একবিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষ যেন ঘর আর কর্মক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। আর ছুটির দিনগুলো কেউ কেউ ব্যাগপ্যাক নিয়ে বের হয়ে পড়লেও দেখা যায় বাসাতেই একটু মি টাইম বা ফ্যামিলি টাইম কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বেশিরভাগ মানুষ৷ সেক্ষেত্রে আপনার বাসা যদি হয় গোছানো, ছিমছাম আর একদম মনের মতো, তাহলে তো কথা-ই নেই৷ ঘর সাজাতে বাহারি ডেকোর আইটেমের চাহিদা বাড়ছে! এখন তো ঘর সাজানোর বিভিন্ন ডেকোর আইটেম অনলাইন-অফলাইনে পাওয়া যায়।
বিভিন্ন ফেলনা জিনিস দিয়ে ডেকোর আইটেমগুলো বানাতে পারেন খুব সহজেই। এতে মন ভালো থাকবে, সৃজনশীলতার চর্চা-টাও থাকবে। ধরুন ড্রয়িং রুমের এক সাইডের দেয়াল বা ঘরে ঢুকতেই দরজার পাশের দেয়ালটা ফাঁকা বা বারান্দাটা কেমন খালি খালি! এ জায়গাগুলোতে যদি হ্যান্ডমেড ক্র্যাফট বানিয়ে রেখে দেন, তাহলে দেখবেন ঘরের লুকটাই বদলে গেছে! সুলভ উপকরণ দিয়ে সহজেই বানিয়ে নেওয়া যায়, এমন দারুণ একটি ডেকোর আইটেম সম্পর্কে আইডিয়া দিবো আজ, তা হলো বার্ড নেস্ট বা পাখির বাসা। আর বাসায় যদি বাচ্চা থাকে, তারাও উৎসাহিত হবে নতুন জিনিস বানাতে। এটি টয় হিসেবেও বানিয়ে গিফট করতে পারেন বাচ্চাকে। চলুন দেখে নেওয়া যাক।
যা যা লাগবে
- কার্ডবোর্ড বা পুরানো বক্স
- ছোট চুড়ি, কাটার, ছোট কাঠি
- কাঁচি, স্কেল, পেন
- গ্লু, স্কচটেপ
- রং এবং সাজানোর জন্য পুঁতি, স্টোন বা আইসক্রিম স্টিক
ঘর সাজাতে বাহারি বার্ড নেস্ট যেভাবে বানাবেন
১) একটি লম্বা কার্ডবোর্ড স্কেল ও পেনের সাহায্যে চারটি ভাজ দিবেন এমনভাবে যেন চার সাইডই সমান হয়। চার সাইডের মাঝে দুই সাইডের উপরে ত্রিভুজ শেইপে দাগ দিয়ে কেটে নিন। এই উপরের দুই সাইড পরবর্তীতে উপরে যখন ছাদ দিবেন তার সাথে অ্যাট্যাচ করতে সুবিধা হবে।
২) যেকোনো এক সাইডে মাঝ বরাবর থেকে একটু উপরে চুড়ি বসিয়ে গোল দাগ দিয়ে সেটা কাটারের সাহায্যে কেটে নিন। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার সময় এটি সামনে থাকে যেন তাহলে মনে হবে পাখি ঢোকার পথ এটি। এখন মাঝ বরাবর ছোট কাঠি কালার করে অ্যাটাচ করে নিন। এটা অপশোনাল।
৩) এখন যে সাইড বাইরে থাকবে তাতে কালার করে নিন। চারপাশে আইসক্রিম স্টিক বা পুঁতি দিয়ে দিয়ে বর্ডার করে নিন। ডেকোরেশন আপনার পছন্দ বা প্রিফারেন্স অনুযায়ী করে নিন।
৪) গ্লু এর সাহায্য চার সাইড জোড়া দিয়ে শুকাতে দিন। এরপর উপরের যে খালি জায়গা আছে তার জন্য পরিমাপ করে কার্ডবোর্ড এমনভাবে কাটুন যাতে উপরের ত্রিভুজ শেইপে যে কাটা ছিল সাথে বরাবর লাগানো যায়। বা একটু বড় করেও বোর্ড দুই ভাজ করে নিয়ে লাগাতে পারেন। এতে ছাদ একটু বড় হবে, মনমতো ডিজাইন করতে পারেন।
আর কীভাবে বানানো যায়?
কার্ডবোর্ড না থাকলে শক্ত কালারফুল পেপারও ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা আইসক্রিম স্টিক একটার সাথে জোড়া লাগিয়ে ফ্রেমিং করে নিয়েও সহজে বানানো যায় বার্ড হাউজ। গ্লু দিয়ে জোড়া দিয়ে নিলেই হয়, এই ছবিটি দেখলেই বুঝতে পারবেন। সাথে প্লাস্টিকের যে ছোট ছোট পাতা বা ফুল কিংবা ছোট একটি কাগজের পাখিও লাগিয়ে নিতে পারেন। আর এগুলো না থাকলে বাসায় তো কালারফুল লেস থাকেই, সেটি দিয়ে সুন্দর করে বর্ডার বানিয়ে নিন। এখন এটি আপনার পছন্দের জায়গায় হুক বা সুতা কিংবা দড়ির সাহায্য গ্লু দিয়ে আটকে নিন।
হয়ে গেলো ঘর সাজাতে বাহারি পাখির বাসা। এরকম ছোট ছোট পাখির বাসা বানিয়ে যদি বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখেন, সাথে যদি মরিচ বাতি বা স্ট্রিং লাইট অ্যাড করে দেন, দেখবেন বাসা বা বারান্দার সৌন্দর্য কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। এখন আমাদের কাছে পার্সেল বক্স প্রচুর। কিছু অর্ডার করলে সুন্দর সুন্দর বক্স পেয়ে যাচ্ছি। এগুলা ফেলে না দিয়ে বরং সুন্দর এই ডেকোর আইটেমটি বানাতে পারেন। সময় কাটানোর এই দারুণ উপায়টি কার কার ভালো লাগলো কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
ছবি- সাটারস্টক, heartfilledspaces
লেখা- রুজাইয়াত তানজিল