স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স কীভাবে ঠিক রাখা যায়?

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স কীভাবে ঠিক রাখা যায়?

IMG_5053-1

স্কিন কেয়ারের কথা বলতে গেলে অনেক কিছুর কথাই বলা যায়। যেমন- ক্লেনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজাইং, সিরাম অ্যাপ্লাই ইত্যাদি। ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্কিনের জন্য নানা কিছু করছেন। কিন্তু সবকিছু করার মূলে আসলে কাজ করে স্কিনের অয়েল ও ওয়াটার। এই দুটোর ব্যালেন্স যদি ঠিক না থাকে তাহলে যত কিছুই করা হোক না কেন লাভ হবে না। বুঝতেই পারছেন আজ আমি কথা বলতে যাচ্ছি স্কিনের অয়েল ও ওয়াটার নিয়ে। ভাবছেন আমি মুখে তেল পানি লাগাতে বলছি? একদম না। বরং এই দুটি উপাদান যদি স্কিনে ইমব্যালেন্সড থাকে তাহলে হতে পারে বেশ কিছু সমস্যা। আজ জানাবো স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলে কী কী সমস্যা হতে পারে এবং কীভাবে এই দু’টোর ব্যালেন্স করবেন সে সম্পর্কে।

ত্বকের ধরন বোঝা কেন জরুরি?

প্রথমে বুঝতে হবে আপনার স্কিন কী ধরনের। অনেকের মনে একটা ভুল ধারণা আছে যে অয়েলি স্কিনে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করতে হয় না। এটা একদম ভুল। কারণ অয়েলি স্কিনে না লাগালে সেটা আরও বেশি সেবাম তৈরি করে স্কিনকে আরও বেশি অয়েলি করে তুলবে। আবার অনেকে ড্রাই স্কিনে এমন ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করেন, যেটাতে স্কিন ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজড ও হাইড্রেটেড হয় না।

ত্বকে ন্যাচারালি তেল তৈরি হয়। আর পানির পরিমাণ নির্ধারিত হয় আপনি কী পরিমাণ লিকুইড ইনটেক করছেন এবং আরও কিছু পারিপার্শ্বিক জিনিসের উপর। ত্বকে তেল তৈরি হয় মূলত স্কিনকে বাইরের ড্যামেজ থেকে রক্ষা করার জন্য। অনেক সময় এই কারণে অনেক ড্রাই স্কিন এর মানুষ মনে করেন তাদের স্কিন অয়েলি এবং সেই কারণে ঘন ঘন ক্লেনজার ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করেন, ফলে ত্বকের ন্যাচারাল অয়েল লেভেল নষ্ট হয়ে যায় এবং স্কিন খসখসে দেখায়।

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স করা কেন জরুরি

স্কিনে এক্সেস অয়েল কেন তৈরি হয়?

আমাদের স্কিনে এক্সেস অয়েল প্রোডিউস হওয়ার পেছনে কিছু কারণ আছে। সেগুলো হচ্ছে-

আনহেলদি লাইফস্টাইল

অতিরিক্ত ব্যায়াম এবং ঘুমের অনিয়মের কারণেও অতিরিক্ত সেবামের নিঃসরণ ঘটে। তাই ত্বকে সেবাম এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে পরিমিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দরকার। স্ট্রেসের কারণে শরীরে হোয়াইট ব্লাড সেল কাউন্ট কমে যায় বলে সেটা স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। স্কিনের সারফেস অনেক সেনসিটিভ হয়ে যায় এবং সহজেই ইরিটেশন হয়। আর ইরিটেশন স্কিনের তেলের নিঃসরণ বাড়ায়।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

বেশিরভাগ মানুষের স্কিন প্রবলেমের পিছনে অন্যতম কারণ থাকে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। যদি তেলে ভাজা, অতিরিক্ত মশলাদার খাবার বেশি খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে স্কিনের প্রবলেম সারানো খুব মুশকিল হয়ে যায়।

আনহেলদি ফুড

ভিটামিনের অভাব

শরীরে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ই ও এ এর অভাব হলে স্কিন রাফ হয়ে যেতে পারে। তাই আপনার যদি স্কিন টেক্সচার আনহেলদি মনে হয়, তাহলে একবার ডায়েট চার্ট চেক করে দেখুন সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান আছে কিনা।

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক আছে তো?

ফেইসে একনে দেখা দিলেই আমরা অভিযোগ করে বসি, প্রোডাক্টে নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা ছিল! অথচ একবারও ভাবি না যে এই সমস্যা হতে পারে স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলেও। কীভাবে বুঝবেন এই দুটো উপাদানের ব্যালেন্স ঠিক নেই? চলুন জেনে নেয়া যাক-

১) স্কিন সারফেসে ওয়াটার ও অয়েলের ইমব্যালেন্স হলে সেখানে স্কিন কনসার্নের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই একনে তৈরি হয়। সেজন্য ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। আপনি রেগুলার যে ফেইসওয়াশটি ইউজ করছেন সেটি pH ব্যালেন্সড তো এবং আপনার স্কিন থেকে প্রোপারলি এক্সেস সেবাম ক্লিন করছে তো?

