এখন এমন একটা সময় এসেছে যখন নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে কম বেশি সবাই সচেতন হয়ে উঠতে শুরু করেছে। কিশোর, তরুণ বয়সী থেকে শুরু করে করে অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সের মানুষও নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নানা রকম ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করছেন। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, খুব সাধারণ কিছু ছোট ছোট ভুলের জন্য এই ডায়েট প্ল্যানগুলো ওজন কমানোর বদলে ওজন বাড়িয়ে দিচ্ছে। আপনার শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে কি? তাহলে ভুলগুলো কি জেনে নিয়ে মিলিয়ে নিন কেন আপনার ওজন না কমে বেড়ে যাচ্ছে।
শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে কি?
যে ৬ টি ভুলে আপনার শরীরের ওজন না কমে বেড়ে যাচ্ছে সেগুলো নিয়ে চলুন জেনে নিই –
১) আপনি প্রয়োজনীয় খাবার খাচ্ছেন না
এটা ঠিক যে ওজন কমানোর জন্য শুরুতেই ক্যালরি গ্রহণ কম করতে বলা হয়। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ যেটা করি তা হচ্ছে ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে কমিয়ে দেই। কিন্তু আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না যে আমাদের শরীরের নিজস্ব প্রক্রিয়াগুলো চালানোর জন্য যথেষ্ঠ পরিমাণ পুষ্টির দরকার। আমরা যদি হঠাৎ করে খাবার পরিমাণ একেবারেই কমিয়ে দেই তবে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগুলোর সাথে সাথে আমাদের মেটাবলিজম প্রক্রিয়াও কাজ করা কমিয়ে দেবে। ফলাফল যথারীতি ওজন বৃদ্ধি। এজন্য শুরুতেই ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা অনেক না কমিয়ে আস্তে আস্তে কমাতে হবে।
২) আপনার কার্বোহাইড্রেট সাদা রঙের
আমাদের দেহের জন্য কার্বোহাইড্রেট যথেষ্ঠ জরুরী একটি উপাদান। আদর্শ খাবারের প্লেটে সবজি ও প্রোটিনের সাথে অবশ্যই কিছুটা কার্বোহাইড্রেট থাকতে হবে। কিন্তু আমরা যে ভুলটা করি তা হল আমরা যে চাল, আটা, ময়দা ব্যবহার করি তার সবটাই হয় সাদা রঙের যা হজম হতে বেশি সময় লাগে। পুষ্টিবিদের মতে এগুলোর বদলে ব্রাউন রাইস বা ব্রাউন ব্রেডের ব্যবহার বাড়ানো উচিত।
৩) ডেইরি জাতীয় খাবার না খাওয়া
আমরা অনেকেই ফ্যাটের ভয়ে দুধ জাতীয় খাবার খাই না। পুষ্টিবিদদের মতে ক্যালসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি মেয়েদের মেটাবলিজমের হার কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন বেড়ে যায়। তাই দুধ খাওয়া একদম বন্ধ না করে স্কীমড মিল্ক বা ননিবিহীন দুধ, টকদই এসব খেতে হবে।
৪) একবেলার খাবার না খাওয়া
অনেকে ওজন কমানোর জন্য একবেলার খাবার বিশেষত সকালের নাস্তা বন্ধ করে দেন যা একেবারেই উচিত না। কারণ সকালের নাস্তা আমাদের জন্য সবথেকে জরুরী খাবার এবং এটি থেকেই সারাদিনের কাজের জন্য দেহ এনার্জী গ্রহণ করে। তাই সকালের নাস্তা হওয়া চাই বিভিন্ন রকম পুষ্টিতে পরিপুর্ণ। অনেকে আবার রাতের খাবার বন্ধ করে দেন যেটাও ঠিক না। রাতের খাবার একেবারে বন্ধ করে না দিয়ে রাতের খাবারটি আটটার মধ্যে খেয়ে নিবেন।
৫) খাবারের হিসাব না রাখা
একটা নির্দিষ্ট ডায়েট প্লান অনুসরণ করার সময় সেই ডায়েট প্লান অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ হিসাব রাখাটা খুব জরুরী। প্রচলিত ডায়েট প্ল্যানগুলোতে খাবারের পরিমাণ কাপ, চামচ বা গ্রামে হিসাব করে দেয়া থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় আমরা চোখের আন্দাজে খাবারের পরিমাপ নির্ধারণ করি যা প্রায় সময়ই ভুল হয়। আর অবধারিতভাবেই ডায়েটের ফলাফল আশানুরূপ হয় না।
৬) দু’টি খাবারের মধ্যে অনেক বেশি সময়ের ব্যবধান
আমাদের খাবারের মধ্যবর্তী সময় যদি অনেক বেশি হয় তাহলেও আমাদের মেটাবলিজমের হার কমে যায় যার ফলে অনেক কম খেলেও ওজন কমার বদলে বাড়তে থাকে। তাই তিন ঘন্টা অন্তর সামান্য সালাদ বা একটি ফল খেতে হবে। এতে মেটাবলিজম ভাল থাকবে, সেই সাথে অতিরিক্ত ক্ষিদে লাগার প্রবণতাও কমে যাবে।
ছবি – সাটারস্টক