নিজেকে একটু গোছানো ও সুন্দর দেখাতে কে না চায় বলুন? আর নিজেকে প্রেজেন্টেবল দেখানোর জন্য একটু হলেও মেকাপ ব্যবহার করা হয় প্রায় সবারই। কিন্তু কোথাও যাওয়ার সময় খুব তাড়াহুড়ো করে মেকাপ করার সময় কিছু একটা গড়বড় লেগেই যায়। ঝটপট মেকাপটা পারফেক্ট করার জন্য কিছু প্রফেশনাল ট্রিকস জেনে নেয়াটা জরুরি। তাহলে খুব অল্প সময়েই একেবারে পারফেক্ট মেকাপ করতে পারবেন আপনি। জেনে নিন, মেকাপের ব্যাপারে কিছু টিপস অ্যান্ড ট্রিকস।
(১) স্মোকি আই
পারফেক্ট স্মোকি আই পেতে চাইলে আপনার আইলিডের কিনারের দিকে আইলাইনার পেনসিল দিয়ে এঁকে নিন হ্যাসট্যাগ (#)। এবার ছোট একটি মেকাপ স্পঞ্জ ব্যবহার করে আইলাইনার পেনসিলে আঁকা হ্যাসট্যাগটি ভালো করে মিশিয়ে স্মোকি লুকটা নিয়ে আসুন। খেয়াল রাখবেন স্পঞ্জ দিয়ে মেশানোর সময়ে স্ট্রোকগুলো যেন ভেতর থেকে বাহিরের দিকে দেয়া হয়। তাহলে বেশ সুন্দরভাবে মিশে যাবে আপনার আইলাইনারের দাগগুলো।
(২) ডার্ক সার্কেল কমানো
অনেকেরই চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল আছে। আর এই ডার্ক সার্কেল কমানোর জন্য কনসিলার ব্যবহার করা হয় প্রায় সবারই। কিন্তু কনসিলার সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার না করলে চোখের নিচের ত্বকটা মুখের বাকি ত্বকের থেকে একটু আলাদা দেখায় এবং মেকাপটা ঠিকমত মেশে না। কনসিলার ব্যবহারের সময়ে স্ট্রোকগুলো ট্রায়াঙ্গালভাবে দিন। চোখের কোণা থেকে চিকবোনের দিকে স্ট্রোকগুলো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এতে আপনার ডার্ক সার্কেল অনেকটাই কম দেখাবে এবং আপনার মেকাপটাও ফ্রেশ দেখাবে।
(৩) আই ওপেনার
একজোড়া নজর কাড়া চোখ পুরো মেকাপটাকেই বদলে দিতে পারে। আর তাই চোখ দুটোকে আরো বড় আর উজ্জ্বল দেখানোর জন্য নিচের আইলিডে সাদা কাজল ব্যবহার করুন।
(৪) সঠিকভাবে কনসিলিং
কনসিলার ত্বকে দেয়ার সাথে সাথেই মিশিয়ে ফেলার বদলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। অল্প কিছু সময় অপেক্ষা করার পর কনসিলারটা ভালো করে মিশিয়ে নিন ত্বকে। এতে ত্বকের খুতগুলো আরো ভালো করে ঢেকে যাবে এবং অনেকক্ষণ ঠিক থাকবে মেকাপটা।
(৫) মাশকারা শেষ হয়ে গেলে
আপনার শখের মাশকারাটি শেষ হয়ে গেছে? সমস্যা নেই। অল্প কয়েকফোটা কন্টাক্ট লেন্সের সলিউশন মিশিয়ে মাশকারার ব্রাশটি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে এবং ঝাকিয়ে নিন। এবার মাশকারাটি ব্যবহার করে করতে পারবেন অনায়েসেই। অনেক সময়ে মাশকারা শুকিয়ে একটু জমে যায়। সেই এক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে পারেন।
(৬) ‘X’ মার্ক
