পরিবেশগত দূষণ, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য, ত্বক ঠিকঠাক মতো পরিষ্কার না করতে পারা, হরমনাল প্রব্লেম ইত্যাদি নানান কারণে ব্রণ, র্যাশ আমাদের নিত্যকার অনাকাঙ্ক্ষিত সঙ্গী। চাইলেও ব্রণের গর্ত র্যাশ পোরস লালচে ভাব এড়িয়ে থাকা যায় না সহজে। কিছু মানুষের স্কিন তো এতটাই সেন্সসিটিভ যে খুব অল্পতেই ব্রণ উঠে যায়! একবার ব্রণ হলে দূর করা যায় ঠিকই কিন্তু যাওয়ার আগে মুখে তার দীর্ঘমেয়াদী বিদঘুটে ছাপ রেখে যায় যা মুখের সৌন্দর্য্যকে পুরোপুরিভাবে নষ্ট করে দেয়। আপনি যতই সাজুগুজু করেন না কেন মুখে যদি ব্রণের গর্ত র্যাশ পোরস কিংবা লালচে ভাব থাকে তবে আপনার পুরো সৌন্দর্য্যটাই মাটি হবে। তবে এটুকুনি পড়েই ঘাবড়ে যাবেন না যেন! সমস্যা যদি থাকে তবে তার সমাধানও আছে। আজকে আমি আপনাদেরকে জানাব কীভাবে এই সমস্যাগুলো থেকে আপনি সহজেই মুক্তি পেতে পারবেন। একটু যদি ঠিকঠাক মত যত্ন নেওয়া যায় তাহলে এই প্রব্লেমগুলো দূর হবে সহজেই। সাথে স্কিনেও আসবে ব্রাইটনেস।
আমি আজ খুবই সহজ কিন্তু ভীষন এফেক্টিভ তিনটি পদ্ধতি এখানে তুলে ধরছি যা আপনারা ঘরে বসে সহজেই ফলো করতে পারবেন। তিনটি উপায় থেকে যার যেটি ভালো লাগে ও স্যুইটেবল মনে হয় সেই পদ্ধতিটি ফলো করবেন।
ব্রণের গর্ত, র্যাশ, পোরস, লালচে ভাব দূর করার প্যাক
(১) হলুদ ও লেবুর প্যাক
এক চা চামচ লেবুর রস নিন। এরসাথে মেশান এক চা চামচ হলুদ। আপনি চাইলে কাচা হলুদ কিংবা গুড়ো যে কোনটাই ব্যবহার করতে পারেন। এবার এই দুটি উপকরণকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ভালো করে ধুয়ে প্যাকটি মুখে সব জায়গায় সমান করে লাগান। বিশ মিনিট পরে মুখ নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর ময়েশ্চারাইজার ক্রিম অথবা লোসন লাগিয়ে নিন।
– প্যাকটি লাগিয়ে অর্থাৎ মুখে লাগানো অবস্থায় চুলার কাছে যাবেন না।
– হলুদ এবং লেবু দুটি উপাদানই ফটোসেন্সিটিভ উপাদান তাই চেষ্টা করবেন প্যাকটি রাতে ঘুমানোর আগে লাগাতে।
– এটি আপনার স্কিনের রেডনেস, পোরস, ব্রণের গর্ত এবং এবং র্যাশ দূর করবে খুবই এফেক্টিভ-ভাবে।
টানা দুই সপ্তাহ লাগাবেন। এরপর চাইলে প্যাক টি কন্টিনিউ করতে পারেন। কারন এটি আপনার স্কিনের ব্রাইটনেস বাড়াবে ভীষনভাবে। তিন দিন লাগানোর পর থেকেই পরিবর্তন বুঝতে পারবেন এবং স্কিনের প্রতি ভালো লাগা জাগবে আপনার।
(২) টক দই, লেবুর খোসা এবং গোলাপজল
একটি বাটিতে এক চা চামচ টক দই, এক চা চামচ লেবুর খোসা বাটা এবং সামান্য একটু গোলাপজল নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এটি মুখে লাগিয়ে রাখুন পুরোপুরি না শুকানো পর্যন্ত। পুরো শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি পোরস, গর্ত ইত্যাদি দূর করার সাথে সাথে আপনার স্কিনকে সুপার হাইড্রেট, ময়েশ্চারাইজ এবং সুপার স্মুদ করবে। স্কিনের গ্লো বাড়াবে।
– লেবুর খোসা ব্রণ সৃষ্টিকারি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, স্কিনের রঙ হালকা করে, সান ট্যান দূর করে এবং এটি একটি খুব ভালো এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান।
– গোলাপজল স্কিনের পোরস ছোট করতে সাহায্য করে।
– টক দই স্কিনকে ঠান্ডা রাখে এবং রেডনেস কমায়। এক মাস টানা করুন। নিজের স্কিনের প্রেমে পরে যাবেন নির্ঘাত।
(৩) ডিমের সাদা অংশ এবং লেবুর রস
একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। এর সাথে মেশান এক চা চামচ লেবুর রস। ভালো করে মিক্স করুন। এবার এটি মুখে লাগান সমান করে। শুকাতে দিন পুরোপুরি। মুখে টান ধরবে যখন তখন পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন যেন মুখে একটুও থেকে না যায়।
– মুখ উজ্জ্বল হবে, টানটান হবে, পোরস ছোট হবে, গর্ত চলে যাবে।
– সপ্তাহে ৩-৪ দিন করে লাগান এক মাস পর্যন্ত।
যে কোন প্যাক লাগানোর পরই মুখ প্রচুর পানি দিয়ে ধুতে হয়। তাহলে মুখে কিছু থেকে যাবার সম্ভাবনা থাকে না। মুখ ভালোভাবে ক্লিন হয়।
অনেকেই আছেন যারা সানব্লক লাগানোটাকে প্রয়োজনীয় মনে করেন না।কিন্তু স্কিন ভালো রাখার জন্য, স্কিনের অকালে বুড়িয়ে যাওয়া, কুঁচকে যাওয়া রোধ করার জন্য রেগুলার সানব্লক ব্যবহারের অভ্যাস করা খুবই জরুরি।
ছবি – অলরেমেডিজ ডট কম