বর্তমানে নারীরা সবক্ষেত্রে পুরুষদের সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে। কর্মক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। বরং নারীদের পুরুষদের চাইতেও বেশি পরিশ্রম করতে হয়। কারণ তাঁদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে কাজ করে ঘরে এসে আবার করতে হয় রান্নাবান্না, ছেলেমেয়েদেরকে সামলানোসহ সংসারের আরো নানান যাবতীয় কাজ। চাকরিজীবী নারীদের ফিট থাকা খুব বেশি প্রয়োজন এক্ষেত্রে। তাই চাকরিজীবী নারীদের নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য বিশেষভাবে যত্নবান হওয়া দরকার। কিন্তু চাকরিজীবী নারীদের ফিট থাকা কীভাবে সম্ভব হবে? চলুন, চাকরিজীবী নারীদের ফিট থাকা নিশ্চিত করতে ১০টি টিপস নিয়ে একটু না হয় জেনে নেয়া যাক।
চাকরিজীবী নারীদের ফিট থাকা নিশ্চিত করতে টিপস
১) কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা
প্রথমেই যেটি দরকার সেটি হচ্ছে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বানিয়ে নেওয়া। যা আপনাকে করতে হবে অফিস ও ঘরের কাজের মধ্যে সমন্বয় রেখে।
২) দিনের শুরুতে
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। সময়টি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে সংসারের যাবতীয় কাজ শেষ করে অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় থাকে।
৩) পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান
কাজের চাপে চাকরিজীবী নারীরা অনেক সময় পানি পান করতে ভুলে যান। যা তাঁদের পানিশূন্যতার কারণ হতে পারে। শুধু তাই নয়, এটি ইউরিন ইনফেকশনের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। তাই অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা খুবই জরুরি। প্রয়োজনে সঙ্গে পানির বোতল রাখুন।
৪) ব্যায়াম
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। হালকা ও মুক্ত হাতে ব্যায়াম করুন। এতে সারাদিন আপনার শরীর ও মন সজীব ও চাঙা থাকবে। অফিস থেকে ফিরে আসার পরও নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
৫) সুষম খাদ্য গ্রহণ
বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। আবার খাবার অতিরিক্ত কমও খাওয়া যাবে না। কারণ এতে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। খাবারের মধ্যে বৈচিত্র্য নিয়ে আসুন। খেয়াল রাখবেন আপনার খাবার তালিকায় ফল ও সবজি যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। নিয়মিত সুষম খাদ্যাভ্যাস আপনাকে সুষ্ঠ ও সবল রাখবে।
৬) হাঁটাহাঁটির অভ্যাস
অফিসে একটানা বসে কাজ না করে কাজের ফাঁকে একটু হাঁটাহাঁটি করার অভ্যাস করুন। দাঁড়িয়ে কাজ করার অভ্যাসও করতে পারেন। এটি আপনার শরীরকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করবে।
৭) সঙ্গে হালকা খাবার রাখুন
অফিসে দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা যাবে না। কারণ তা আপনার শরীরের অ্যাসিডিটিসহ বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। সবসময় নিজের সঙ্গে করে হালকা খাবার নিয়ে যাবেন। বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও বিস্কুট জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।
৮) নিয়ম করে ডাক্তার দেখান
ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে অনেক কর্মজীবী নারীরা ছোটখাটো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাকে অবহেলা করেন। এই ছোটখাটো স্বাস্থ্য সমস্যাই পরে বড় আকার নিতে পারে। তাই অবহেলা করবেন না। নিয়ম করে ডাক্তার দেখান ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।
৯) বিনোদন
সপ্তাহ শেষে ছুটির দিনটিতে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন বিনোদনের আয়োজন করুন। যেমন নতুন কোন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, সিনেমা দেখা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া, প্রিয় কারো সাথে দেখা করা ও আড্ডা মারা। বড় ছুটি পেলে দূরে কোথাও ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়তে পারেন। এটি কাজে আপনার একঘেঁয়েমি দুর করে নতুন উদ্যমে কাজ করার শক্তি জোগাবে।
১০) হাসিখুশি থাকুন
কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচকতার চর্চা যেমন সহকর্মীদের সঙ্গে পরচর্চায়, পরনিন্দায়, হতাশার কথায় অংশ নেবেন না। সম্ভব হলে এগুলোকে নিরুৎসাহিত করবেন। নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার কথা একান্ত বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করুন অথবা কোন মনোবিদের সহায়তা নিন। সবসময় হাসিখুশি থাকুন ও নিজের কাজকে উপভোগ করুন।
আসলে ব্যস্ততা এতটাই অবসন্ন করে রাখে যে, এই ব্যাপারগুলো না চাইতেও খেয়ালের বাইরে চলে যায়। তবুও নিজের খেয়ালটা কিন্তু নিজেকেই রাখতে হবে। নিউট্রিশন আর ফিটনেসে গরমিলটা এড়ানো গেলে কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনটাও উপভোগ্য হয়ে উঠবে। তাই চাকরিজীবী নারীদের ফিট থাকা নিশ্চিত করতে এই টিপস মেনে চলাটা জরুরী।
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক