সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন হয় ভালো ঘুমের। শুধুমাত্র ঘুম না হওয়ার কারণে দেখা দিতে পারে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। ইনসোমেনিয়া বা অনিদ্রা সমস্যায় যারা ভোগেন তারা জানেন এই সমস্যা কতটা ভয়ংকর। বিশেষজ্ঞদের মতে একজন সুস্থ মানুষকে দিনে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। অথচ অনিদ্রা সমস্যা যাদের আছেন, তারা ৫-৬ ঘন্টাও ঠিকমত ঘুমাতে পারেন না। ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকেই স্লিপিং পিল খেয়ে থাকেন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই হোক বা পরামর্শ ছাড়াই হোক স্লিপিং পিলের রয়েছে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তাই ঘুমানোর জন্য স্লিপিং পিলের উপর নির্ভর না করাই উচিত। স্লিপিং পিলের পরিবর্তে আপনি কিছু খাবার খেতে পারেন। এই খাবারগুলো আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে। এমন কিছু খাবারের সাথে আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব।
(১) দুধ
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করুন। দুধে থাকা অ্যামিউনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে সেরোটিন নামক উপাদান তৈরি করে যা ঘুম আনতে সাহায্য করে। এছাড়া দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা স্ট্রেস কমিয়ে নার্ভ শান্ত রাখে। দুধের পরিবর্তে আপনি টকদই এবং চিজও খেতে পারেন।
(২) কলা
পুষ্টিবিদ বায়োকেমিস্ট শন ট্যালবট বলেন ‘ঘুম না আসলে একটি কলা খেয়ে নিন, কলার পটাশিয়াম মস্তিষ্ককে রিলাক্স করতে সহায়তা করে’। কলার ম্যাগনেসিয়ামও আমাদের মাংসপেশি শিথিল করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। এক কাপ দুধের সাথে একটি পাকা কলা মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করে নিতে পারেন। এই স্মুদি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে নিয়মিত পান করুন।
(৩) কাঠবাদাম
জার্নাল অফ ওর্থোমোলিকার গবেষণায় দেখেছে যে, দেহে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কমে গেলে অনিদ্রা সমস্যা দেখা দেয়। কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা আপনাকে ভালো ঘুম দেবে তার সাথে মাথাব্যথা সারিয়ে তুলবে।
(৪) চেরি ফলের রস
এক গ্লাস চেরি ফলের রস আপনাকে দ্রুত ঘুম পাড়িয়ে দেবে। রাতের খাদ্য তালিকায় এক গ্লাস চেরি ফলের রস পান করার চেষ্টা করুন।
(৫) মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু পটাশিয়ামের একটি অন্যতম উৎস যা আমাদের মাংসপেশি, নার্ভ শিথিল করতে কাজ করে। নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট শন ট্যালবট বলেন, ‘মাত্র অর্ধেকটা পরিমাণে মিষ্টি আলু ঘুমের জন্য অনেক ভালো কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম’।
(৬) মাশরুম
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি, পটাসিয়াম, সেলিনিউম রয়েছে। আধা কাপ রান্না করা মাশরুম প্রতিদিনের ১/৩ সেলিনিউমের অংশ পূরণ করে। এছাড়া ভিটামিন বি২ এবং ভিটামিন বি৩ রয়েছে। পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার সাথে সাথে এটি ঘুমাতে সাহায্য করে।
(৭) মধু
বিশুদ্ধ মধুতে প্রচুর গ্লুকোজ রয়েছে যা আপনার মস্তিষ্কের ওরেক্সিন নামক উপাদানে প্রভাব ফেলে। যা আপনাকে রিল্যাক্স করে ঘুমাতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত মধু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এক টেবিল চা চামচ মধু ঘুমানোর জন্য যথেষ্ট।
ছবি – পিক্সাবে ডট কম
লিখেছেন – লিন্নি