একচুয়ালি বেশ কয়েকজন রিডারের ফিডব্যাক, আমরা সবসময় মেকআপ টিপস দেই, ভিডিও টিউটোরিয়াল দেই। কিন্তু তারা ঠিক বুঝতে পারে না তাদের সর্বক্ষণের সাথী চশমাটার সাথে সেই মেকআপ লুকগুলো কেমন যাবে। অনেকে আবার চোখে চশমা থাকলে লুক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে খুবই ভয় পান। ফলাফল… সারাজীবন সেই এক বোরিং কালো আইলাইনার ছাড়া আর কিচ্ছু ট্রাই করা হয় না।আজ তাই আমাদের চশমা চোখের রিডারদের জন্য কিছু মেকআপ টিপস নিয়ে এলাম। আশা করি ট্রাই করবেন…
১। আপনার চশমাই আপনার বেস্ট এক্সেসরি–
জানেনই তো আজকাল বাজারে কতো ধরণের চশমার ফ্রেম পাওয়া যায়। তো আর ভয় না পেয়ে ডিফারেনট ফ্রেমে নিজের লুক নিয়ে একটু এক্সপেরিমেনট করুন না!! অন্তত কিছু ফেসটিভ, ফ্লারটি ফ্রেম রাখতেই পারেন, কোন পার্টি অথবা গেট টুগেদারের জন্য… মুহূর্তে আপনার লুক চেঞ্জ করে ফেলার জন্য আপনার ফ্রেমই যথেষ্ট। দেরি না করে বড় কোন আই ওয়্যার শপে গিয়ে দেখুন কোন ধরণের ফ্রেম আপনার ফেসের সাথে মানানসই!! আবার অনলাইনেও আজকাল ঘরে বসে পেয়ে যাবেন মনের মত চশমার ফ্রেম…
২। বোরিং লুকগুলো একটু বাদ দিন না–
কেনই যেন আমাদের দেশের বেশিরভাগ মেয়ে ভাবে, চোখে চশমা থাকলে বোধহয় কালো কাজল বা লাইনার ছাড়া আর কিছু পড়া যায় না…! এটা খুবই ভুল ধারনা। বরং কাজল লাগাতে লাগাতে উল্টো কাজলের লুকটাই বোরিং হয়ে যায়। মনে রাখবেন কালো ফ্রেম থাকলে আপনি চোখে যেকোনো ধরণের, যেকোনো রঙের কাজল / লাইনার লাগাতে পারেন। কালোর সাথে সব রঙ ভালো যায়। আপনার লুক চেঞ্জ করার সাথে সাথে বিভিন্ন রঙের লাইনার আপনার চোখকে আরও হাইলাইট করবে। চোখ বড় দেখাবে এবং চোখের টায়ার্ডনেস কাটবে…
৩। মাসকারার শক্তি সম্পর্কে জানুন–
যারা চোখে চশমা পরেন তাদের আরেকটা বড় ভুল হচ্ছে চোখে শুধু কাজল/ লাইনার দেয়া কিন্তু মাসকারা না দেয়া!! আমাকে জিজ্ঞাসা করা হলে আমি বরং লাইনার বাদ দিয়ে মাস্কারা ইউজ করতে বলব। কারণ যারা সবসময় চশমা পরেন তাদের চোখ সবসময় টায়ার্ড লাগে দেখতে… চোখের এই ঘুম ঘুম ভাব দূর করার জন্য তাই উচিত আই ল্যাস কার্ল করে ভালো করে দুই কোট কারলিং মাস্কারা লাগিয়ে নেয়া। চোখের লুকের চেঞ্জ দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন…
৪। কন্সিলারের কথা কখনই ভুলবেন না–
যদি চশমা থাকে আপনার চোখে তবে নিশ্চয়ই জানেন, যাদের চোখের পাওয়ার কম তাদের চোখের নিচে কতো বেশি ডার্ক শেড থাকে। চশমা পড়ে একটু লাইনার দিলে চোখ এত হাইলাইট হয়ে যায় যে চোখের এই ডার্ক সার্কেল আরও বেশি বাজে ভাবে ফুটে থাকে… সুতরাং মেকআপ করলে কখনই চোখের নিচে কন্সিলার লাগাতে ভুলবেন না। ভালোভাবে কন্সিলার না লাগানো মেকাপের সবচেয়ে বড় ভুলের একটা…
