ত্বকের যত্নে আমরা কত কিছুই না করে থাকি! কিন্তু এই যত্নটা বেশিরভাগ সময় ফেইসের স্কিনে সীমাবদ্ধ থাকে। হাত-পায়ের ত্বকের যত্ন নিতেই আমাদের যত অবহেলা! কিন্তু সানট্যানের কারণে হাত ও পায়ের স্কিন যখন ডার্ক হয়ে যায়, তখন তো একটু মন খারাপ হয়ই! অনেকেই বিশেষ কোনো দিন বা অকেশনের আগে বিউটি সেল্যুনে যেয়ে মেনিকিওর ও পেডিকিওর করে থাকেন। পার্লারের মতো ব্রাইটেনিং মেনিকিওর ও পেডিকিওর যদি ঘরে বসেই করা যায়, তাহলে কেমন হয়? চলুন জেনে নেই আজ।
মেনিকিওর ও পেডিকিওর এর বেনিফিট কী?
মাসে দু’বার আপনি নিজে মেনিকিওর ও পেডিকিওর করে নিতে পারেন। এর বেনিফিটস কী কী, চলুন দেখে নেই-
- ডেড সেলস, ইমপিওরিটিস রিমুভ করতে বেশ হেল্পফুল
- ব্লাড সার্কুলেশন ইম্প্রুভ করে
- হাতে রিংকেলস বা এজিং সাইনস প্রিভেন্ট করে
- নেইলস হেলথ ভালো রাখে
- সানট্যান কমিয়ে আনে
এখন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, মেনিকিওর ও পেডিকিওর করার সিম্পল স্টেপগুলো।
পার্লারের মতো ব্রাইটেনিং মেনিকিওর কীভাবে করবেন?
১) প্রথমে নেইল পলিশ রিমুভ করে ফেলুন। নেইল কাটার দিয়ে সুন্দরভাবে নেইল ট্রিম করুন। নখের চারপাশের কোণে কোথাও কোনো অংশ বের হয়ে থাকলে সেটাও ট্রিম করে ফেলতে হবে সাবধানে।
২) একটি বড় বোলে কুসুম গরম পানিতে শাওয়ার জেল বা শ্যাম্পু মিক্স করুন।
৩) এবার এই মিশ্রণে হাত ডুবিয়ে রাখুন। ৫ থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত রাখতে পারেন।
৪) এরপর বডি স্ক্রাব বা যেকোনো মাইল্ড স্ক্রাব দিয়ে নেইলস এরিয়া ও হাত এক্সফোলিয়েট করুন।
৫) এবার নখের হলুদ দাগ দূর করার জন্য লেবুর স্লাইস দিয়ে রাব করুন।
৬) এখন ব্রাইটেনিং বডি প্যাক অ্যাপ্লাইয়ের পালা। কাঁচা হলুদ বাটা, টকদই, মধু ভালোভাবে মিক্স করে হাতে অ্যাপ্লাই করে নিন। ১৫ মিনিট রেখে ওয়াশ করে ফেলুন। চাইলে রেডিমেড উপটানও ইউজ করতে পারেন।
৭) শেষ ধাপে, আপনি হাতে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল কিংবা জোজোবা অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। তেল ব্যবহার করতে না চাইলে যেকোনো হ্যান্ড ক্রিম অথবা বডি লোশন ব্যবহার করতে পারেন। অয়েল বা ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাইয়ের পর ১ মিনিট ম্যাসাজ করুন। লাস্টে আপনার পছন্দের নেইল পলিশ অ্যাপ্লাই করে নিন। ব্যস, মেনিকিওর কমপ্লিট!
পেডিকিওর কীভাবে করবেন?
পেডিকিওর এ যে প্রসেস ফলো করা হয় তাতে পায়ের ত্বক শুধু পরিষ্কারই হয় না, পায়ের উপর যে ধকল যায়, সেটাও দূর হয়। সেই সাথে স্কিনের ব্রাইটনেস ফিরে আসে। পেডিকিওর করার ক্ষেত্রে মেনিকিওর করার সব নিয়ম মেনে চলুন।
১) প্রথমে নেইল পলিশ ভালোভাবে রিমুভ করে ফেলুন। এরপর মেনিকিওরের প্রসেসের মতোই নেইলস ও কিউটিকল ট্রিম করুন।
২) এবার একটি বড় সাইজের বোল নিন, যাতে আপনার দুই পা ভালোভাবে ডুবিয়ে রাখার মতো পর্যাপ্ত পানি নেওয়া যায়। কুসুম গরম পানিতে মিক্স করুন পরিমাণমতো শাওয়ার জেল। চাইলে কয়েকটি লেমন স্লাইস, রোজ পেটাল পানিতে দিতে পারেন।
৩) পা ডুবিয়ে বসে থাকুন কিছুক্ষণ। এই সময় আপনি ম্যাগাজিন, বই পড়তে পারেন কিংবা গান শুনতে পারেন। এই ধাপটি বেশ রিল্যাক্সিং!
৪) তারপর পা ভালোভাবে মুছে নিয়ে কিউটিকল অয়েল/ক্রিম/ ভ্যাসলিন অ্যাপ্লাই করে নিন, ৫ মিনিট রাখুন। এরপর ভালোভাবে মুছে নিয়ে কিউটিকল পুশার স্টিক দিয়ে নেইলস এর কর্নারগুলো ভালোভাবে ক্লিন করুন।
৫) পিউমিস স্টোন বা ঝামা পাথর দিয়ে গোড়ালির শক্ত স্কিন হালকাভাবে রাব করুন। এবার স্ক্রাবিং এর পালা। পা, পায়ের পাতা ভালোভাবে স্ক্রাবিং করে নিন। স্ক্রাবিং এর পর প্যাক অ্যাপ্লাই করতে হবে।
ব্রাইটেনিং প্যাক কীভাবে তৈরি করবেন?
২ টেবিল চামচ লিকোরিস পাউডার, গোলাপ জল ও টকদই একসাথে ভালোভাবে মিক্স করে প্যাক তৈরি করে নিন। সানট্যান রিমুভ করতে এই প্যাকটি দারুণ কার্যকরী।
কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো ও কাঁচা দুধ একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন। এই প্যাকটিও ত্বকের কালচেভাব দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। ১৫ মিনিট রেখে ভালোভাবে পা ওয়াশ করে নিন। এবার বডি লোশন অ্যাপ্লাই করে নিন। ব্যস, পেডিকিওর ডান!
পার্লারের মতো ব্রাইটেনিং মেনিকিওর ও পেডিকিওর কীভাবে করা যায়, সেটা জানা হয়ে গেলো। ভালো পার্লারগুলোতে এই সার্ভিস বেশ ব্যয়সাপেক্ষ, আর নিম্ন মানের পার্লারে ভুলভাল ট্রিটমেন্ট নেওয়ার চেয়ে না নেওয়াটাই বেটার। কারণ সেখানে প্রোপারলি হাইজিন মেনটেইন করা হয় কিনা আর ভালো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট ইউজ করা হয় কিনা, সেগুলো নিয়ে মনে দ্বিধা থাকে। তাই নিজেই করে নিন ঘরে বসে! আর সুন্দর হাত-পা আপনার কনফিডেন্স লেভেলও কিন্তু বাড়িয়ে দেয়। আজ এই পর্যন্তই।
অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