“বাচ্চাটাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়াই লাগলো। বেশ অনেকদিন ধরে না খাওয়া-দাওয়া ঠিকঠাক মতো করছে, না অন্য কোন অ্যাক্টিভিটি। ডাক্তার বেশ কিছু টেস্ট করতে দিলেন। টেস্টের রিপোর্ট আসার পর জানা গেলো, রক্তে হিমোগ্লোবিন কম। ওর অ্যানিমিয়া হয়েছে, সহজ ভাষায় যাকে বলা হয় রক্তশূণ্যতা।”
উপরের এই ঘটনাটি কিন্তু এখন বেশ কমন একটি ঘটনা। বিশেষ করে বাচ্চার বয়স ৬ মাস – ১ বছর পার হলে যখন সে বুকের দুধ পান করা এবং আয়রন ফর্টিফাইড ফর্মুলা মিল্ক খাওয়া ছেড়ে দেয়, তখন দেখা যায় কি, আমরা অনেকেই বাচ্চার ডায়েটে প্রতিদিন যে পরিমাণ আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রাখা দরকার, সেটা রাখতে পারি না। ফলাফল = অ্যানিমিয়া।
[picture]
যারা প্রথমবার মা হয়েছেন, এবং রান্নাবান্না আর খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে একটু কম জানেন, তাদের জন্য আমার আজকের এই লেখাটি। আজকে আমি আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের দুটো রেসিপি শেয়ার করবো, যেটা বাচ্চারা ফিংগার ফুড হিসেবেও নিজে নিজে খেতে পারবে।
বিফবল
উপকরণ
- ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসের কিমা
- ১ টেবিল চামচ তরল দুধ
- দুটো মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কুঁচি
- ২ চা চামচ রসুন বাটা
- আধ চা চামচ আদা বাটা
- ১ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
- ১ চা চামচ জিরে গুঁড়ো
- ১টা কাঁচামরিচ কুচি (ঐচ্ছিক)
- ১টা ডিম
- ব্রেডক্রাম্ব / টোস্ট বিস্কিটের গুঁড়ো
- পরিমাণ মতো লবণ
- ভাজার জন্য তেল
২৫০ গ্রাম গরুর মাংসের কিমা, আদা বাটা, রসুন বাটা আর পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে দিয়ে অল্প পানিতে সিদ্ধ করে নিন। তারপর পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ কুঁচি, জিরে গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো আর তরল দুধ দিয়ে সবকিছু ভালোভাবে মিক্স করে ছোট ছোট বাইট সাইজের বলের আকারে গড়ে নিন। এবার এই বলগুলোকে একবার ফেটানো ডিমে, আরেকবার ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে নিন। রিপিট করুন। এবার একটা ছড়ানো প্লেট / ট্রেতে সবগুলো বল একে একে পাশাপাশি সাজিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। চাইলে এয়ারটাইট বক্সে ও সংরক্ষণ করতে পারেন। যখন বাচ্চার খাওয়ার সময় হবে তখন শুধু ডুবো তেলে গরম গরম ভেজে দিবেন। বাচ্চার বয়স যদি ১ বছরের বেশি হয়, তাহলে বল তৈরি করার সময় তাতে একটু চীজ ও দিতে পারেন। গরুর মাংসতে অনেক আয়রন আছে, আরো আছে ফসফরাস আর প্রোটিন, যা রক্তশূণ্যতা দূর করতে সহায়ক।
মিক্স ভেজিটেবল বল
উপকরণ
- ১টা কাঁচকলা
- ১টা আলু
- ১টা গাজর
- ২টা মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কুঁচি
- ২টা কাঁচামরিচ কুঁচি(ঐচ্ছিক)
- আধ চা চামচ সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো
- ১/৩ চা চামচ আদাবাটা
- ২ চিমটি হলুদ গুঁড়ো
- ১ চা চামচ জিরে গুঁড়ো
- ১টা ডিম
- লবণ (পরিমাণ মতো)
- ভাজার জন্য তেল
১টা করে কাঁচকলা, আলু আর গাজর ভালোভাবে গ্রেট করে অল্প পানিতে সামান্য লবন দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। পানিটা ছেঁকে তাতে পেঁয়াজ কুঁচি, কাঁচামরিচ কুঁচি, সাদা গোলমরিচের গুঁড়ো, আদা বাটা, হলুদ আর জিরে গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। ছোট ছোট বাইট সাইজের বলের আকারে গড়ে নিন। এবার এই বলগুলোকে একবার ফেটানো ডিমে, আরেকবার ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে নিন। রিপিট করুন। এবার একটা ছড়ানো প্লেট / ট্রেতে সবগুলো বল একে একে পাশাপাশি সাজিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। চাইলে এয়ারটাইট বক্সে ও সংরক্ষণ করতে পারেন। যখন বাচ্চার খাওয়ার সময় হবে তখন শুধু ডুবো তেলে গরম গরম ভেজে দিবেন। কাঁচকলা আয়রনের খুব ভালো একটি উৎস। আলুতে আছে কার্বোহাইড্রেট, আর গাজরে ভিটামিন এ।
তাছাড়াও নিয়মিত বাচ্চার ডায়েটে কোন না কোন আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন – মুরগির কলিজা, গরুর কলিজা, সিমের বিচি, ডাল, পালংশাক রাখতে চেষ্টা করবেন।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
মডেল – যারইয়াব
লিখেছেন – ফারহানা প্রীতি