এলোমেলোতেই সুন্দর থাকা যায়, এই ধারনায় বিশ্বাস রাখা মেয়ে এই সময়ে অনেক আছেন। খুব নিপুণ ভাবে সাজপোশাক ঠিক করা, নিজেকে গুছিয়ে রাখা, সবকিছুতে পারিপাট্য খোঁজা সবার সবসময় পছন্দ নাও হতে পারে। আর যাদের সবসময় এমন পারিপাট্য ভালো লাগে না তারা অনায়াসে অগোছালো বা মেসি লুক বেছে নেন নিজেদের জন্য। অনেকেই আছেন সহজাতভাবে নিজের প্রতি উদাসীন, তাদের অগোছালো ভাবটা অন্য রকমের। কিন্তু যাকে ফ্যাশন দুনিয়ায় মেসি লুক বলা হচ্ছে সেটা অযত্ন বা অবহেলা থেকে নয়, বরং বেশ যত্ন নিয়েই নিজেকে অগোছালো সাজে সাজানোর এক মজার ট্রেন্ড!
এলোমেলো সাজের এই ধারা চুলের ক্ষেত্রেই বেশি অনুসরণ করা হয়। মেসি হেয়ার স্টাইলে প্রায়দিনই স্বস্তি পেতে পারেন আপনি। খোলা চুল হোক বা খোঁপা, অথবা আদুরে একটা বিনুনী, সবকিছুই এই এলোমেলোর মোহে আটকে গেছে। খুব বেশি গোছালো হবার রোগ যদি না থাকে তবে যেকোন দিনই মেসি হেয়ার স্টাইলের জন্য উপযোগী দিন হতে পারে।
মজাদার এই কেশবিন্যাসে বেশিরভাগ সময়ই কিন্তু চিরুনির ব্যবহার চলবে না। শুরুতেই মাথায় রাখতে হবে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি। অন্য যতোই সরঞ্জাম ব্যবহার করুন না কেনো, চুলে চিরুনি লাগানো মানা। আরে বাবা চিরুনি আপনার চুলকে সেই তো আবার পরিপাটি করে দেবেই, তবে এলোমেলো হবেটা কী করে? তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিরুনির প্রয়োগ লাগে বটে। কোন ধরনের সাজে চুল বাঁধতে চাইছেন চিরুনির ব্যবহার নির্ভর করবে সেটার ওপর।
অগোছালো কেশসজ্জায় যা সব করতে হবে, দেখে নিন এবারে-
চুল ধুয়ে নিন ভালো করে, শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনারের ব্যবহার চলতে পারে আপনার দরকার মতো। তারপর চুল শুকনো করে মুছে নিন। চুলের যত্নেই যতোটা সম্ভব হেয়ার ড্রায়ার এড়িয়ে চলুন। বৈদ্যুতিক তাপে চুল শুকোনোর অভ্যাস চুলের পক্ষে ভালো নয় তা নিশ্চয় সবার জানা আছে। এবারে পুরো চুলে আঙ্গুল চালিয়ে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে। আবারো মনে করে নেয়া যাক, চিরুনির দিকে নজর দেয়া কিন্তু মানা!
আবার যদি চুলগুলোকে একটু বেশিই এলোমেলো বানাতে চান, কাজে লাগাতে পারেন এই চিরুনিকেই।
তার জন্য ছোট্ট যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো, চুলের গোছা হাতে নিয়ে নিচ থেকে উপরের দিকে আলতো ভাবে চিরুনি চালাতে হবে। তাতেই এলোমেলো ভাবটা আরো বেশি স্পষ্ট হয়ে আসবে।
চুল অগোছালো বানানো হয়ে গেলে তবে মূল ধাপটা শেষ হলো আপনার কেশসজ্জার। এই চুলে এবার ইচ্ছে অনুযায়ী হেয়ার জেল বা হেয়ার স্প্রের ব্যবহার করতে পারেন আপনি।
এলোমেলো চুলগুলোতে চাইলেই বেণী বা খোঁপা হয়ে যেতে পারে। অথবা পিঠে ছড়ানো খোলা চুলই থাকুক আরো এলোমেলো হয়ে। অনুষঙ্গ ব্যবহারেও রয়েছে পুরো স্বাধীনতা। সাধারন কোন উপলক্ষ কিংবা অনুষ্ঠানের বেশ জমকালো আয়োজন, সব জায়গাতেই এই এলোমেলো কেশবিন্যাসের কদর আছে।
এই এলোকেশী বেণীতে তাজা ফুল লাগাতে পারেন অনুষ্ঠানে গেলে, আর নিত্যদিনের সাজে বেণী বা সাধারন ঝুঁটির জন্য পছন্দের যেকোন হেয়ারব্যান্ড, ফুলেল ক্লিপ বেছে নিন অনায়াসে। মেসি বান বা খোঁপায় ঝলমলে পাথর-মুক্তোর কাঁটাও চমৎকার মানাবে। চুল যদি খোলা রাখাই পছন্দ হয় তবে একপাশ বা দুপাশ থেকে কিছু চুল পেছনে নিয়ে পেঁচিয়ে আটকে রাখা যায়। তার ভেতর ছোট কিছু ক্লিপ বা ফুল গেঁথে নিজেকে সহজেই ছিমছাম সুন্দরে সাজিয়ে ফেলতে পারেন চাইলে। মোট কথা বাকি সাজসজ্জা যেমনই হোক না কেনো, এলোমেলো কেশসজ্জার সাথে মানিয়ে যায় অনায়াসেই। কখনো নিজেকে এভাবে না দেখে থাকলে এবারে তবে দেখেই নিন একবার!
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
ছবি – সাজগোজ ফাল্গুন অ্যালবাম