হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়াম | কেন হয় অস্টিওপরোসিস, করণীয় কী?

হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়াম | কেন হয় অস্টিওপরোসিস, করণীয় কী?

হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়াম

হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়াম যে বিশেষ ভূমিকা রাখে তা কতটুকু জানেন? এ নিয়ে বিস্তারিত জানানোর পূর্বে আমার বড় আপু শাহজাবিনের কিছু কথা বলবো। সারাদিনের খাটাখাটনিতে নিজের খাবার পর্যন্ত ঠিক করে খান না। আর ছোটবেলা থেকেই ও একটু খাবার বেছে খেত। আর দুধ যেন ওর চোখের বিষ ছিল। তখন মা রেগে বলত-“এখন তো কথা শুনছিস না, মাঝ বয়স কী তার আগে আগেই টের পাবি দুধ না খেলে কী হয়!” এখন আপুর বয়স ৪০ বছর। তার যেন শরীরের প্রতি জয়েন্টেই ব্যথা। সিড়ি দিয়ে উঠতে কষ্ট হয় কারণ আপুর হাঁটু ব্যথা। একটুখানি আরাম করে নড়তে কি বসতে পারে না কারণ তার কোমরে ব্যথা। এত ঝামেলা কেন বলুন তো? আজ মনে পড়ে মায়ের সেই বকুনির কথা। চলুন দেখি কী কী কারণে হয় হাড়ক্ষয়? কিভাবে হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়াম করতে পারে সমাধান?

কেন হয় হাড়ক্ষয়?

নরমাল ও হাড় ক্ষয় হলে বোন দেখতে যেমন হয় - shajgoj.com

Sale • Breast Cream, Lotions & Creams

    বয়সের সাথে সাথে হাড়ক্ষয় একটি অবধারিত বিষয়। বিশেষ করে মহিলাদের শরীরে ক্যালসিয়াম-এর ঘাটতি এবং হাড়ক্ষয়ের সম্ভাবনা পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। এর কারণ গর্ভধারণজনিত এবং এর পরবর্তীতে বাচ্চার মাতৃদুগ্ধ পানকালীন সময়ে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি (Vitamin D)-এর চাহিদা বেশি থাকে। এরপর মেনোপোজ (Menopause)-এর সময়ে এস্ট্রোজেন (Estrogen) হরমোনের অভাবে শরীরে ক্যালসিয়াম (Calcium)-এর শোষণ কমে যায়। ফলে এসময়ে খুব দ্রুত হাড়ক্ষয় হতে থাকে।

    ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার না খেলেই কি শুধু ক্যালসিয়াম-এর অভাব হয়?

    আমাদের অনেকেরই ধারনা যে শুধু ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার না খেলেই কেবল ক্যালসিয়াম-এর  অভাব হয়। তবে ক্যাসিয়াম-এর অভাব আরও অনেক কারণে হয়ে থাকে। যেসব কারণে ক্যালসিয়াম-এর অভাব হতে পারে তা হচ্ছে-

    ১) ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার পরিমাণে কম গ্রহণ করা।

    ২) পর্যাপ্ত শরীর চর্চার অভাব (weight bearing exercise)।

    ৩) অলসতাপূর্ণ জীবনযাপন।

    ৪) কিছু ওষুধ যেমন: ডাই-ইউরেটিকস, হেপারিন, জন্মনিয়ন্ত্রণের ইঞ্জেকশন (DMPA) দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে হাড়ক্ষয়ের মাত্রা বেড়ে যায়।

    ৫) হাইপো প্যারাথাইরয়েডিজম, কিডনি ড্যামেজ।

    ৬) অ্যালকোহল, ধুমপান ইত্যাদি।

    শরীরে  প্রয়োজনীয় এই মিনারেলের অভাবে হাড়ক্ষয় (Osteoporosis, Osteopenia) ছাড়াও যে সমস্যাগুলো হতে পারে তা হচ্ছে-

    খিচুনি,  মাসেল ক্রাম্প, অবশতা, হাই ব্লাড প্রেসার, ডিপ্রেশন,  ঘুমের সমস্যা, দুর্বলতা ইত্যাদি।

    প্রতিরোধে করণীয় কী? 

    হাড়ক্ষয় সমস্যা নিয়ে বেঁচে থাকা খুব কষ্টকর। চাই তবে সমাধান! দেখে নিন তাহলে-

    হাড় ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের তালিকা - shajgoj.com

    ১) পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ করা, যেমন: দুধ, পনির, চিজ বা অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার, বাদাম, ব্রোকলি, সবুজ শাক-সবজি ইত্যাদি।

    ২) নিয়মিত এক্সারসাইজ এবং দীর্ঘসময় শুয়ে-বসে থাকা পরিহার করতে হবে।

    ৩) প্রেগনেন্সি এবং ল্যাকটেশন-এর সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম (Calcium) ও ভিটামিন-ডি (Vit-D) ট্যাবলেট গ্রহণ করা।

    ৪) বয়স চল্লিশের পর অথবা অন্যান্য রিস্ক ফ্যাক্টর থাকলে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেনটেশন নেয়া।

    মায়েরা ডাক্তার না হলেও অনেক জানে। তাই মায়ের বকুনি না শুনে শাহজাবিন যে ভুল করেছিল, আশা করি আপনি তা জেনে আপনার পরিবারের বাচ্চাকে তা বুঝাতে পারবেন। ছোটবেলা পেরিয়ে এসেছেন? তাতে কী? হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান এবং সেই সাথে করুন শারীরিক চর্চা! হোক মজবুত হাড়, থাকুন সুস্থ!

    লিখেছেন- ডা: নুসরাত জাহান, সহযোগী অধ্যাপক, গাইনী বিভাগ, ডেলটা মেডিকেল কলেজ,মিরপুর, ঢাকা।

    চেম্বার: ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টা: মেডিকেল কলেজ।

    ছবি- সাটারস্টক

    21 I like it
    3 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort