আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি ছাড়া ইফতার ভাবাই যায় না! কিন্তু রোজার মাঝে এই খাবারগুলো খাওয়া খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। রোজার সময় খাওয়া-দাওয়ার উপর বাড়তি সর্তকতার প্রয়োজন পড়ে। আর এবারের রোজা গরমের সময় হওয়ায় খাওয়া-দাওয়া নিয়ে একটু বেশি খেয়াল রাখার প্রয়োজন। ইফতারে অতিরিক্ত মশলায় ঠাঁসা ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে এমন কিছু খাবার রাখুন, যা আপনার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখবে এবং সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে কর্মক্ষম রাখবে। শুধু তাই নয় সারাদিনের পানির চাহিদা পূরণ করবে সে খাবারগুলো।
ইফতারে রাখতে পারেন ৫টি হেলদি ফ্রুটস, যা সব সময় শরীরকে ঠাণ্ডা রাখবে। তাহলে চলুন, জেনে নেই কোন ফলগুলো রাখতে পারেন আপনার ইফতারে!
ইফতারে যে ৫টি হেলদি ফ্রুটস রাখতে পারেন
১. কমলা
মৌসুমি ফল হলেও এখন প্রায় সারাবছরই কিন্তু কমলা পাওয়া যায়। কমলায় রয়েছে ৮০% পানি যা এই গরমে আপনার শরীরকে হাইড্রেইটেড রাখবে। এছাড়া এতে রয়েছে পটাসিয়াম, ভিটামিন বি১, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম ও কপার। ইফতারিতে পান করতে পারেন এক গ্লাস কমলার রস। আর কমলা দিয়ে অনেক ধরনের জুস, স্মুদি, মুজ ইত্যাদি বানিয়ে নিতে পারেন অনায়াসেই!
২. শসা
শসায় আছে ৯৫% পানি, ভিটামিন ও মিনারেল। ফলে শসা খেলে শরীর ভিতর থেকে ঠান্ডা করে থাকে। এতে ক্যালরি কম থাকে আর ফাইবার বেশি থাকে, ফলে ওজন কমাতে সহায়ক। তাই প্রতিদিন খাবারের শসা রাখতে চেষ্টা করুন। এমনকি শসার জুসও খেতে পারেন।
৩. তরমুজ
গরমকালের অন্যতম একটি ফল হলো তরমুজ। তরমুজে ৯২% পানি যা শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যামিনো অ্যাসিড। ফলের রস কিংবা ফ্রুট সালাদ হিসেবে ইফতারের টেবিলে রাখতে পারেন তরমুজ।
৪. আপেল
কথিত আছে “প্রতিদিন একটি আপেল খান আর ডাক্তারকে রাখুন দূরে”। আপেল আপনার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করবে। আপেলে রয়েছে পেকটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যাসেনশিয়াল পুষ্টি উপাদান। সবুজ আপেল খাওয়াটা খুবই স্বাস্থ্যকর।
৫. আনারস
আনারসের গুণ সম্পর্কেতো আগেও বলা হয়েছে। ফ্রুট সালাদ কিংবা স্মুদিতে আনারস ব্যবহার করতে পারেন। এতে রয়েছে ব্রোমেলিন যা এনজাইমের অন্যতম একটি উৎস। এছাড়া আনারসে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ফাইবার, ভিটামিন বি১, ম্যাগনেসিয়াম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড রয়েছে।
এছাড়াও এই গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খেতে পারেন টক দই। টক দই শুধু শরীরকেই ঠাণ্ডা রাখে না, বরঞ্চ খারাপ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে টকদইয়ের কার্যকরী ভূমিকার কথাতো আমরা সবাই জানি। আইসক্রিম বা সফট ড্রিঙ্কস-এর পরিবর্তে খাদ্য তালিকায় তাই টক দই কিন্তু রাখতে পারেন। এছাড়া পছন্দের কোনো ফলের সাথে টকদই মিশিয়ে খেতেও কিন্তু দারুণ লাগে।
সারাদিন রোজার রাখার পর ইফতারটা করুন স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে। কারণ সুস্থভাবে বেঁচে থাকার উপর আপনার জীবনের সকল কর্মকাণ্ড নির্ভর করে। জীবনে সাফল্যের স্বাদ পেতে হলে কনসেনট্রেশন-এর খুব বেশি প্রয়োজন। তাই খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও অনিয়মে ভর্তি জীবনযাপন কখনোই সুখকর হয়ে উঠে না। জীবন যেহেতু একটাই, তাই কিভাবে একে অনন্য করে বাঁচা যায়, চলুন সেটাই চেষ্টা করি। আজ এ পর্যন্তই রইলো। সুস্থ থাকুন সবাই!
ছবিঃ সংগৃহীত – shutterstock