বাজারেসবসময় হরেক রকমের শাড়ি পাওয়া যায়, যেমন–বেনারসি, জামদানি, সিল্ক, তাঁতের শাড়ি, মিলের শাড়ি, সুতি শাড়ি, জর্জেট, শিফন, টাঙ্গাইল শাড়ি, পাবনার শাড়ি, ঢাকাই শাড়ি, বিভিন্ন নামের প্রিন্ট শাড়ি ইত্যাদি।এছাড়া রয়েছে বাটিক, বুটিক, টাই-ডাই, ব্লক-প্রিন্ট, ফেব্রিক, নকশি কাঁথাসহ হাজারো রকম শাড়ি। এর মধ্যে সাধারণ ব্যবহার্য শাড়িগুলি হয় সুতির এবং জর্জেটের।পছন্দের শাড়ি বাজারে পাওয়া গেলেও উচ্চমূল্যের কারণে তা থাকে অনেকের নাগালের বাইরে।কাতান, জামদানি, সিল্ক, বেনারসি ইত্যাদি উৎসব/অনুষ্ঠানে পরার শাড়ি।
[picture]
ধনী পরিবারের মেয়েদের কাছে এসব নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা তা বিয়ে বা অন্য কোন বড় অনুষ্ঠান ছাড়া পরার সুযোগ পান না। তবে অনুষ্ঠানাদিতে প্রায় সব পরিবারের মেয়েরাই শাড়ি পরে। আর জর্জেট শাড়ি সব মহলে সাধারণ ব্যবহার্যশাড়ি হিসেবে সমাদৃত। তবে তার মান ও আভিজাত্য নির্ভর করে ডিজাইনের ওপর। আবার যে কোন অনুষ্ঠানে এক কালারের জর্জেট চওরা পাড়ের শাড়ি মানিয়ে যায়। বিয়ে, বৌভাত, মেহেদি অনুষ্ঠান, গায়ে হলুদ ইত্যাদি যে কোন অনুষ্ঠানে জর্জেট শাড়ি;প্রিন্ট বা এক কালারের পরে থাকেন অনেকেই।
তবে একদম সিম্পল থাকলেও অনেক সময় সিম্পলের ভেতর গর্জিয়াস ভাবটা আনা জরুরি। যেটা আপনার নিজের কাছেও ভালো লাগবে!
জর্জেট শাড়ি যে কোন যায়গায় এবং মহলে মানিয়ে যায়। তাই জর্জেটের সাধারণ এক রঙা বা প্রিন্টের শাড়িতে আপনি নিজেই নিয়ে আসতে পারেন গর্জিয়াস লুক;
- বাজারে বিভিন্ন রকম, ছোট, বড় লেইস পাওয়া যায়।এক রঙের জর্জেট শাড়িতে পছন্দ মতো লেইস পাড় হিসেবে সিলাই করে নিন।লেইস মোটা পাড় হিসেবে ব্যবহার করা ভালো।এতে শাড়ির রঙ ফুটে উঠবে। একদম সাধারণ হলেও আকর্ষণীয় লাগবে দেখতে।
- এক রঙা জর্জেট শাড়িতে রঙ্গিন সুতোর হাল্কা হাতের কাজ করে নিতে পারেন। পুরোটা করতে না চাইলে শুধু আঁচল আর বুক থেকে কোমর পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। শাড়ির সাথে যেই রঙ মানাবে সেই রঙের সুতো ব্যবহার করুন। দেখতে ভালো লাগবে আর যে কোন জাকজমক অনুষ্ঠানে মানিয়ে যাবে।
- সিম্পল এক কালার জর্জেট শাড়ির উপর এক কালারের পাড় লাগিয়ে নিতে পারেন।তবে এর সাথে আপনার সাজটা ঘন হতে হবে। তাহলে সিম্পল শাড়িতে আপনাকে আকর্ষণীয় দেখাবে।
- রঙিন কাজ করা লেইস বা চওরা ডিজাইনের লেইস কিনে শাড়ির আঁচল আর বুকের উপরের দিকে লাগিয়ে নিন। বুকের কাজের ক্ষেত্রে বড় বড় ইয়োকগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। সাথে মানানসই পাথর নিজে ঘরে বসে বসিয়ে নিতে পারেন।
- জর্জেট শাড়ি মোটা হলে সেটাতে বেশি কাজ করার প্রয়োজন নাই। অল্প হাতের কাজ করাই ভালো।তা না হলে শাড়ি ভারি লাগবে। আপনার যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবে শাড়িতে কাজ করে নিন।
- প্রিন্টের জর্জেট হলে প্রিন্টের ডিজাইনের মাঝে মাঝে চুমকি বসাতে পারেন।বাজারে বিভিন্ন রকমের আর সাইজের চুমকি পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করুন। এতে শাড়ি দেখতে উজ্জ্বল লাগবে।
- হাল্কা প্রিন্টের জর্জেট শাড়ি হলে শুধু পাড় লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে শাড়ির কাজ ঘন দেখাবে।
- পাতলা জর্জেট পরতে অসুবিধা হলে কারচুপির কাজ করে নিতে পারেন। আচলে আর পাড়ের কাছে কারচুপির কাজ করলে শাড়ি ভারি হবে। এছাড়া শাড়ি পাতলা দেখাবেনা।
- অনেকে শাড়ি পুরোটাই একদম একরঙা রাখতে চান।তাহলে জর্জেট শাড়ির সাথে প্রিন্টের বা কাজ করা কাতান ব্লাউজ পরতে পারেন। এছাড়া সুতি কাপড়ের উপর কাজ করা ব্লাউজ পাওয়া যায়, সেগুলোও পরতে পারেন। এতে শাড়ি একরঙা হলেও রঙিন দেখাবে।
- জর্জেট শাড়ি দুপুর, রাতে, যে কোন সময়ই উজ্জ্বল দেখায়। তাই অতিরিক্ত কাজ না করাই ভালো।
- বাজারে বিভিন্ন ২ কালার বা ৩ কালারের শেডের জর্জেট কাপড় পাওয়া যায়। সেগুলো কিনে তাতে হাল্কা রঙের পাড় লাগিয়ে নিন। শেডের জর্জেটে সাথে এক রঙা ব্লাউজ পরুন, দারুণ মানিয়ে যাবে।
- বাজারের কিছু দোকানে কাপড়ের উপর অনেক কাজ করায় নেয়া যায়, সে ক্ষেত্রে কারচুপির কাজের লোক থাকে অনেক দোকানেই।নিজে কাজ করতে না চাইলে সেখানে কম খরচে কাজ করে নিতে পারেন। এতে আপনার কষ্ট কম হবে।
দেখলেন তো কতো কম খরচে সিম্পল জর্জেট শাড়ি আপনাকে কিভাবে গর্জিয়াস লুক দিতে পারে! নিজের মন মতো আপনিও একটু চেষ্টা আর ধৈর্য নিয়ে জর্জেট শাড়িতে কাজ করে দেখতে পারেন।
লিখেছেন – সোহানা মোরশেদ
ছবি – ক্র্যাফটসভিলা.কম, আর্টিসানগ্লিটজ.কম