“আপু আমি তো কোন মেকাপ-ই ব্যবহার করি না, শুধু ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন, পাউডার আর লিপবাম! তবুও স্কিনে দেখেন কেমন গুটি গুটি দানা বের হচ্ছে, ব্রণ হচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে?”
কারণ আপনি স্কিনটাকে সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে পারছেন না। আপনি শুধু ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুচ্ছেন, কিন্তু প্রপার ক্লেঞ্জিং যেটাকে বলে সেটা করছেন না। আপনি কোন মেকাপ সামগ্রী ব্যবহার করেন, বা নাই করেন, প্রতিদিন আপনার স্কিনে যে ধুলোবালি লাগে, আপনি যে ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন টা ব্যবহার করছেন সেটার রেসিডিউ কিন্তু স্কিনে থেকেই যাচ্ছে। ফলে আপনার রোমকূপগুলো ক্লগড হচ্ছে, আর ফলাফলস্বরূপ ব্রণ বের হচ্ছে।
[picture]
আজকে যে প্রোডাক্ট টার রিভিউ লিখতে বসেছি সেটা আমি অনেকদিন ধরে ব্যবহার করছি। আমি যেহেতু প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার করি, সেটা ভালোভাবে স্কিন থেকে তোলার জন্য এই জিনিসটার বিকল্প আমি অন্ততপক্ষে এ পর্যন্ত পাইনি। স্কিনফুড ব্র্যান্ডের নাম তো এখন সবাই নিশ্চয়ই মোটামুটি শুনেছেন। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ডটি পাওয়ারফুল ফুড ইনগ্রিডিয়েন্ট দিয়ে তৈরি স্কিনকেয়ার সলিউশনস বের করার জন্য বিখ্যাত। কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টস এর জগতে খুব বিখ্যাত এই ব্র্যান্ডটির প্রোডাক্ট গুলো এখন আমাদের দেশেও পাওয়া যাচ্ছে। এই ব্র্যান্ডেরই awesome একটি প্রোডাক্ট হলো ব্ল্যাক সুগার পারফেক্ট ক্লেঞ্জিং অয়েল।
সুগার যে খুব ভালো একটা এক্সফোলিয়েটর সেটা তো আমরা সবাই কমবেশি জানিই। স্কিনফুডের এই ব্ল্যাক সুগার ক্লেঞ্জিং অয়েলের ব্ল্যাক সুগার ব্রাজিলের সবচেয়ে লিডিং প্রডিউসারের কাছ থেকে আমদানী করে এই অয়েলটা তৈরি করা হয়। এই ব্ল্যাক সুগার একেবারেই আনরিফাইন্ড, ভিটামিনস আর মিনারেলস সমৃদ্ধ। ব্ল্যাক সুগার ন্যাচারাল হিউমিকট্যান্ট, তার অর্থ হচ্ছে আপনি যখন আপনার স্কিনকে এই অয়েলটা দিয়ে পরিষ্কার করছেন, এক্সফোলিয়েট করছেন, তখন এর ব্ল্যাক সুগার কন্টেন্ট আপনার স্কিনের ন্যাচারাল ময়েশ্চার লেভেলকে ধরে রাখতে সহায়তা করবে। যেটা অ্যান্টি এইজিং এর ক্ষত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আর এতে থাকা বোটানিক এসেনশিয়াল অয়েলগুলো আপনার স্কিনকে ডিপলি পরিষ্কার করে রিজুভিনেট করতে সাহায্য করে।
প্যাকেজিং
গাঢ় খয়েরী রঙের প্লাস্টিকের বোতলে ২০০ এম এল এর প্যাকেজিং এ আসে বোতলটি। অয়েলটা বের করার জন্য উপরে কালো রঙের পাম্প দেয়া যাচ্ছে, ফলে প্রোডাক্ট ওয়েইস্টেজের সম্ভাবনা কম। আপনার যতটুকু অয়েল লাগবে ঠিক ততটুকুই পাম্পের সাহায্যে বের করে নিবেন।
কনসিস্টেন্সি এবং কীভাবে ব্যবহার করবেন
বেশ ঘন এই অয়েলটি পাম্পের সাহায্যে যতটুকু দরকার ততটুকু বের করে নিয়ে আপনার পুরো মুখ এবং গলায় ভালোভাবে এক্সফোলিয়েট করে নিন। দুই-তিন মিনিট আস্তে আস্তে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। তারপর আপনার রেগুলার ফেইসওয়াশ ব্যবহার করে ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
প্রোডাক্টির যে যে দিকগুলো ভালো লেগেছে
(১) এর প্যাকেজিং, পাম্পের সাহায্যে প্রোডাক্ট বের করা যায় বলে প্রোডাক্ট ওয়েইস্টেজ একেবারেই হয় না।
(২) ব্ল্যাক সুগার এবং রিফাইন্ড রাইস ওয়াইন দ্বারা প্রস্তুতকৃত বলে স্কিন ফ্রেন্ডলি। এবং খুব ভালোভাবে স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করে স্কিন থেকে সবরকম মেকাপ এবং অন্যান্য স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টসের রেসিডিউ তুলে দিতে সক্ষম।
(৩) এতে অনেক ধরণের এসেনশিয়াল অয়েল আছে যেগুলোর বেনেফিট আমি একসাথে পাচ্ছি। এতে আছে জোজোবা অয়েল, অলিভ অয়েল, ইভনিং প্রিমরোজ অয়েল, ম্যাকাডেমিয়া টার্নিফোলিয়া সীড অয়েল, লেমন, অ্যাপল, পাপায়া, আর অরেঞ্জ ফ্রুট এক্সট্রাক্ট।
(৪) এটা প্রতিদিন ব্যবহার করি বলে আমাকে আলাদা করে কোন স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে হচ্ছে না। এতে থাকা ব্ল্যাক সুগার স্কিনের ডেডসেলস দূর করে স্কিনকে ব্রাইটেন করে তোলে।
(৫) এটা সবধরণের স্কিনে ব্যবহার করা যায়।
(৬) যেহেতু এটা একটা অয়েল বেইজড ক্লেঞ্জার, স্কিনে ভীষণ জেন্টেল। এবং এটি অ্যান্টি এইজিং এ ও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
(৭) আমি একটা বোতল মাস তিনেক আগে কিনেছিলাম, এখন প্রায় এক চতুর্থাংশ বাকি আছে। একটা বোতল কিনলে বেশ অনেকদিনই ব্যবহার করা যায়।
মূল্য এবং রেটিং
আমি ব্যক্তিগতভাবে একে রেটিং দিবো ৯/১০।
বাংলাদেশে খুব কম জায়গাতেই এটা পাওয়া যায়। আমি কিনেছিলাম যমুনা ফিউচার পার্কের শপ.সাজগোজ.কম থেকে। দাম নিয়েছিল ১,৩৫০ টাকা।
যারা স্কিনে ডেইলি ব্যাসিসে সানস্ক্রিন এবং মেকাপ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এই ক্লেঞ্জিং অয়েলটা নিঃসন্দেহে খুব ভালো একটা প্রোডাক্ট। আমার এখনকার বোতলটা শেষ হলে আমি আবার কিনবো, that is for sure!
লিখেছেন – ফারিন নাওয়াজ