২) আরেকটি কমন প্রবলেম হল পোরস ব্লক হয়ে যাওয়া। স্কিনের অতিরিক্ত সেবামের সাথে ইমপিওরিটিস ও ডার্ট মিক্স হয়ে পোরসকে ব্লক করে দেয়। এ থেকেই দেখা দেয় বাম্পস, একনে, র‍্যাশের মতো স্কিন প্রবলেম। এ কারণে স্কিনের অয়েল ব্যালেন্স যদি ঠিক না থাকে তাহলে পোরস ক্লগের মতো স্কিন কনসার্ন খুব সহজেই দেখা দেয়।

৩) আমরা যখন গরমে ঘামি তখন আমাদের ফেইসে এক্সেস ওয়াটার প্রোডিউস হতে থাকে। যদি অল্প সময়ের মধ্যে এই ঘাম মুছে ফেলা না হয়, তাহলে ফেইসের অয়েল ও ওয়াটারের ইমব্যালেন্স হয়। আর তখন বাইরের পল্যুশন, ডার্ট এর সাথে ঘাম মিশে দেখা দিতে পারে একনে প্রবলেম।

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলে কী হয়

এই ব্যালেন্স ঠিক রাখা যায় যেভাবে  

অয়েলি স্কিনে অয়েলের পরিমাণ বেশি হয় এটা তো আমরা জানি। আবার এটাও সত্যি যে, যদি ওয়াটারের সাথে অয়েলের ব্যালেন্স ঠিক না থাকে, বা কমবেশি হয় তাহলে স্কিন প্রবলেম দেখা দিতে পারে। চলুন জেনে নেই কীভাবে এই ব্যালেন্স ঠিক রাখা যায়-

১) সঠিক ক্লেনজার ব্যবহার করা

ক্লেনজিং এর সময় খেয়াল রাখতে হবে যে সঠিক ক্লেনজার ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, ক্লেনজারের উপকরণ কী কী, দিনে কয়বার মুখ ধুচ্ছেন, কোন ধরনের স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড, ক্লেনজারটি পিএইচ ব্যালেন্সড কিনা। কেননা ক্লেনজার বেশি ব্যবহার করলে বা ক্লেনজারের উপাদান হার্শ হলে ত্বকে আরও বেশি সেবাম নিঃসরণ হয় এবং স্কিনের পোরস ব্লক হয়ে একনের সৃষ্টি করে। আমাদের ত্বকে কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া প্রোডিউস হয়, যেগুলো স্কিন ব্যারিয়ার প্রোটেক্ট করে এবং স্কিনের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্সড রাখে। তাই ওভার ওয়াশ করা যাবে না। অয়েলি স্কিনের যত্নে সপ্তাহে ২/৩ দিন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বেইজড ক্লেনজার স্কিন কেয়ার রুটিনে অ্যাড করুন।

SHOP AT SHAJGOJ

    ২) ফেসিয়াল মিস্ট সাথে রাখুন 

    স্কিন কতটা সেবাম নিঃসরণ করবে তার অনেকটা নির্ভর করে আশেপাশের পরিবেশের উপর। আপনি যদি অনেক বেশি সময় এসি রুমে থাকেন বা অনেক বেশি সময় রোদে থাকেন সেক্ষেত্রেও আপনার স্কিন অনেক বেশি ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে পারে। তাই সব সময় ফেসিয়াল মিস্ট সাথে রাখুন। যখনই স্কিন ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড মনে হবে, জাস্ট অ্যাপ্লাই করে নিন।

    ৩) স্কিন টাইপ বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা

    একটা ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার আপনার স্কিনের জন্য হয়ে উঠতে পারে গেইম চেঞ্জার। তাই ময়েশ্চারাইজার কেনার আগে দেখে নিন এটি আপনার স্কিনের সাথে মানানসই কিনা। স্কিন সারফেসে ওয়াটার রিটেইন করার জন্য হায়ালুরোনিক অ্যাসিড খুব ভালো কাজ করে। তাই স্কিনের হাইড্রেশন ধরে রাখার জন্য এই উপাদানটি আছে এমন ময়েশ্চারাইজার চুজ করুন। আর অয়েল প্রোডাকশন বেশি হলে ম্যাট ও অয়েল ফ্রি লাইট ময়েশ্চারাইজার সিলেক্ট করতে ভুলবেন না।

    ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা

    ৪) শরীরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখা

    এখন যেহেতু বাইরে অনেক গরম তাই শরীরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখা এখন অনেক বেশি জরুরি। কেননা গরমে সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে অতিরিক্ত সেবাম নিঃসরিত হয়। এর জন্য নরম সুতি কাপড় পরতে পারেন, শরীর ঠান্ডা রাখে এমন খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

    ৫) সঠিক ডায়েট মেনে চলা

    ভিটামিন ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার আছে এমন ডায়েট চার্ট মেনে চলুন। তেলযুক্ত মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। হাই গ্লাইসেমিক ডায়েট অর্থাৎ যে ডায়েটে সুগারি ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার বেশি থাকে, সেটি ফলো করলে স্কিনে এক্সেস সেবাম প্রোডাকশন হতে পারে। যদি আপনার খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না থাকে, তাহলে বদলে ফেলুন ডায়েট চার্ট।

    SHOP AT SHAJGOJ

       

      এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক রাখা কেন জরুরি। সেই সাথে স্কিন কেয়ার রুটিনে যে প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করবেন সেগুলো যেন অথেনটিক হয় খেয়াল রাখতে হবে সেদিকেও। অথেনটিক স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

      ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক

      2 I like it
      1 I don't like it
      পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

      escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort