প্রতিদিন বাইরে যাওয়ার আগে ফেইস দেখতে টায়ার্ড ফ্রি ও রেডিয়েন্ট লাগুক এমনটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে ভালোভাবে মেকআপ না করলে দেখতেও ভালো লাগে না, আবার তাড়াহুড়ায় ইচ্ছাও করে না সাজতে। ফলে ফেইস দেখতে একদম ডাল লাগে। আবার পারফেক্ট মেকআপ লুকের জন্য ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই না করলেও ভালো লাগে না। তবে সময়ের কথাই বলুন অথবা ইচ্ছার- প্রতিদিন ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করে মেকআপ করা আর হয়ে ওঠে না। তাই আজ আপনাদের জানাবো খুব সহজেই ফ্ললেস নো ফাউন্ডেশন মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার সহজ কয়েকটি টিপস। এই টিপস ফলো করলে ফাউন্ডেশনও লাগবে না, আবার মেকআপ লুকও কমপ্লিট হবে।
নো ফাউন্ডেশন মেকআপ লুক
নিশ্চয়ই ভাবছেন, ফাউন্ডেশন ছাড়া কীভাবে আবার মেকআপ লুক ক্রিয়েট করা যায়? যতটা কঠিন ভাবছেন, ব্যাপারটি আসলে মোটেও ততটা কঠিন কিছু না। স্টেপ বাই স্টেপ বললেই তা বুঝতে পারবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে স্টেপগুলো জেনে নেয়া যাক-
১) স্কিন প্রিপেয়ার করে নেয়া
ফ্ললেস নো ফাউন্ডেশন মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে স্কিনকে প্রিপেয়ার করে নেয়া। ফ্রেশ ও হাইড্রেটেড স্কিন ইনার রেডিয়েন্স এনহ্যান্স করে এবং মেকআপ লুককে ন্যাচারাল করে তোলে। সবার আগে আপনার স্কিনের জন্য স্যুইটেবল একটি ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ভালোভাবে ক্লিন করে নিন। এরপর চুজ করুন স্কিন টাইপ অনুযায়ী টোনার ও ময়েশ্চারাইজার। স্কিন টাইপ যেমনই হোক না কেন, স্কিন হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড রাখার জন্য একটি লাইট ওয়েট ও নন গ্রিজি ময়েশ্চারাইজার সিলেক্ট করতে হবে। এতে মেকআপ শুরুর আগে স্কিনে একটি স্মুথ ক্যানভাস ক্রিয়েট হবে।
২) প্রাইমার অ্যাপ্লাই করা
ফাউন্ডেশন দিয়ে হয়তো গ্ল্যামারাস লুক ক্রিয়েট করতে চাচ্ছেন না, তার মানে এই নয় যে প্রাইমার স্কিপ করবেন। নো ফাউন্ডেশন মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার আগে স্কিনের জন্য বেছে নিন লাইটওয়েট ও পোর মিনিমাইজিং প্রাইমার। এটি পোরস ব্লার করতে এবং সফট ফোকাস ম্যাট ফিনিশ পেতে হেল্প করবে। এমনই একটি প্রাইমার হচ্ছে Nirvana Color Face Perfect Pro Primer। মেকআপের আগে পারফেক্ট বেইজ ক্রিয়েট করার জন্য বেস্ট একটি প্রাইমার এটি।
৩) কনসিলার অ্যাপ্লাই করা
আপনি ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করতে চাচ্ছেন না, অথচ ফেইসের কিছু স্কিন কনসার্ন কভার করা প্রয়োজন। এমন হলে কনসিলার হতে পারে গেইম চেঞ্জার। যদি আপনার ফেইসে হাইপারপিগমেন্টেশন, ব্লেমিশ, ডার্ক আন্ডার আই, একনে স্পটস বা রেডনেস থাকে তাহলে কনসিলার ইজ মাস্ট! তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন-
১) ফাউন্ডেশন শেইডের সাথে ম্যাচ করে অথবা এক শেইড লাইটার কনসিলার চুজ করুন।
২) হাইড্রেটিং ফর্মুলা যুক্ত কনসিলার চুজ করুন। আপনার স্কিন যদি ড্রাই বা ডিহাইড্রেটেড হয় সেক্ষেত্রে ম্যাট কনসিলার অ্যাভয়েড করুন। নইলে স্কিন ড্রাই হয়ে যেতে পারে। আবার যদি স্কিন অয়েলি হয়, তখন ম্যাট কনসিলার চুজ করতে পারেন। তাই কনসিলার চুজ করার আগে স্কিন টাইপ বোঝা খুব জরুরি।
