শিরোনাম অনুযায়ী প্যাকটির বিবরণে যাওয়ার আগে কিছু কথা না বললেই নয়। তা হল আমাদের বেশিরভাগের রূপচর্চার ক্ষেত্রে একটি ধারণা রয়েছে যে একটি প্যাক সেটা প্রাকৃতিক হউক বা না হউক দু/তিন বার ব্যবহার করলেই সারা জীবনের জন্য উজ্জ্বল ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ত্বক পেয়ে যাব! যা আসলে ভয়ংকর একটি ভুল ধারনা। যেকোনো কিছুর থেকে বেস্ট রেজাল্ট পেতে হলে তা নিয়ম মাফিক করে যেতে হবে। কেবল মুখে রূপচর্চার সব টিপস ঘষলেই আমি সুন্দর হয়ে যাবো না এরজন্য সুস্থজীবন যাপন অত্যন্ত জরুরি। পরিমিত ঘুমের সাথে সাথে খাবারের প্রতি যত্নশীল এবং প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।
[picture]
এবার আসা যাক প্যাক নিয়ে আলোচনায়। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানাব, কীভাবে বাসায় বসেই একটি মাত্র মেইন উপাদানে তৈরি প্যাক দিয়ে পরিচ্ছন্ন এবং দীপ্তিময় ত্বক পাওয়া সম্ভব। এক কথায় এটি এমন একটি জাদুকরী প্যাক যার নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের গেড়ে বসা রিংকেল, এজ স্পট, ডার্ক স্পট, পিগমেনটেশন প্রবলেম দূর করতে সাহায্য করার পাশাপাশি ত্বককে আগের তুলনায় হেলদিয়ার এবং ক্লিন করে তুলে।
কিন্তু সেই মেইন ইনগ্রিডেন্টটি কি? ফলের খোসা বা ছিলকার সাধারণত আমরা ফেলে দিই। কিন্তু আজ এমনই একটি ফলের খোসাটি হতে যাচ্ছে দারুণ এই ফেস প্যাকের প্রধান উৎস। তা হল বেদেনা/ ডালিম ফলের খোসা! ডালিমের মতই বাহ্যিক অংশে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপদান ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। ডালিম ত্বকের বাইরের স্তর (এপিডারমিস) এবং ত্বকের ভিতরের স্তর(ডারমিস ) মধ্যে নতুনকোষ পুনর্জন্মে সাহায্য করা ছাড়াও ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে ত্বককে সুস্থ করে তুলে। এতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান রোদে পোড়া থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে। কাজেই বুঝতে পারছেন যে ডালিমের খোসা আসলে ফেলনা বস্তু নয়।
এই প্যাক তৈরির জন্য প্রধান উপাদান ডালিমের খোসাকে সরাসরি রোদে শুকাতে হবে। এর জন্য ডালিমের খোসা থেকে বিচি ছাড়িয়ে মূলের অংশটুকু ফেলে দিয়ে ডিরেক্ট রোদে শুকাতে হবে। শুকিয়ে গেলে মশলার গ্রিন্ডারে গুঁড়ো করে এয়ার টাইট কাচের বোয়ামে রেখে দিতে হবে।
এবার আসা যাক ডালিমের এই গুঁড়োর সাথে আর কি কি উপাদান লাগবে সেই কথায়। যাদের স্কিন অয়েলি তারা দুধটা বাদ দিয়ে তৈরি করুন।
- টক দই ১ টেবিল চামচ
- মধু ১ টেবিল চামচ
- লেবুর রস ২-৩ ফোঁটা
- ফ্যাটযুক্ত দুধ ১ টেবিল চামচ
- টমেটোর রস ১ টেবিল চামচ
একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ ডালিমের খোসার গুঁড়ো নিয়ে তাতে একে একে বাকি সব উপকরণ ঢেলে ভালো করে মিক্স করে ১০ মিনিট রেখে দিন। যাতে উপকরণগুলো একটি আরেকটির সাথে ভালোভাবে মিশে যেতে পারে।
এবার ধোয়া মুখে, ঘাড়ে এবং গলায় প্যাকটি ভালো করে লাগান। আই এরিয়া বাদে প্যাকটি লাগাবেন। এবাবে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। যখন প্যাকটি শুকিয়ে যাবে তখন নরমাল পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ গলা এবং ঘাড় ধুয়ে ফেলুন। ধোয়া হয়ে গেলে টাওয়েল দিয়ে পুরো মুখ চেপে চেপে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
এবার খেয়াল করে দেখুন তো স্কিন আগের থেকে স্মুদ এবং উজ্জ্বল দেখাচ্ছে কিনা। এই প্যাকটি মাসে ৩ বারের বেশি এপ্লাই করবেন না। এটা কোন স্কিন ট্রিটমেন্ট নয় যে মুহূর্তেই ফল পেয়ে যাবেন। আগেই বলেছি নিয়মিত এই প্যাকটি ব্যবহার করে যেতে হবে।
ছবি – হেলদিফুডমাস্ক.কম
লিখেছেন – আসমা আকতার