টিকটিক শব্দে ঘুরছে ঘড়ির কাটা। সে তো ঘুরতেই থাকে! তবে কেন বলছি বলুন তো? ঠিক ধরেছেন! দক্ষিণা বায়ের হিমেল হাওয়া খবর দিয়েছে, শীতের বুড়িকে ঘুম পাড়িয়ে আসছে ঋতুর রাজা বসন্ত! সাজছে প্রকৃতি নানান বিচিত্র রঙে। নতুন পত্রে-পুষ্পে শোভিত হয়ে প্রকৃতি দূর করছে শীতের শ্রীহীনতা। বসন্ত রাজাকে বরণ করতে হবে উৎসবের আবহে। কি, আর তর সইছে না, তাই না? চারদিকের প্রকৃতির সাথে উৎসবে মুখরিত হতে মন যেন নেচে উঠছে। প্রকৃতি ঠিক সজীব হয়ে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আপনারও এবার প্রস্তুতির পালা! আজকাল প্রতিটি মানুষই নিজেকে গুছিয়ে চলতে চায়। তাই তাড়াহুড়ো করে বসন্ত বরণে না বেরিয়ে আগে থেকেই খানিকটা গুছিয়ে রাখুন না! কী পরবেন,কেমন সাজবেন… মোটকথা কেমন হবে পহেলা ফাল্গুনের সাজসজ্জা তা আগেই ভেবে রাখুন।
পহেলা ফাল্গুনের সাজসজ্জা যেমন হবে
১) শাড়িতে ফাল্গুনি সাজ!
বাঙালি ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আটপ্রৌড়ে করে বাসন্তী রঙা সুতি, তাঁতের টাটকা শাড়িতে নিজেকে জড়াতে পারেন বসন্ত বরণে। তবে প্রকৃতির রঙ বদলে সামিল হতে সবুজের বিভিন্ন শেড যেমন- কচি পাতা সবুজ, গাড় সবুজ ইত্যাদি রঙ বেছে নিতে পারেন। আবার হলুদ-কমলা গাঁদা ফুলের মতো প্রষ্ফুটিত হতে পারেন। এছাড়াও নিজেকে আবির্ভাব করতে পারেন সাদা শাড়িতে নানান রঙ-বেরঙের ঢংয়েও। আপনার পছন্দ মতন যে কোনটিতেই হয়ে উঠতে পারেন অপরূপা।
২) ফাল্গুনের পরিচ্ছদ কেমন হবে?
পোশাক তো গেল,পরিচ্ছদের কী হলো? পোশাকে- পরিচ্ছদে না মিললে তো একেবারেই চলবে না! শাড়ির সাথে চাই হাত ভর্তি রিনিঝিনি রেশমি কাঁচের চুড়ি। কপালে ভোর বেলার লাল সুর্যের মতো লাল রঙা টিপ আর খোপায় গাঁদার ফুল। গোলাপ, গাঁদার সাথে জারবেরাও এখন শোভা পায় কানের পাশেই।
খোপা না করলে, খোলা চুলে বা এক বেনুনীতে খারাপ লাগবে নাহ! বসন্ত বরণের পরিচ্ছদ মানেই ফুলের মালা আর মাথায় ফুলের মুকুট দিলে তবেই না হলেন বাসন্তী রানী!
গলায় ফুলের মালা না পরতে চাইলে আজকাল বাজারে কাঠ, পুতি, মাটি, মেটাল, পাথর বিভিন্ন ধরনের কারুকার্যময় কানের ও গলার সেট পাওয়া যায়। শাড়ির সাথে এই সেটগুলোও বেশ মানান সই কিন্তু! পায়ে চাইলে আলতা রাঙ্গিয়ে চলার ছন্দ আনতে পরে নিতে পারেন চিকন কাজের নুপুর।
৩) কি মেকআপ নিয়ে ভাবছেন?
প্রকৃতি যখন নিজে তার রঙ্গে আপনাকে সাজিয়ে দিচ্ছে সেখানে ভারি মেকআপ কি খুব দরকার বলুন? আর সারাদিনের মেলার ভিড়ে ভারি মেকআপ বেমানানও বটে। না! না! সাজতে মানা নেই তো! শুধু বলছি, বসন্ত রানীর সাজটা হোক স্নিগ্ধতায় পূর্ণ। মুখে বিবি বা সিসি ক্রিম কিংবা হালকা ফাউন্ডেশন, চোখের পাতায় হালকা রঙের আইশ্যাডো দিয়ে টেনে নিন কাজল ও আইলাইনার।
দেখুন তো আয়নায় তাকিয়ে আরও কিছু কি চাই? গালে চাইলে ব্লাশন দিতে পারেন। তবে অবশ্যই হালকা রঙের। এক্ষেত্রে হালকা গোলাপি বা ব্রোঞ্জ বেশ সুন্দর লাগবে। ঠোঁট রাঙাতে গোলাপি, কমলা, টেরাকোটার হালকা শেডই ভালো লাগবে। আর যদি গাঢ় রঙ খুব পছন্দ করে থাকেন তবে লাল লিপস্টিকই বাছুন।
শেষ করবার আগে পহেলা ফাল্গুনের সাজসজ্জা নিয়ে বলি আরেকটি কথা। পোশাক শাড়ি বা কামিজ যাই হোক না কেন সারাদিনের হাটাহাটির কথা মাথায় রেখে হিল না পরে ফ্ল্যাট জুতা পরাই বুদ্ধিমতির কাজ হবে। আর বেশি সময় নেই। বাকি কিছু সময়। শীঘ্রই শুনতে পাবেন কোকিলের কুহুউ কুহুউ ডাক। হয়তো সেদিন ফুলের ভ্রমর ঘুম ভাঙাতে বলবে-
“ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানী, ভোমরাটা গায় গান ঘুম ভাঙ্গানি!”
আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো প্রোডাক্ট কিনতে পারেন অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার এ অবস্থিত সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি!
ছবি- হাফিজ ইকবাল মাহমুদ; মডেল- তানজিনা আহমেদ জিনিয়া