আমাদের দেশে বছরের এই সময়টাতে আবহাওয়াতে রোদ-বৃষ্টি দু’টোরই সরব উপস্থিতি থাকে। দেখা যায়, এই রোদ তো আবার এই বৃষ্টি। এই ধরনের আবহাওয়াতে ত্বকেও দেখা দিতে পারে নানা ধরনের কনসার্ন। ডিহাইড্রেশন, একনে কিংবা ছোট ছোট বাম্পস- আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে এই সমস্যাগুলো অনেক বেশি হয়ে থাকে। চলুন আজকের ফিচারে জেনে নেওয়া যাক যেকোনো আবহাওয়ায় ত্বক সুন্দর রাখার পাঁচটি টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত।
পানি-ই জীবন
হিটওয়েভ মানেই প্রচন্ড ঘাম হওয়া, আর ঘামের সাথে বেরিয়ে যায় শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক নিউট্রিয়েন্টস। এই নিউট্রিয়েন্টস যে শুধু আমাদের কিডনি বা হার্টের জন্য প্রয়োজনীয় তা নয়, বরং স্কিনের জন্যও প্রয়োজনীয়। তাই এই নিউট্রিয়েন্ট না পেলে স্কিন তার সহজাত পুষ্টতা তো হারাবেই! পানি পান করার বিষয়টি আমরা অনেকেই সেভাবে গুরুত্ব দেই না, তবে ত্বক সুন্দর রাখতে চাইলে চাইলে এইটুকু তো নিজেদের জন্য করতেই হবে! দিনে অন্তত দেড়-দুই লিটার পানি শরীরের স্বাভাবিক ফাংশন যেমন ঠিক রাখে, একইভাবে স্কিনকেও রাখে লাবণ্যদীপ্ত! এর পাশাপাশি বাইরের তাপমাত্রার কারণে ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া রোধ করতে ব্যবহার করতে পারেন হায়ালু্রোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার। এতে করে ত্বক ভেতর ও বাহির দুই দিক থেকেই থাকবে সুরক্ষিত!
নিয়ম মাফিক সানস্ক্রিন
সানস্ক্রিন এই গরমে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি আর আমাদের ত্বকের মধ্যে রক্ষাকবচ! তাই নিয়ম করে বের হওয়ার ১৫ মিনিট আগে দুই আংগুলের সমান পরিমাণ সানস্ক্রিন নিয়ে ত্বকে অ্যাপ্লাই করে এরপর রোদের সাথে লড়াইটা শুরু করুন! একটু খুঁজে ত্বকের সাথে মানানসই, হোয়াইট কাস্ট দেয় না, তেলতেলে নয় এমন সানস্ক্রিন খুঁজে নিন এবং সারাদিন এরপর নিশ্চিন্ত থাকুন। সানস্ক্রিনের এসপিএফ যেন ৫০ বা তার উপরে হয় তা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, এবং ২ ঘন্টা পর পর রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে। ত্বককে শুধু রোদের পোড়া ভাব থেকে কমাতেই নয়, বরং অকালে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করতেও অনেক বেশি কার্যকরী প্রোডাক্ট এই সানস্ক্রিন!
ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকুন
যখন সূর্য একেবারে মাথার উপরে থাকে, বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে ৩টার মধ্যে, চেষ্টা করুন যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে। এতে করে আপনার ত্বক সরাসরি সূর্যরশ্মি থেকে যেমন বাঁচবে, একইসাথে স্বস্তিতেও থাকবেন। যদি এই সময় একান্তই বাইরে যেতে হয়, তাহলে ছাতা বা লম্বা হাতাযুক্ত জামাকাপড় ব্যবহার করুন। এতে করে ত্বক যথাসম্ভব আবৃত ও সুরক্ষিত থাকবে ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে।
নাইট রিপেয়ারিং
সপ্তাহে ১-২ বার ত্বক এক্সফোলিয়েট করা ভালো একটি উপায় হতে পারে ত্বকের উপরের ডেড সেলের লেয়ারকে তুলে ফেলতে। আমরা সবাই জানি রাতের বেলায় স্কিন সেল নিজেকে রিজেনারেশন করে অর্থাৎ সারাদিন যে ঝড় ঝাপ্টা স্কিনের উপর দিয়ে গিয়েছে সেটাকে ফাইট করার জন্য নিজের শিল্ড তৈরি করে। সেখানে সবচেয়ে ভালো হবে যদি আমরা এই গরমে নাইট স্কিন কেয়ারে একটু সতর্ক হই! ত্বক ভালোভাবে ক্লিন করে নিয়ে ত্বকের কনসার্ন অনুযায়ী সিরাম লাগিয়ে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে রাতে ঘুমোতে গেলে সকালে সফট অ্যান্ড ব্রাইট স্কিন পাওয়া আসলেই দুষ্কর নয়!
ভিটামিন সি
গরম বা বৃষ্টি যাই হোক, কাজ তো আর থেমে থাকে না। যতই আমরা চাই স্কিন সুন্দর থাকুক, উজ্জ্বল থাকুক; প্রতিদিন রাস্তায় বেরোলে স্কিনকে লড়াই করতে হয় ধুলাবালি, ময়লা, দূষক পদার্থ এসবের সাথে, যার ফলে স্কিন দিনে দিনে হয়ে যায় নিষ্প্রাণ ও নির্জীব। তাই ত্বক সুন্দর রাখার সবচেয়ে ভালো সমাধান হলো স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন-সি যুক্ত করা। ত্বকের জন্য ক্ষতিকর উপাদানগুলোর বিরুদ্ধে প্রোটেকশন দেয় এই ভিটামিন-সি। এছাড়াও এটি কোলাজেন তৈরি করে, যার ফলে নতুন কোষ তৈরি হয় এবং স্কিনের তারুণ্যদীপ্ততা বজায় থাকে। ভিটামিন- সি দিনের বেলায় ব্যবহার করলে বেশি বেনিফিট পাওয়া যায়। তাই দিনের বেলা স্কিনকেয়ারেই এটি অ্যাড করতে পারেন।
সারকথা
প্রকৃতির নিয়মের উপর আমাদের হাত নেই ঠিকই, কিন্তু নিজেদের অভ্যেস, জীবনযাপন এসব আমরা চাইলেই পরিবর্তন করতে পারি এবং ত্বক সুন্দর রাখতে পারি। একটু সতর্কতাই এই আবহাওয়ায় মধ্যে আপনার ত্বককে রাখতে পারে সুরক্ষিত। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
ছবিঃ সাজগোজ