মুখের ত্বক ব্রাইট হলেও ঘাড়ের ত্বক কালো! এমন অবস্থায় মেকাপ করলেও যেন এই পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। ঘাড়ের এরিয়াতে অনেক বেশি ঘাম হয় তাই এই এরিয়াটি মুখের ত্বকের থেকে বেশি কালো হয়ে যায়। তবে একটু এক্সট্রা কেয়ার নিলেই ঘাড়ের কালো দাগ দূর করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদান সবচেয়ে সেফ অপশন।
তবে সেটা হতে হবে কমপ্লিট একটি কেয়ার। তবেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব। আজকে আপনাদের ব্রাইট নেক’র কমপ্লিট কেয়ার সম্পর্কে জানাব। স্কিন কেয়ারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্টেপ বাই স্টেপ কীভাবে করবেন? এবং এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত উপাদানগুলো উপকারিতা সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে স্ক্রাব
- ১ টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল
- ১/২ টেবিল চামচ বেকিং পাউডার
- ১ টেবিল চামচ কফি গ্রেড করা
- ১/২ ভিটামিন সি ট্যাবলেট
কিভাবে বানাবেন স্ক্রাবটি?
প্রথমে একটি পাত্রে কোকোনাট অয়েল নিন। এতে পরিমাণ মতো গ্রেডেড কফি ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এবার এই মিশ্রণে বেকিং পাউডার দিয়ে আবার মিক্স করুন। এবার ভিটামিন সি ট্যাবলেট গুঁড়ো করে নিন। ব্যস তৈরি হয়ে গেল ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে নেক ব্রাইটেনিং স্ক্রাব।
এই স্ক্রাবটি আলাদা করে রেখে দিন। এখন প্যাক তৈরি করব আমরা। চলুন দেখে নিই কী কী লাগছে –
- ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল
- ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ১ চা চামচ কোকোনাট মিল্ক
- ১/২ চা চামচ লেবুর রস
কিভাবে বানাবেন স্ক্রাবটি?
আগের মতই আরেকটি পাত্রে কোকোনাট মিল্ক, হলুদ গুঁড়া এবং লেবুর রস মিক্স করে নিন। এবার এতে অ্যালোভেরা জেল দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করুন। ঠিক পেস্টের মতো চাইলে আপনি ব্লেন্ডারে সব উপকরণ দিয়ে মিক্স করে নিন।
ব্যস, স্ক্রাব এবং প্যাক তৈরির ঝামেলা শেষ এবার অ্যাপ্লাই করার পালা। এখানে পুরো প্রক্রিয়াটি স্টেপ বাই স্টেপ বলছি।
ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে স্টেপস
১ম স্টেপ
গরম পানিতে একটি টাওয়েল চুবিয়ে চেপে নিন। এই টাওয়েল পুরো ঘাড়ে পেঁচিয়ে নিন। এভাবে রাখবেন ৫ থেকে ৭ মিনিট। এতে করে পোরগুলোর মুখ খুলে যাবে এবং ভেতর থেকে ময়লা বের করে আনতে পরবর্তী স্টেপগুলোকে সাহায্য করবে।
২য় স্টেপ
এবার আগে থেকে বানিয়ে রাখা স্ক্রাব পুরো ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করতে থাকুন। খুব বেশি প্রেশার দিয়ে ম্যাসাজ করবেন না এতে করে স্কিন ড্যামেজ হতে পারে। ১০ মিনিট ম্যাসাজের পর হালকা গরম পানি দিয়ে ঘাড় ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
৩য় স্টেপ
এবার প্যাক শুকনো গলা এবং ঘাড়ে ব্রাশের সাহায্যে লাগিয়ে নিন। শুকাতে সময় দিন। ১৫ বা ২০ মিনিট পরে শুকিয়ে গেলে আবার হালকা গরম পানি দিয়ে প্যাক তুলে ফেলুন।
৪র্থ স্টেপ
পরিষ্কার গলায় এবার ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি প্রতি সপ্তাহে ১ বার করে করুন। তারপর পার্থক্য চোখে পড়তে শুরু করবে।
ব্রাইট নেক’র কমপ্লিট কেয়ারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তো জেনে নিলেন। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক, এই প্যাক এবং স্ক্রাবারে ব্যবহৃত উপকরণগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে।
বেকিং পাউডার
স্কিন এক্সফলিয়েটর হিসেবে দারুণ একটি উপাদান বেকিং পাউডার। বেশির ভাগ সময় স্কিন কেয়ারের ক্ষেত্রে বেকিং সোডার ব্যবহার করার কথা বলা হয়ে থাকলেও বেকিং সোডা ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সেদিক থেকে বেকিং পাউডার একটি সেফ অপশন। বেকিং পাউডার স্কিনে কোন রকম ক্ষতি করা ছাড়াই স্মুদলি এবং ডিপ্লি ক্লিন করে। পিগমেন্টেশন রিমুভ করতে বেকিং পাউডারের জুড়ি নেই।
কফি
খুব ড্রাই স্কিনকে স্মুদ এবং প্রাণবন্ত করে তুলতে কফি বেশ কার্যকরি। এটি প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস উপাদানে সমৃদ্ধ। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এর নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
ভিটামিন সি
ভিটামিন সি ত্বক ফর্সাকারি উপাদানে সমৃদ্ধ। এটি ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি-এজিং প্রপার্টিজ ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও ত্বকের পিগমেন্টেশন রিমুভের সাথে সাথে ডার্ক স্পট এবং সান বার্ন কমাতেও সাহায্য করে।
কোকোনাট মিল্ক এবং কোকোনাট অয়েল
কোকোনাট মিল্ক এবং কোকোনাট অয়েল এই দুটোই ক্লিঞ্জার হসেবে বেশ ভালো কাজ করে। এই দুটি উপকরণ ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে থাকে। কোকোনাট অয়েল ত্বকে ন্যাচারাল গ্লো এনে দেয়।
অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল ত্বককে হাইড্রেড করে এবং এতে থাকা প্রাকৃতিক কুলিং এজেন্ট ত্বকে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
লেবু
ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া, ডার্ক স্পট এবং পিগমেন্টেশনের মতো স্কিন প্রব্লেমের বিরুদ্ধে কাজ করে। ত্বককে ন্যাচারালি ফর্সা করতে সাহায্য করে লেবু। এছাড়াও ঘাম নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে ত্বককে ফ্রেশ রাখতে সাহায্য করে।
হলুদ
হলুদে থাকা অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ব্রণের সমস্যা কমায় ন্যাচারালি। ত্বকের বয়স ধরে রাখতে এবং স্কিনের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি আপনার কালো ঘাড়কে ব্রাইট করতে সাহায্য করবে। তবে কমপক্ষে ২ মাস নিয়মিত ব্যবহার করুন। এখানে যেহেতু সব প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে তাই চাইলে আপনি এটি কন্টিনিউ করতে পারেন।
ছবিঃ সংগৃহীত – সাজগোজ.কম, সাটারস্টক