মি টাইম বা কিছুটা সময় কাটুক শুধু নিজের সাথেই!

মি টাইম বা কিছুটা সময় কাটুক শুধু নিজের সাথেই!

IMG_8414

কর্মব্যস্ত এই জীবনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যেনো বিরামহীন ছুটে চলা। মাঝেমধ্যে মনে হয় এক মুহূর্ত  যেনো শান্তি নেই, কিছুটা নিস্তার নেই। যে কোনো কাজ, পরামর্শ, আশেপাশের মানুষদের দেখভাল, তাদের সময় দেয়া থেকে শুরু করে বাসার সব কিছুতেই যেনো আপনাকে চাই সবার! এক মিনিটও নিজের জন্য ব্যয় করার সময় নেই অথচ আপনি দিনকে দিন ক্লান্ত বোধ করছেন, চাচ্ছেন নিজের জন্য কিছুটা হলেও যদি সময় পেতেন তাহলে কতই না ভালো হত। আজকের আর্টিকেলে আপনার মত ব্যস্ত মানুষের জন্যে কিছু পরামর্শ থাকবে। এগুলো ফলো করে শত ব্যস্ততার মধ্যে কীভাবে মি টাইম বা কিছুটা সময় কাটাবেন সেটা চলুন জেনে নেয়া যাক।

মি টাইম এর জন্য যে জিনিসগুলো করতে পারেন

স্ট্রেস কমিয়ে আনুন

আপনি যদি নিজের জন্য মি টাইম না বের করে নেন তাহলে একটা সময় আপনি জীবন নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পরবেন। আপনার প্রেশার, স্ট্রেস আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে। ক্রমাগত চাপের মধ্যে থাকা আপনার চাপের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে এবং শেষ পর্যন্ত আপনি হতাশ হয়ে উঠবেন। জীবনে একটু শান্তি পেতে, আপনার কর্মক্ষমতার ব্যাটারিকে আরেকটু রিচার্জ করতে এবং আপনার স্ট্রেস লেভেল কমাতে নিজের জন্য কিছুটা হলেও সময় বের করুন।

ব্রেইন কে রেস্ট দিন ও প্রোডাক্টিভ চিন্তাভাবনা করুন

প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত ক্রমাগত কাজ করে যাওয়া মোটেও হেলদি নয়। মানুষের মস্তিষ্ক এত চাপ নেয়ার জন্য নির্মিত হয়নি। আপনি যদি প্রোডাক্টিভ থাকতে চান তবে আপনাকে নিয়মিত কাজ থেকে বিরতি নিতে হবে। সেই বিরতিতে উপভোগ্য কিছু করা আপনাকে পুনরায় সতেজ করে তুলবে এবং আপনাকে নিজের ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে হেল্প করবে।

মি টাইম ইনজয় করুন

কাজে পূর্ণ মনোযোগ দিন

আপনার যদি কোন কাজ করার সময় বা কোন প্রব্লেমে পরলে সেটি সলভ করার ইচ্ছে না থাকা সত্বেও নিজেকে প্রেশার দিয়ে কাজটি করেন তাহলে বুঝে নিতে হবে কাজে আপনি ভালোভাবে ফোকাস করতে পারছেন না। আপনার উচিত এই সময় বিরতি নেয়া। আপনি উপভোগ করেন এমন কোন কাজ করার চেষ্টা করুন, এতে আপনার কাজ করতেও ভালো লাগবে, আপনার মন কে শান্ত করতে সাহায্য করবে এবং আপনার ব্রেইনকে এত চাপের মধ্যে ফেলবে না। ভালোলাগা নিয়ে কাজ করলে অটোমেটিক অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।

নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে ভাবুন

নিরন্তর ছুটে চলার এই জীবনে আমাদের মাঝেমধ্যে নিজেকে নিয়ে একটু ভাবা উচিত। নিজেকে কিছুটা হলেও সময় দিতে হবে এবং প্রতিবার নিজেদের মূল্যায়ন করার জন্য সময় নিতে হবে। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কি? আমাদের মূল্য কি? আমাদের লক্ষ্য কি? কখনো কখনো আমরা প্রতিদিনের কাজে এতটাই আটকে যাই যে আমরা কী চাই এবং আমরা যে আসলে কে সেটাই ভুলে যাই। আমরা যদি আমাদের ফিউচার প্লানের সাথে বর্তমান লাইফ কে সেট করতে না পারি তাহলে সবই এলোমেলো হয়ে যেতে পারে।

