ধমকা ধমকি যা করার আগের পর্বে করেছি… সুতরাং আজ শুধু কাজের কথা হবে। ১৩-১৯ বছরের পাঠক এবং এমন টিন এজার-এর অভিভাবক… সবার জন্যই আজকের পর্ব। আগে না পড়ে থাকলে অনুরোধ করব ‘আপনি কি টিন এজার’ -সিরিজের আগের লেখাগুলো একটু কষ্ট করে পড়ে নিতে। নিচে প্রত্যেকটির লিঙ্ক দেয়া আছে। অল্প হলেও হেল্প হবে।
যেহেতু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ক্যালরির ভূমিকা একটা লেভেল পর্যন্ত আছেই, আগে জেনে নেই টিন এজ-এ নিজের ওজন বজায় রাখা এবং ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির জন্য রোজ কতো ক্যালরি ইনটেক করা উচিত-
ক্যালরির প্রয়োজন আপনি কতটুকু একটিভ তার উপরে নির্ভর করে-
- যদি আপনি খুবই একটিভ হন (ডেইলি খেলাধুলা যেমন ফুটবল, ক্রিকেট, রানিং-এসব করেন), তবে ডেইলি মিনিমাম ২৪০০ ক্যালরি প্রয়োজন
- যদি মডারেটলি একটিভ হন (যেমন ডেইলি ১-২ মাইল হাটা, এক্সারসাইজ, হালকা খেলাধুলা করেন) , তবে লাগবে মিনিমাম ২০০০ ক্যালরি
- আর যদি একেবারেই সেডেনটারি লাইফস্টাইল হয় (স্কুল কলেজ, কোচিং, পড়াশোনা- এসব ছাড়া কিছুই করেন না) তবে ম্যাক্সিমাম ১৮০০ ক্যালরি ইনটেক করা যাবে।
[picture]
এটা জাস্ট খুব ঝাপসা একটা আউট লাইন। এছাড়াও নিজের ওজনের উপর ভিত্তি করে ডেইলি কতো কি পুষ্টির প্রয়োজন সেটা যেভাবে বের করতে পারেন-
- বয়স ১২-১৯, প্রতি কেজি ওজনের জন্য ৪০-৪৫ ক্যালোরি, (যেমন,৫৫ কেজিX৪০ ক্যাল =২২০০ ক্যাল)
- প্রতি কেজি ওজনের জন্য ডেইলি ১ গ্রাম প্রোটিন, (যেমন, ৫৫ কেজির জন্য ৫৫ গ্রাম প্রোটিন)
- ভিটামিন এবং মিনারেলস, এক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের চার্ট ফলো করতে হবে
নিচের চার্টটা খুবি হেল্পফুল, এতে টিন এজে ডেইলি কোন ভিটামিন মিনারেলস কতটুকু লাগে এবং সেই পুষ্টি সবচেয়ে বেশি আছে যে খাবারে সেই খাবারের ঠিক কতটুকু খেলে আপনি ডেইলি দরকারি পরিমাণটা পাবেন তার একটা আইডিয়া আছে… ইমেজ-টা নিজের ফোন বা পিসিতে সেভ করে রাখুন-
এতটুকু না খেলেই নয়! এতটুকুই যথেষ্ট!
শুধু এই খাবার ছাড়াও একই ভিটামিন মিনারেলস আর কোথায় কোথায় পাওয়া যাবে? জানেন না? না জানলে দেখে নিন নিচের চার্টটি। এখানে দরকারি পুষ্টি উপাদানের কাজ আর এদের সোর্সের সাবস্টিটিউট-ও বলে দেয়া হয়েছে-
এবার আসি কিছু বেসিক রুল অফ থাম্ব-এর ব্যাপারে-
যেহেতু আপনারা টিন এজার, অবশ্যই মিলিটারিদের মতো একটা লিস্ট ধরিয়ে দিয়ে বছরের পর বছর সেটাই ফলো করতে বলব না, অবশ্যই আপনি বাইরে আড্ডা দেবেন, একটু জাঙ্ক ফুড, কোল্ড ড্রিংকস খাবেন! বিভিন্ন কুইজিন ট্রাই করবেন, অ্যাডভেঞ্চার করবেন! কিন্তু কোথায় লাইন টানতে হবে সেটাই যদি জানার মতো রেস্পন্সিবল না হন তখন কি হবে?