লিপস্টিক লাগানোর সময়ে ঠোটের শেপটাকে আরো আকর্ষণীয় এবং নিখুত করে তোলার জন্য উপরের ঠোটের মাঝের ভাজটাতে ‘X’ মার্ক এঁকে নিন লিপ লাইনার দিয়ে। এভাবে এঁকে নিলে লিপস্টিক লাগাতে বেশ সুবিধা হবে আপনার।
(৭) লিপস্টিক বেশিক্ষণ ঠিক রাখতে
পুরো মেকাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পর লিপস্টিক লাগিয়ে এর উপর একটা পাতলা টিস্যু পেপার ধরুন। এবার তার উপর একটি ব্রাশ দিয়ে হালকাভাবে কিছু পাউডার লাগিয়ে নিন। এই পদ্ধতিটিতে আপনার লিপস্টিক ঠোটের বাইরে ছড়াবে না এবং লং লাস্টিং হবে।
(৮) হেয়ারলাইন ঘন দেখাতে
অনেকেরই মাথার তালুতে চুল কমে গিয়ে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে একই যায়গায় সিঁথি করার কারণে হেয়ারলাইন চওড়া হয়ে গেছে। চওড়া সিঁথির সমস্যা এড়াতে মিডিয়াম সাইজের আইশ্যাডো ব্রাশ দিয়ে চুলের রঙ এর আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন চুলের গোড়ায়। এতে চওড়া হেয়ারলাইনের সমস্যাটি অনেকটাই এড়ানো যাবে।
(৯) গাঢ় আইলাইনার
আইলাইনার পেনসিলটিকে জেল আইলাইনারের মতো গাঢ় করতে চাইলে একটি লাইটার বা মোমবাতির শিখায় ১ সেকেন্ড এর জন্য ধরে রাখুন। এরপর ঠান্ডা হওয়ার জন্য ১৫ সেকেন্ড সময় দিন। এরপর চোখে আইলাইনার পেনসিলটিকে ব্যবহার করলে জেল আইলাইনারের মতো গাঢ় রঙ পাবেন।
(১০) হেয়ার হোল্ড
যেকোনো হেয়ার স্টাইল করার জন্য সবচাইতে ভালো বন্ধু হলো ববি পিন। কিন্তু ববি পিন ব্যবহারের কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায় পিনটি যায়গা থেকে সরে গিয়ে হেয়ারস্টাইলটিকে নষ্ট করে ফেলেছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ববি পিনটি ব্যবহারের আগে একটু হেয়ার স্প্রে বা ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করে নিন। এবার ব্যবহার করলে ববি পিনটি একদম যায়গামতই থাকবে।
(১১) আইশ্যাডো বেস
আইশ্যাডোকে উজ্জ্বল দেখানোর জন্য আইলিডে ব্যবহার করুন সাদা কাজল। এতে আইশ্যাডোটির বেস তৈরি হবে এবং যেকোনো অনুজ্জ্বল আইশ্যাডোও আপনার চোখে বেশ উজ্জ্বল দেখাবে এবং ভালোভাবে বসবে।
(১২) ড্রাই শ্যাম্পু
অনেকের মাথার তালুর ত্বকই বেশ তৈলাক্ত। তাই আগের দিন শ্যাম্পু করলেও পরের দিনই অনেকের চুল বেশ তেলতেলে হয়ে যায় এবং চুলের ভলিউম কমে যায়। এই সমস্যার সমাধান করতে পারে ড্রাই শ্যাম্পু। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই চুলটা ভলিউমাইজড হবে এবং চুলের তৈলাক্ত ভাবটা অনেকটাই কমে যাবে। ফলে আপনার ‘ব্যাড হেয়ার ডে’ কে আপনি নিমিষেই ‘গুড হেয়ার ডে’ করে ফেলতে পারবেন।
ছবি – ডিপ্লি ডট কম, ট্রেন্ডিংনিউজবাজার ডট কম,
লিখেছেন – নুসরাত শারমিন