চুলের যত্ন নেয়া আজকাল বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে। মেয়ে কিংবা ছেলে সবাই চুল সচেতন। টাক মাথার ছেলে যতই পাত্র হিসেবে ৯৯% ভালো হোক, ওই এক অংশ-ই ধ্বংস করে দেবে সব সম্ভাবনা। মা বাবারাও আজকাল সুন্দর পাত্রই চায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে তো আরো বেশি। “তোমার চুলে হারিয়ে যায় মন” এ কথাটি কোন প্রেয়সী তার প্রিয় জনের কাছ থেকে শুনতে চাইবে না?আগা ফাটা, চুল পড়ে যাওয়া আজকালকার সব মেয়েদের-ই সমস্যা। কিন্তু আমরা কি জানি যে একটু যত্নশীল হলেই এড়ানো যাবে চুল পড়া ও চুলের আগা ফাটার কারণ খুঁজে সমাধান করা? এতে আপনি হয়ে উঠবেন আত্মবিশ্বাসী। ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা যাক-
চুলের আগা ফাটার কারণ
১. রুক্ষতা
২. চুলে পুষ্টির অভাব
৩. অতিরিক্ত চুল আঁচড়ানো
৪. ময়লা
৫. নিয়মিত চুলের আগা না কাটা
৬. সুষম খাদ্য না খাওয়া
চুলের আগা ফাটার কারণ তো জানলেন। এবার আসুন জেনে নিই চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে কি কি করনীয় আছে আমাদের যা চুল পড়া রোধ করবে –
স্বাভাবিক সচেতনতা
আমরা কারণে অকারণে অনেক বার চুল আঁচড়াই। অনেক সময় ভেজা চুলে জোরে জোরে আঁচড়ালে ফেটে যেতে পারে চুলের আগা। খুব যত্নের সাথে ধৈর্য নিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে। মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করলে ভালো। কখনো খুব জোর দিয়ে চুল আঁচড়ানো যাবে না। জট হলে তেল বা স্মুথেনিং ক্রিম দিয়ে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন গোসল না করলেও চুল ধুতে হবে এবং তা অবশ্যই তা ঠাণ্ডা পানিতে। মাঝে মাঝে ডিম, লেবু ,পাকা কলা বা মিক্স প্যাক দিলে চুলে জট কম বাঁধবে। চুল অযথা ভাঙ্গা থেকেও পাবে মুক্তি। স্কার্ফ ব্যবহার করলে চুল ময়লা থেকে রক্ষা পাবে। রুক্ষতা থেকেও মুক্তি পাবে। কিন্তু অতি গরমে সচেতন থাকতে হবে যেন চুলের গোঁড়ায় ঘাম জমে চুল পড়ে না যায়।
খাদ্যদ্রব্য
খাদ্যের মাধ্যমেও চুল ফাটা বন্ধ করা যায়। চুল ফাটার একটি প্রধান কারণ হলো পুষ্টির অভাব। প্রশ্ন হতে পারে চুলের কি কি প্রয়োজন? যেহেতু প্রোটিনের অভাবে চুল মলিন হয়ে যায় তাই দুধ, ডিম, মাছ ও মাংস খেতে হবে নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কখনো কখনো মিনারেলেরও প্রয়োজন হতে পারে, এজন্য মিনারেল সমৃদ্ধ ভিটামিন যেমন সুপারভিট এম ক্যাপসুল প্রতিদিন একটা করে ২/৩ মাস খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল-ও চুলের জন্যে খুব উপকারী। খুব ভালো সমাধান চাইলে এটি ৬ মাস খেয়ে দেখতে পারেন।
যা করা যাবে না
আসলে সত্যি বলতে যত বেশি ন্যাচারাল থাকা যায় ততই ভালো। চুলে হিট দিয়ে যে কোন কিছু করা যেমন আয়রন করা, হেয়ার ড্রাই করা এগুলো সত্যিকার অর্থেই চুলের আগা ফাটাতে ভূমিকা রাখে। তাই সাময়িক সৌন্দর্যের জন্যে মূল্যবান চুল হারাবেন না।বেশি রাত জাগা যাবে না। সাপ্লাই এর পানিতে অনেক সময় ক্লোরিন এবং আয়রন থাকে। অনেক সময় বালতির তলাও দেখা যায় না। এমন হলে গোসল করাই বাদ। পরিষ্কার পানি দিয়েই চুল ধুতে হবে।
আগা ফেটে গেলে করণীয়
চুলের ফাটা আগাগুলো বেঁছে কেটে ফেলতে হবে। তা না হলে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে। আগা সমান করে কেটে যত্ন নিতে হবে, ওয়েল ম্যাসাজ করতে হবে। ভালো কোনো পার্লার থেকে প্রোটিন থেরাপি নিলে উপকার পাবেন। তাছাড়া চা এর লিকারও বেশ ভালো ফল দিতে পারে। টক দই বিশেষ উপকারী। মেহেদি চুলকে শক্ত ও দৃঢ় করে। কাজেই চুলের ফাটা রোধে এটিও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
তাই খুব যত্নের সাথে সময় নিয়ে চুলের পরিচর্যা করুন।সুস্থ,ঝলমলে ও সুন্দর চুল আপনার আত্মবিশ্বাস কে বাড়াবে বহুগুণ!কলেজের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় মুখ হতে কে না চায়?ভালোবাসুন আপনার চুলকে।সুন্দর থাকুন!
ছবি – সংগৃহীতঃ ইমেজেসবাজার.কম