেটিয়া বাজার দখল করে! তবে ২০২০ সালে আসে বেশ বড়সড় পরিবর্তন। বিশ্বখ্যাত গায়িকা সেলেনা গোমেজ তার বিউটি ব্র্যান্ড রেয়ার বিউটি লঞ্চ করেন। তার নিজের মেকআপ আইডিয়া বা ফিলোসফি যা সফট ডিউয়ি সুইট বলে পরিচিত সেটার সাথেই সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে চান। রেয়ার বিউটির লিকুইড ব্লাশ খুব অল্প সময়েই পপুলারিটি পায় সোশ্যাল মিডিয়াতে। হাইলি পিগমেন্টেড এবং স্কিনের সাথে সহজে মিশে একদম ন্যাচারাল লুক দেয় বলে লিকুইড ব্লাশ জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। অন্যান্য ব্র্যান্ডের লিকুইড ব্লাশের বিক্রিও বাড়ে। এভাবেই লিকুইড ব্লাশ পপুলার হয়ে ওঠে।
ড্রাই স্কিনে ডিউয়ি লুক ক্রিয়েট করতে সিলেক্ট করুন লিকুইড ব্লাশ। এটি ইজি টু অ্যাপ্লাই ফর্মুলা অর্থাৎ সহজেই অ্যাপ্লাই করা যায়। ব্রাশ, পাফ এমনকি স্রেফ আঙুল দিয়েও খুব সুন্দরভাবে অ্যাপ্লাই করা যায় লিকুইড ব্লাশ।
ক্রিম ব্লাশ
কে-পপ কালচার জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরুর পর থেকে কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টেরও বিশ্বব্যাপী চাহিদা বাড়ে। কোরিয়ান ইন্সপায়ার্ড মেকআপ লুকে ক্রিম ব্লাশ ব্যবহার করা হয় সাধারণত। ক্রিম ব্লাশ স্কিনে স্মুথ আর সফট ফিনিশ দেয়। তবে এটি অ্যাপ্লাইয়ের সময় অনেকেই পরিমাণ না বুঝে বেশি নিয়ে নেন, এতে ব্লেন্ডিং হয় না ঠিকঠাক। ব্লেন্ডিং ঠিকমতো করতে না পারলে প্রোডাক্ট ভেসে ভেসে থাকে এবং এতে লুক আর্টিফিশিয়াল দেখায়। অনেক ব্র্যান্ড মাল্টিপারপাস ক্রিম ব্লাশ বাজারজাত করে। এগুলো লিপ টিন্ট বা লিপবামেরও কাজ করে। অনেকে ক্রিমি আইশ্যাডোর বিকল্প হিসেবেও ক্রিম ব্লাশ ব্যবহার করেন। ভ্রমণের সময় আলাদা আলাদা অনেকগুলো প্রোডাক্ট নেয়ার ঝক্কি এড়াতে তাই ক্রিম ব্লাশ বেছে নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
পাউডার ব্লাশ
পাউডার ফর্মের ব্লাশ দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। অয়েলি স্কিনে ম্যাট ফিনিশ দিতে এই ব্লাশ ভালো কাজ করে। আমাদের মতো গরম আবহাওয়ার দেশে মেকআপ ক্রিজ করা বা সেপারেট হয়ে যাওয়া বেশ কমন প্রবলেম। তাই ক্রিমি প্রোডাক্টের পরিবর্তে পাউডার বেইজড প্রোডাক্ট সাজেস্ট করা হয়। তাই যাদের স্কিন অয়েলি, তারা রেগুলার বেসিসে পাউডার ব্লাশ ব্যবহার করতে পারেন। এই ধরনের ব্লাশ অবশ্যই বড় পাউডার ব্রাশ দিয়েই অ্যাপ্লাই করা উচিত।
কোন শেইডের ব্লাশ বেছে নিবো?
যেহেতু এই সিজনে সফট ‘নো মেকআপ’ মেকআপ লুক বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে, তাই এমন ব্লাশ শেইড বেছে নেওয়া উচিত যাতে ফেইস প্রাণবন্ত দেখায়। পিচ, কোরাল, অরেঞ্জ, বেবি পিংক, বাবলগাম পিংক – এই শেইডগুলো এখন বেশ ট্রেন্ডি। আপনার স্কিনটোন অপেক্ষাকৃত ডার্ক হলে মভ, বেরি, প্লাম, ব্রাউনিশ পিংক এই শেইডগুলো ট্রাই করুন! ডাস্কি বিউটিদের জন্য ব্লাশের এই শেইডগুলো একদম মাস্ট হ্যাভ। ফেয়ার স্কিনটোনে সফট পিংক, লাইট অরেঞ্জ এগুলো বেশ সুন্দর মানিয়ে যায় এবং ন্যাচারাল লাগে।
ব্লাশ ট্রেন্ড এর আদ্যোপান্ত জেনে নিলেন! তাহলে আজ থেকেই আপনার মেকআপ রুটিনে জায়গা করে নিক ব্লাশ। ন্যাচারাল বিউটিকে এনহ্যান্স করতে স্কিনটোন বুঝে তারপর ব্লাশ শেইড পিক করুন। কনফিডেন্টলি ক্যারি করতে পারলে যেকোনো শেইডই কিন্তু আপনাকে মানিয়ে যাবে। আজ এই পর্যন্তই! সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর, সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকে বেছে নিতে পারেন অথেনটিক প্রোডাক্টস আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।
ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