অ্যালোভেরা রূপচর্চার আদিম সময় থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আপনারা অ্যালোভারার উপকারীতা ও গুণাবলীমূলক অনেক পোস্ট নিশ্চয় পড়ে থাকবেন। আর না পড়ে থাকলে ‘সাজগোজ’ এর ওয়েব সাইট থেকে এক্ষুনি পড়ে নিতে পারেন। অ্যালোভেরার জুস পানেও ত্বক ও শরীর দুই ই সুস্থ্ থাকে। এছাড়াও অ্যালোভেরাতে আছে যাদুকরী সব গুণাগুণ যা ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার, লাবণ্যময় ও উজ্জ্বল করে তোলা। যত কঠিন রোদে পোড়া দাগ ই হোক না কেন অ্যালোভেরার নিয়মিত ব্যবহারে পরিপূর্ণ রূপে নির্মূল করা সম্ভব।
[picture]
আজকের দিনে রূপ রুটিন শু্ধু মাত্র ক্লিনজিং, টোনিং আর ময়েশ্চারাইজিং এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ডাবল ক্লিনজিং, এক্সফোলিয়েটিং, সেরাম ও নাইট ক্রিমের ব্যবহার লক্ষণীয়। সবারই জানা থাকার কথা এসবের মধ্যে সেরামই সর্বাপেক্ষা দামী হয়ে থাকে। এর কারণ হচ্ছে সেরামে ঘনত্ব ও পটেন্সি অনেক বেশি। সেরামের ব্যবহারে ত্বকের সমস্যা সমূহের দ্রুত সমাধান করা যায়। আজকে আপনাদের জানাব কেমন করে ঘরে বসেই হোয়াইটেনিং অ্যালো সেরাম তৈরি করতে পারবেন তার রেসিপি। এর নিয়মিত ব্যবহা্র ত্বকের ট্যানভাব দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল, ফর্সা ও চকচকে করে তোলে।
উপকরণ
(১) সুস্থ, নীরোগ, সারমুক্ত অ্যালোভেরা ডাঁট- ১টি
(২) লেবু- ১টি
(৩) নির্ভেজাল, অর্গানিক মধু
(৪) ভিটামিন ই ওয়েল
(৫) অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল (অপশনাল)
(৬) অর্গান ওয়েল (অপশনাল)
(৭) কাচের বা চিনামাটির সংরক্ষণ পাত্র
(৮) ছাঁকনি ও ব্লেন্ডার ইত্যাদি
প্রস্তুত প্রণালী
(১) শুরুতেই অ্যালোভেরা নিয়ে নিন। নিজের প্লান্ট থাকলে সবচেয়ে ভালো হয়। গাছ থেকে ছুরির সাহায্যে একটি সুস্থ ডাঁট কেটে নিন। এর পর পরিষ্কার পানিতে ভাল করে ধুয়ে নিন। এবার ধারালো ছুরি দিয়ে পাতার অংশটুকু কেটে ভেতরের থকথকে জেল বের করে নিন।
(২) এবার ব্লেন্ডার বা ফুড প্রসেসরে জেলগুলো দিয়ে ভালোমত ব্লেন্ড করে নিন। একদম তরল না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করবেন।
(৩) তারপর ছাঁকনির সাহায্যে অ্যালো জুস ছেঁকে আলাদা পাত্রে রাখুন।
(৪) অন্য একটি পাত্রে লেবুর রস বের করে নিন।
(৫) এবার অন্য একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ কাপ (বড় সাইজের) অ্যালো জুসের সাথে ২ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ মধু, ৪-৫ ফোঁটা ভিটামিন ই ওয়েল বা ক্যাপ ব্যবহার করলে ১ টি ই ক্যাপ, আর চাইলে ২ ফোঁটা করে যে কোন অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল (ল্যাভেন্ডার/পেপারমিন্ট) ও অর্গান ওয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।
(৬) সবগুলো উপদান খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন।
(৭) রেসিপিটি স্বাভাবিক ত্বকের জন্য। তৈলাক্ত ত্বক হলে মধুর পরিমাণ কমিয়ে নিবেন আর শুষ্ক ত্বকে ১ চামচ লেবুর রস নিবেন। যাদের লেবুতে অ্যালার্জি আছে তারা লেবু ব্যবহার করবেন না।
(৮) এবার কাচ বা চিনামাটির পাত্রে ঢেলে সংরক্ষণ করুন আপনার সেরামটি।
ব্যবহারবিধি
ক্লিনজার বা ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধোয়ার পর টোনিং এর শেষে এই সেরাম ব্যবহার করুন। তুলা বা হাত যেটাতে সুবিধা হয় সেটাই ব্যবহার করতে পারেন তবে পাতের ভেতরে হাত দেবেন না, স্প্যাচুলা বা স্পুন দিয়ে সেরামটি আগে ঢেলে নিন। অ্যাপ্লিকেশনের ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। সেনসেটিভ ত্বক হলে ১০-১৫ মিনিট রাখলেই হবে। যদি কোন রকম ইরিটেশন হয় লেবুর পরিমান কমিয়ে দেবেন। দিনে/রাতে যে কোন সময় ব্যবহার করা যাবে।
বিঃদ্রঃ
যেহেতু সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও প্রিজারভেটিভ বিহীন তাই ৫-৭ দিন পর পর পুনরায় বানিয়ে নেয়া ভাল। রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করবেন এবং রং/গন্ধ পরিবর্তিত হলে সাথে সাথে ওটা ফেলে দিয়ে নতুন করে বানিয়ে নেবেন।
আশা করি আজকের ‘নিজে করি’ বিউটি রেসিপিটি আপনাদের সবার খুব পছন্দ হয়েছে। ব্যবহারের পর ফলাফল জানাতে ভুলবেন না যেন। সবার সুস্বাস্থ্যতা কামনায় শেষ করছি।
ছবি – স্টাইলিশটিপস.কম
লিখেছেন – রোজা স্বর্ণা