ঈদের সময়গুলোতে আপনার ঘরে যেমন অনেক কাজ থাকে আবার পার্লারগুলোতেও অনেক ভিড় থাকে। তাই এই সময়টাতে আলাদা করে ত্বকের যত্ন নেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রায় দেখা যায় যে, পার্লারে গেলে অনেক সময় লেগে যায়। আর কাজের ভিড়ে যাওয়ার সময় বের করাও কঠিন হয়ে যায় অনেক সময়। আবার আপনার যদি ছোট বাচ্চা থাকে তাহলে তো যাওয়া আরও কষ্টসাধ্য। এই বলে যদি বসে থাকি ত্বকের যত্ন না নিই তবে ব্রণের উপদ্রবের জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে আর কি! তার চেয়ে বরং আসুন জেনে নিই, কীভাবে ঘরে বসেই আপনি নিজে নিজে এক ঘণ্টার মধ্যে ফেসিয়াল করলে পারবেন। যাতে খরচও কম হবে আবার যেকোনো সময় এটি করে ফেলতে পারেন। আপনি ঈদের পরেও ফ্রেশ এবং সতেজ থাকতে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও আপনার ফেসিয়ালটি শেষ করে সকালে সজীব আর সুন্দর হয়ে তৈরি হতে পারেন।
[picture]
(১) ক্লিঞ্জিং
শুরুতেই ত্বকের ধরনের সাথে মিলিয়ে ক্লিঞ্জিং দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে মুখে গরম গরম ভাপ নিয়ে নিন। গরম ভাপে আপনার ত্বকের লোমকূপ খুলে দিবে। ভাপ নেয়া শেষে আবার ক্লিঞ্জার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। অতিরিক্ত ব্রণ থাকলে ভাপ নেবার প্রয়োজন নেই।
(২) ক্রিম ম্যাসাজ
আজকাল বাজারে অনেক ধরণের ফেসিয়াল মাসাজ ক্রিম পাওয়া যায় । আপনি আপনার পছন্দ মতো একটি কিনে বাসায় রাখতে পারেন। এরপর ফেসিয়াল ক্রিম যেটা আপনার ত্বকে সঠিক তা দিয়ে ১০ মিনিট ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করুন।
(৩) স্ক্র্যাবিং
এবার হাতের তালুতে স্ক্র্যাব নিয়ে তা আলতোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাসাজ করুন। একটি ছোট নরম তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে এই উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে মুখের স্ক্র্যাব মুছে ফেলুন। স্ক্র্যাবারের ক্ষেত্রেও একই কথা। অনেক ধরণের স্ক্র্যাবিং বাজারে আছে । আপনি যদি ঘরোয়া কোন উপাদান চান তাও করতে পারেন। চালের গুড়া, চিনি এগুলি আপনি স্ক্র্যাবিং করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন আর না চাইলে বাজারের কেনা স্ক্র্যাবিং দিয়েও করতে পারেন। ব্রণ থাকলে স্ক্রাবার ব্যবহার করবেন না ।
(৪) টোনিং
টোনিং করার জন্য আপনি বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন টোনার । ১ টেবিল চামচ ভিনেগার ও ১ টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন আপনার টোনা্নার । গোলাপ জল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকরী। তুলা দিয়ে টোনার মুখে লাগানোর সময় ঘষবেন না বা চোখের চারপাশে যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। টোনার ব্যবহার করার পর কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। দেখবেন ত্বক টান টান হয়ে উঠেছে।
(৫) ফেসিয়াল মাস্ক
এরপর ফেসিয়ালের জন্য একটি মাস্ক তৈরি করুন। পরিমান মতো শসা কুড়িয়ে, সেটা থেকে রস বের করে এতে চিনি মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রাখুন। এবার ত্বকে মাস্ক লাগিয়ে চোখের উপর শসা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখুন। আবার মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে এটিকে বেটে তার সাথে দুধ আর আমণ্ড বাদামের তেল মিশিয়েও আপনি মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন। এই মাস্ক মুখে মেখে ১০-১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পরিস্কার করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মুলতানি মাটির প্যাক ও ফেসিয়াল মাস্ক হিসেবে সহজেই ব্যবহার করতে পারেন।
এইতো হয়ে গেল আপনার ফেসিয়াল। পার্লারের অনেক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের চেয়ে ঘরোয়া ফেসিয়াল কিন্তু কোন অংশে কম নয়। উপরের স্টেপগুলো সম্পন্ন করে আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ভালো ময়েশ্চারাইজার মুখে মেখে নিন।দেখুন পার্লারের মতই হয়ে গেল আপনার ঘরে বসে নিজে নিজে ফেসিয়াল করা।
ছবি – সোলতানা.এমএ
লিখেছেন – রোকসানা আকতার