৫। ভ্রুর দিকে দিন আলাদা নজর–
অবশ্যই মেকাপের সময় ভালোভাবে ভ্রুর শেপ দিন। ভ্রু আপনার পুরো মুখকে একটা ফ্রেমে বেধে ফেলে। সুন্দর করে ভ্রু একে নিলে তাই চশমার ফ্রেমের ভেতরেও আপনার চোখ থাকবে উজ্জ্বল আর প্রাণবন্ত… ভালো একটা আই ব্রাও পালেট ইউজ করুন। ভ্রুর চুলগুলো একটু উপরের দিকে আঁচরে নিয়ে জেল দিয়ে সেট করে নিন। সারাদিনের চশমা খোলা পড়ায় আপনার ভ্রু থাকবে সুন্দর এবং পরিপাটি। আর চশমা খুলে ফেললে যারা রেগুলার চশমা পরে তাদের যেমন হঠাৎ দুর্বল, অন্যরকম লাগতে থাকে, তেমনটাও আর হবে না।
৬। আইলাইনার ট্রিকস–
এই ট্রিক টা মনে রাখুন-
আপনার চশমার ফ্রেম যত মোটা হবে আপনি চোখের উপরেও তত মোটা করে লাইনার দেবেন। ফ্রেম যদি চিকন হয়/ রিমলেস চশমা হয় তবে লাইনার ও হবে চিকন লাইনে। কখনই মোটা ফ্রেমের সাথে চিকন করে লাইনার দেবেন না আর চিকন ফ্রেমের সাথে মোটা করে দেবেন না।
৭। আর অবশ্যই ব্লাস–
চশমা আপনার চোখ আর চোখের আসে পাশের অংশকে হাইলাইট করে। সো মেকআপের সময় এই মুখের মাঝের অংশের দিকে স্পেশাল খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষকরে আপনার চোখ যদি ছোট, ক্লান্ত আর ডার্ক সার্কেল যুক্ত হয়। সঠিক শেডের ব্লাসের ব্যাবহার আপনার চেহারায় প্রাণ ফিরিয়ে আনবে আর চোখের ত্রুটি থেকে ফোকাস সরিয়ে নেবে।
৮। বোল্ড লিপস–
এইমাত্র যেমন বললাম, চশমা চেহারার মাঝে ফোকাস নিয়ে আসে। তাই ঠোটেও দিন আলাদা দৃষ্টি। ইন্ডিয়ান ব্রাউন স্কিন টোণে ডার্ক ফ্রেমের চশমার সাথে যেকোনো গাঢ় ওয়ার্ম কালার খুব ভালো মানায়। সুতরাং একটু ভারি সাজগোজে স্মোকি আইয়ের কথা বাদ দিয়ে বোল্ড লিপ লুকে যান। ভারি আই মেকআপ চশমার সাথে মানায় না। তাই চোখের অংশে হাল্কা মেকআপ আর উজ্জ্বল শ্যাডো ইউজ করে ঠোটের জন্য বেছে নিন- লাল, লালচে কমলা, মভ, ডাস্টি রোজ, ওয়াইন, বেরি টোনের লিপ কালার। দেখবেন ভারি আই মেকআপের চেয়ে এতে আপনাকে বেশি ফ্রেশ লাগবে।
৯। বেস মেকআপে আরেকবার চোখ বুলান–
মেকআপের লাস্ট ধাপে অবশ্যই দেখে নিন আপনার মেকআপ পাউডারি হয়ে আছে কিনা। এবং বেস মেকআপ পুরো স্মুথ হয়েছে কিনা। নিশ্চয়ই চান না আপনি যে আপনার লুজ সেটিং পাউডারের গুঁড়ো ছড়িয়ে থাকুক আপনার চশমার উপরে। অথবা ফ্রেমের ভেতর থেকে দেখা যাক আপনার ক্রিজ পড়ে যাওয়া কন্সিলার আর প্যাচি ফাউনডেশন…!!! খুবি ভালো ভাবে, মনোযোগ দিয়ে বেস ব্লেনড করুন।
এই অল্প কিছু চেঞ্জেই দেখবেন, আপনার বোরিং লুক কতটা বদলে গেছে… আরও কোন টপিকে টিপস চান তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু…
লিখেছেন – তাবাসসুম মুস্তারি মিম
ছবি – এলে.কম