৩) আপনি চাইলে ফুল কভারেজের কনসিলারও চুজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে খুবই অল্প পরিমাণ প্রোডাক্ট নিয়ে স্পঞ্জ অথবা ফিঙ্গারের সাহায্যে ব্লেন্ড করতে হবে।
৪) কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের পর জোরে জোরে রাব না করে ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ধীরে ধীরে ব্লেন্ড করে নিন।
৪) ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নেয়া
কনসিলার অ্যাপ্লাই করার পর এবার ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নেয়ার পালা। যে সব এরিয়ায় কনসিলার অ্যাপ্লাই করেছেন সেই এরিয়াগুলোসহ টি-জোনে পাউডার অ্যাপ্লাই করে নিন। এতে স্কিনের এক্সেস অয়েল অ্যাবজর্ব হয়ে যাবে।
৫) ক্রিমি ফর্মুলা চুজ করা
আপনি যখন নো ফাউন্ডেশন মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে চাচ্ছেন, তখন পাউডারের বদলে ক্রিম ব্লাশ, ক্রিম ব্রোঞ্জার, ক্রিম হাইলাইটার চুজ করাই বেটার। পাউডার যে একদমই ব্যবহার করা যাবে না মোটেও তা নয়। তবে এক্ষেত্রে ক্রিম স্কিনের সাথে দ্রুত মেল্ট হয়ে যায়। সেই সাথে পাওয়া যায় ন্যাচারাল লুকিং গ্লো। ক্রিমি ফর্মুলা ডিউয়ি লুক ক্রিয়েট করতে হেল্প করে।
৬) মিনিমাল আই মেকআপ
ফাউন্ডেশন যেহেতু অ্যাপ্লাই করা হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে আই লিড মিনিমাল বা বেয়ার রাখাই ভালো। সিম্পলি আই লিডে আই লাইনার অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এক্ষেত্রে ওয়াটারপ্রুফ ও স্ম্যাজপ্রুফ আইলাইনার চুজ করুন। অবশ্য আপনি চাইলে ক্রিম আইশ্যাডো অ্যাপ্লাই করতে পারেন। আই ইনার কর্ণারে লাইট শেইডের শিমারি অ্যাইশ্যাডো দিলেও আইলুকটা এনহ্যান্স করবে। মাশকারা দিয়ে ল্যাশ কোট করে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ, আই মেকআপের শুরুতে আইব্রো শেইপ ডিফাইন করে নিতে ভুলবেন না যেন!
৭) লিপস্টিক অ্যাপ্লাই
মেকআপের শুরুতেই লিপ বাম দিয়ে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ করে নিন। এবার সবশেষে অ্যাপ্লাই করে নিন লিপস্টিক। যেহেতু ফাউন্ডেশন ছাড়া মেকআপ এবং আই লুকটাও মিনিমাল রাখা হয়েছে, সেক্ষেত্রে এমন লিপস্টিক চুজ করতে হবে সেটি আপনার ন্যাচারাল স্কিনটোনকে কমপ্লিমেন্ট করবে। টিনেজে আপনি লিপস্টিক শেইড নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতেই পারেন। তবে আপনি যদি মিডল এইজের হন, সেক্ষেত্রে ন্যুড, পিচি বা পিংকিশ টোনের লিপস্টিক চুজ করতে পারেন। লিপস্টিক শেইড চুজ করার সময় বয়স, আউটফিট ও অকেশন খেয়াল রাখা জরুরি।
আরও একটি বিষয়, যে লিপস্টিকটাই চুজ করেন না কেন খেয়াল রাখবেন সেটি যেন লং লাস্টিং হয়। লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করার পর যেন স্ম্যাজ না হয় সেজন্য একটা ছোট্ট টিপস বলে দেই। লিপস্টিক দেয়া শেষে একটি টিস্যু পেপার নিয়ে আপার ও লোয়ার লিপসের মাঝে চাপ দিয়ে ধরুন। এতে এক্সেস লিপস্টিকটুকু উঠে আসবে। তাই লিপস্টিক সহজে স্ম্যাজ হবে না, আবার দাঁতেও লেগে যাবে না।
দেখলেন তো, নো ফাউন্ডেশন মেকআপ লুক ক্রিয়েট করা একদম কঠিন কিছু নয়। যারা এতদিন ভাবতেন ফাউন্ডেশন ছাড়া ফ্ললেস লুক পাওয়া পসিবল না, তাদের কনফিউশন নিশ্চয়ই আজ ক্লিয়ার হয়েছে। অথেনটিক মেকআপ, স্কিন ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।
ছবিঃ সাজগোজ