রিলেশনশিপকে প্রাধান্য দিন

নিজেকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মানে হলো যে আপনি নিজের চাহিদাকে সম্মান করেন। আপনি যদি নিজেকে সম্মান না করেন তবে অন্যরা এর সুবিধা নিতে শুরু করতে পারে। নিজেকে মূল্য দিন এবং অন্যরা আপনাকে মূল্য দেবে। রিলেশনশিপ এর প্রায়োরিটি অবশ্যই দেবেন তবে নিজেকে আগে ভালোবাসতে শিখতে হবে। মি টাইম আপনাকে উজ্জীবিত করবে এবং আপনার ভালোবাসার ব্যক্তিদের প্রতি আপনাকে আরো যত্নশীল করে তুলতে হেল্প করবে। এতে করে আপনি আরো হেলদি ও হ্যাপি ফিল করবেন।

কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন

কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবন গুলিয়ে ফেলবেন না। অধিক প্রয়োজনীয় কাজগুলো আগে করুন, সেটা ব্যক্তিগত হলেও এটাকেই বেশি প্রাধান্য দিন। গুরুত্ব অনুধাবন করে কাজ করলে এটি একটি ভাল কর্ম-জীবনের ভারসাম্য তৈরি করা সহজ করে তোলে। “না” বলতে শিখুন এবং প্রতিটি কাজ, সমস্যা যা ই হোক না কেন ব্যালেন্স বজায় রাখুন। কাজে ডুবে থেকে নিজের জীবন থেকে হারিয়ে যাবেন না।

নিজের ভালো লাগার কাজকে প্রাধান্য দিন

নিজের ভালো লাগাকে গুরুত্ব দিন

আমাদের যে কাজগুলো করতে ভালো লাগে বা আমরা যা উপভোগ করি তা করা আমাদের আরও হ্যাপি করে তোলে। এভাবে কাজ করলে মনটাও প্রফুল্ল থাকে। এই প্রফুল্ল মন আমাদের আরও ইতিবাচক, সুস্থ ও পারফেক্ট করে তোলে। মজা করতে, নিজেকে কিছুটা শিথিল ও শান্ত করতে বা আমাদের নিজেদের জন্য কিছু করার সময় নেওয়া আমাদের সুস্থতা ও স্ব-মূল্যবোধকে উন্নত করে।

কীভাবে আরো মি টাইম বের করতে পারেন?

এর মানে কিন্তু একা একা কিছু করা নয়, এর মানে হল এমন কিছু করা যা আপনি উপভোগ করেন। এটি হতে পারে আপনার বাচ্চার সাথে একটি বই পড়া, বন্ধুদের সাথে বেড়াতে যাওয়া বা আপনার সঙ্গীর সাথে একটি মুভি দেখতে যাওয়া।

কর্মব্যস্ততা থেকে নিজেকে রেস্ট দেওয়ার জন্য আপনি যা যা করতে পারেন :

  • পার্কে যান বা বিকেলে ছাদে হাঁটুন।
  • ভালোলাগার গান শুনুন
  • বই বা ম্যাগাজিন পড়ুন
  • ফিল্ম বা ফেভারিট টিভি শো দেখুন
  • আরামদায়ক বাথ নিন
  • সৃজনশীল কিছু করুন (লিখুন, আঁকুন, রান্না করুন, সেলাই করুন)
  • যোগব্যায়াম করুন
  • শোবার আগে পাঁচ মিনিট ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করুন
  • সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠুন
  • বাগানে বসে এক কাপ চা/ কফি পান করুন
  • ব্যায়াম করুন
  • নিজেকে সাহস দিন

বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পারেন

নিজেকে একটু স্বস্তি দিতে মি টাইম খুবই প্রয়োজনীয়। কাজের চাপে সময় নাই, এই ভেবে যদি দিনযাপন করতে থাকেন তাহলে একটা সময় খুবই ক্লান্ত হয়ে পরবেন। তখন হয়তো নিজেকেও আর ভালো লাগবে না। তাই নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের জন্য মি টাইম বের করুন। তেমন কোন উপায় না পেলে উপরিউক্ত পরামর্শ গুলো কাজে লাগাতে পারেন।

ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক।
মডেলের ফ্রেম- Luxotix

9 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort