একনে সবচেয়ে কমন স্কিন কনসার্ন, তাই না? সিস্টিক একনে ও হরমোনাল একনে, পরিচিত দু’টি স্কিন প্রবলেম। অনেকেই টিনেজ থেকে ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকে। একনের সমস্যা দেখা দেয় চিক এরিয়াতে, কপালে, পিঠে, বুকে ও শরীরের অন্যান্য অংশে। একনের বিভিন্ন প্রকারভেদ দেখা যায়, তার মধ্যে সিস্টিক একনে ও হরমোনাল একনেও রয়েছে। এই দু’ধরনের একনের মধ্যে মূল পার্থক্য আসলে কী, কীভাবে চিনবেন; চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক।
সিস্টিক( Cystic) একনে কী?
এটি হলো এক ধরনের একনে যা মূলত হয়ে থাকে Dietary sensitiveness ও এক্সেস সেবাম প্রোডাকশনের জন্য। এটি এক ধরনের ইনফ্ল্যামেটরি একনে। সেবাম, ডেড স্কিন সেলস, ইমপিওরিটিস পোরস ক্লগডের মাধ্যমে এই ধরনের একনে ফর্ম করে। সিস্টিক একনের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- রেড বাম্পস, পুঁজ জমে থাকা, পেইনফুল একনে ইত্যাদি। ফেইসের পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন স্থানে যেমন গলায়, ঘাড়ে, বুকে, পিঠে দেখা যায় বেশি। বুঝতেই পারছেন, এটি বেশ সিভিয়ার টাইপের একনে।
হরমোনাল (Hormonal) একনে কী?
হরমোনাল একনে মূলত একনের একটি টাইপ যা হরমোনাল চেঞ্জ, এজিং, প্রেগনেন্সি অথবা স্ট্রেসের কারণে দেখা দেয়। হরমোনাল একনে ‘অ্যাডাল্ট একনে’ নামেও পরিচিত। যাদের বয়স ২০-৫০ এর মধ্যে, তাদের ক্ষেত্রে অ্যাডাল্ট একনে দেখা যায়। এটি বাম্পস, পিম্পলস, হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস, সিস্ট ফর্মে দেখা দেয় শরীরের বিভিন্ন অংশে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হরমোনাল চেঞ্জের জন্য ত্বকে সেবাম প্রোডাকশনও বেড়ে যায়। এই সেবাম পোরস থেকে রিলিজ হয় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে একনের সৃষ্টি করে যা হরমোনাল একনে নামে পরিচিত। স্ট্রেস, ঘুমের ঘাটতি, কমেডোজেনিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা- এসব কারণেও একনে হতে পারে।
সিস্টিক ও হরমোনাল একনের মধ্যে মিল
দু’টোই একনের প্রকারভেদ। এ দু’ধরনের একনে ফেইস ছাড়াও গলা, কাঁধ, চেস্ট এরিয়াতে হতে দেখা যায়। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ইনফ্ল্যামেশন হতে পারে। এই দু’টি স্কিন কনসার্নের ক্ষেত্রে ফ্যামিলি হিস্ট্রি বা জেনেটিক্যাল প্রভাবও দায়ী হতে পারে। দু’ধরনের একনের মেডিকেটেড ট্রিটমেন্ট হিসেবে অ্যান্টিবায়োটিক অথবা স্টেরয়েড জাতীয় মেডিসিন প্রেসক্রাইব করা হয়।
এবার আসুন জেনে নেই ডিফারেন্সগুলো
১. সিস্টিক একনে হওয়ার জন্য দায়ী খাদ্যাভ্যাস, সেবামের অতিরিক্ত উৎপাদন, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। অপরদিকে হরমোনাল চেঞ্জ, স্ট্রেস, প্রেগনেন্সি, মেন্সট্রুয়াল সাইকেল- এগুলো হরমোনাল একনের জন্য দায়ী।
২. সিস্টিক একনে পেইনফুল। সিস্টিক একনে বেশ তীব্র বা সিভিয়ার হয়ে থাকে হরমোনাল একনের তুলনায়।
৩. সাধারণত সিস্টিক একনে টি-জোন, জ-লাইন, চেস্ট ও ব্যাক সাইডে বেশি দেখা যায়। অপরদিকে হরমোনাল একনে এর কমন এফেক্টেড অংশগুলো হলো চিন, ফেইসের লোয়ার পোরশন আর যে এরিয়াতে সেবাম প্রোডাকশন বেশি হয় সেখানে।
৪. অ্যাডাল্ট একনে Pustules, Papules, Cysts, হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস বিভিন্ন ফর্মে দেখা দেয়। সিস্টিক একনে সাইজে বেশ বড় ও লালচে হয়ে থাকে।
কীভাবে সল্যুশন পাবেন?
ফুড হ্যাবিট ও লাইফস্টাইলে পজেটিভ চেঞ্জ আনতে হবে প্রথমেই। প্রোপারলি বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেনটেইন করতে হবে। স্কিনকেয়ার রুটিনে এমন প্রোডাক্ট ইনক্লুড করুন যেগুলো পোরস ক্লগড করবে না, স্কিনকে গ্রিজি করবে না। অয়েল কন্ট্রোলের জন্য ও একনে প্রিভেন্টে উইকলি ২/৩ বার স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত ক্লেনজার ব্যবহার করা যেতে পারে। সঠিক নিয়মে ডাবল ক্লেনজিং করতে হবে। উইকলি স্কিনকেয়ারে ক্লে বেইজড মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন, এতে এক্সেস সেবাম প্রোডাকশন অনেকটাই কন্ট্রোলে থাকবে। নরমালি হরমোনাল একনে কিছুদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। মডারেট টু সিভিয়ার ইনফ্ল্যামেটরি একনের ক্ষেত্রে ডার্মাটলিস্টের পরামর্শে Antibiotic, benzoyl peroxide বা isotretinoin (retinoid) ব্যবহার করা যেতে পারে।
কী কী করা যাবে না?
একনে টাইপ যা-ই হোক না কেন, একনে পপ করা থেকে বিরত থাকুন। ডায়েটে যদি অতিরিক্ত সুগার, কার্ব থাকে; তাহলে কমিয়ে আনুন। অয়েলি ফুড যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। স্ট্রেস থেকেও যেহেতু একনে ট্রিগার হয়, তাই এই ব্যাপারটিও লক্ষ্য রাখুন।
যারা একনে প্রবলেমে ভুগছেন, কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না একনের টাইপ কী, কীভাবে ট্রিটমেন্ট করতে হবে; তারা আশা করি কিছুটা হলেও গাইডলাইন পেয়েছেন। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাটারস্টক