সাইনোসাইটিস সমস্যা আমাদের মাঝে অনেকেরই আছে। অনেকেই এর ব্যথাতে কষ্ট পান। অথচ এ ব্যথা সাইনোসাইটিস-এর নাকি মাইগ্রেইন-এর এই নিয়ে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। সাইনোসাইটিস আসলে কি? আমাদের দেহের যে সকল জায়গা ফাঁপা বা ছিদ্রযুক্ত হয়ে থাকে তাকেই মূলত সাইনাস বলে। এই সাইনাসগুলোতে যখন কোনো কারণে ঘা বা প্রদাহ হয়ে থাকে তখন এই ঘা বা প্রদাহকেই সাইনোসাইটিস বলা হয়।
সাইনোসাইটিসের লক্ষণসমূহ
এ ব্যথাটির প্রথম ও প্রধান লক্ষণ হলো মাথা ব্যথা। তার সাথে জ্বর জ্বর ভাব থাকে ও নাক বন্ধ থাকে। সাধারণত সকাল থেকে দুপুরের দিকে সাইনোসাইটিস- এর ব্যাথার তীব্রতা বেড়ে বিকেলের দিকে কমে যেতে পারে। তবে সাইনাসগুলো চোখ ও ব্রেনের পাশে বেশি থাকে বলে মাথা ব্যাথার সাথে সাথে চোখ ও নাকের পার্শ্ববর্তি অঞ্চলেও ব্যাথা হতে পারে।
সাইনোসাইটিস সমস্যা থেকে পরিত্রাণের সহজ উপায়সমূহ
(১) কাঁচা সবজির জুস সাইনোসাইটিসের প্রভাব কমানোর জন্য অনেক উপকারী। ৩০০মিলি. গাজরের জুস, ১০০মিলি. শশার জুস, ১০০মিলি. বিটের জুস এবং ২০০ মিলি. পালং শাকের জুস ভালো ভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন।
(২) সাইনোসাইটিসে ভুগলে ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার যেমন আম, কুমড়ো, ডিমের হলুদ অংশ, টমেটো, পেঁপে, গাজর, দুধ ও দই খাওয়ার চেষ্টা করুন।
(৩) ১০০ গ্রাম জিরা টেলে ২০০ গ্রাম ঘি এর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সেবন করুন। এটি সাইনোসাইটিস প্রতিরোধের অন্যতম উপায়।
(৪) ১ টেবিল চামচ কালো জিরা একটা পাতলা কাপড়ে বেঁধে নিয়ে তার গন্ধ নিতে পারেন।
(৫) এক টেবিল চামচ মেথি এক গ্লাস পানিতে জ্বাল দিয়ে নিন যতক্ষণ না অর্ধেক হয়। প্রতিদিন ৩/৪ গ্লাস সেবন করলে সাইনোসাইটিসের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
(৬) পেঁয়াজ এবং আদার গন্ধ শুঁকলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এই দুটি উপাদানের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গুণ আছে।
(৭) আদা অথবা দারুচিনির চা হালকা গরম অবস্থায় পান করুন।
(৮) ঠাণ্ডা ও তৈলাক্ত জাতীয় খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
(৯) শুনে হয়ত অবাক হবেন যে ব্যায়ামের মাধ্যমে সাইনোসাইটিসের প্রভাব কমিয়ে আনা যায়। ব্যায়াম করার ফলে শরীরে অ্যাড্রেনালিন বেড়ে যায়, যা বেড়ে যাওয়া সাইনাস টিস্যুকে কমিয়ে দেয়।
(১০) আমরা সবাই কম বেশি ভিনেগারের সাথে পরিচিত। এই ভিনেগার মিউকাস উৎপন্ন কমিয়ে আমাদেরকে সাইনোসাইটিস থেকে মুক্তি দান করে। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে দুই চা চামচ ভিনেগার দিয়ে প্রতিদিন ৩ বার সেবন করতে হবে।
সাইনোসাইটিস-এর প্রতিকার
সাইনোসাইটিস-এর জন্য মাথা ব্যথা হচ্ছে মনে হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডাক্তার প্রাথমিক পর্যায়ে মূলত সাইনোসাইটিস-এর মাত্রা বুঝে ঔষধ ও নাকের ড্রপ দিয়ে থাকেন। এর চেয়ে বেশি মাত্রায় সাইনোসাইটিস হলে তা ওয়াশ-এর ব্যবস্থা করতে হয়।
ছবি – সাটারস্টক