‘ডায়েট’-টাও এক্সেসিভ হয়ে যাবে আর অ্যাডভেঞ্চার-টাও এক্সেসিভ হয়ে যাবে। ফলাফলে, ভয়াবহ সব রোগব্যাধি অথবা ইটিং ডিসঅর্ডার যেমন বুলিমিয়া, অ্যানোরক্সিয়া-এর মতো ভয়ংকর মানসিক সমস্যা।
কিছু জিনিস এই ব্যস্ত ডেইলি লাইফ-এ মেনে চলতেই হবে-
– রোজ কোল্ড ড্রিংক খাওয়া একেবারেই বন্ধ! অনেক কোল্ড ড্রিংক খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আস্তে আস্তে কমিয়ে আনুন। ডিসাইড করুন সপ্তাহে ২ ক্যান কোক/পেপসির বেশি খাবেন না। এক মাস পর থেকে সেটা সপ্তাহে ১ ক্যানে নামিয়ে আনুন। তারপর, মাসে ২ বার, এরপর মাসে একবার, এভাবে কমিয়ে আনুন। রেস্টুর্যানট-এ কোল্ড ড্রিংক খেতে ইচ্ছা হলে আগে ঠাণ্ডা পানি অর্ডার দিন। অনেক সময় ঠাণ্ডা পানি খেলেও পিপাসা চলে যায় এরপর আর কোল্ড ড্রিংকস-এর ক্রেভিং হয় না।
– দিনে ভাজাভুজি যাই খাবেন ১-২ পিস খাবেন। যেমন হয়তো বিকেলে একটা সিঙ্গারা, বা একটা পুরি।
– ডেইলি গুনে গুনে ৩ লিটার পানি মিনিমাম খেতেই হবে। পানির পরিমাণ মাপা যায় এমন ফুড সেফ বোতলে/ জগে পানি রাখবেন। দিনের শেষে সেটা যেন শেষ হয়, এটা এনসিওর করবেন। গ্লাস গুনে পানি খেয়ে ৩ লিটার ফিল করাটা বেশ টাফ।
– অবশ্যই রোজকার খাবার তালিকায় একটা ভিটামিন সি রিচ ফল রাখবেন, সেটা কমলা হতে পারে, পেয়ারা বা আমলকীও হতে পারে।
– অবশ্যই অবশ্যই কাঁচা লবণ খাবেন না। এটা খুবই হারমফুল একটা অভ্যাস। চায়ে কফিতে মোট ৫ গ্রাম চিনি খেতে পারেন। প্রতিকাপ চায়ে ১.৫ চামচ চিনি খেলে দিনে যদি ৪ কাপ চা খান তবে মোট চিনির পরিমাণ হবে ১৭-২০ গ্রাম!! যেটা একসেপ্টেবল পরিমানের ৪ গুণ!! প্রতি দানা চিনির জন্য একসময় আপনাকে নিজের স্বাস্থ্যের বলি দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে! তাই, চা কফিতে চিনির ব্যাপারে খুব সাবধান!
– বাইরে জাঙ্ক ফুড খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন। মাসে ৩-৪ বার বাইরে বার্গার, পিজা, বিরিয়ানি, পাস্তা খেতে পারেন। এর বেশি যেন কোনভাবেই না হয়! ধীরে ধীরে বাইরে খাওয়ার পরিমাণ কমান। ওজন অসম্ভব বেড়ে গেছে? বাইরে খেয়ে খেয়ে এসিডিটি, গ্যাস্ট্রিক-এর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ? “কালকে থেকে আর এটা করবই না, ওটা খাবই না”- এসব বলে কোন লাভ নেই। এক মাস পর আবার যেইকে সেই হবে। এর থেকে সবই খাবেন, জাস্ট পরিমিত খাবেন। নিজেকে টর্চার করা যাবে না কোনভাবেই।
এবার… ব্যস্ত টিনএজার-দের জন্য খুব হেলদি একটা ডেইলি ডায়েট রুটিন আউটলাইন-এর ব্যাপারে-
সকাল
১) সকালে ঘুম থেকে উঠেই উষ্ম পানিতে এক চামচ মধু আর একটু লেবুর রস খাওয়ার অভ্যাসটা গড়ে তুলুন।
২) এর ২০ মিনিট পর সকালের নাস্তা খাবেন। নাস্তার কিছু সহজ অপশন-
– দুটো লাল আটার রুটি + এক চায়ের কাপের পরিমাণ সবজি + একটা কলা + ৪-৫ টা কাঠবাদাম
– দুটো পাউরুটি দিয়ে বানানো মেয়নেজ বা মাখন ছাড়া ডিমের স্যান্ডউইচ + একটা আপেল + ৪-৫ টা কাঠবাদাম
(স্যান্ডউইচ ফিলিং হিসেবে একটা ডিম আর সসা ইউজ করতে পারেন, মাখনের বদলে বিশুদ্ধ ঘি আধা চামচ দিতে পারেন। তবে অতিরিক্ত ওজন থাকলে মাখনও এভয়েড করবেন)
৩) দুই চামচ টকদইয়ের সাথে ২ চা চামচ ওটমিল ওভার নাইট ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন, সকালে এটা খাবেন + একটা ছোট কলা/পেঁপে + ৪-৫ টা কাঠ বাদাম
– বুঝতেই পারছেন সকালে কতো অল্পে একটা ফুলফিলিং ব্রেকফাস্ট খাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যদি রাতভর ফ্রিজে রাখা ওটমিল-টাও বের করে খেতে না পাড়ার অজুহাতের কোন ভিত্তি নেই। ‘সময় নেই’ আর ‘আমি অলস’ দুটো কমপ্লিটলি আলাদা দুটো লজিক। গুলিয়ে ফেলবেন না।
দুপুর
স্টুডেন্ট-দের প্রায় দিনেই এই দুপুরের খাবারটাই হয়তো মিস হয় অথবা ফ্রেন্ড-দের সাথে ক্যাফে বা ক্যান্টিনে আড্ডা দিতে গিয়ে এক গাদা আজেবাজে পচা ,পোড়া তেলে ভাজা খাওয়া হয়, সাথে কয়েককাপ কনডেনসড মিল্ক দেয়া চা বা কোল্ডড্রিংক-তো থাকেই! তাই দুপুরে কি খাচ্ছেন সেটা নিয়ে এক্সট্রা সচেতন হতে হবে।
প্রথমে দেখি যারা বাসা থেকে খাবার নিয়ে যান তারা কি করবেন-
– একটা ভিটামিন সি রিচ ফল বাসা থেকে বের হবার সময় ব্যাগে ঢুকিয়ে নেবেন, কয়েকটা আমলকী বা একটা কমলা বা একটা মাঝারি পেয়ারা হতে পারে। সামনেই আমড়ার সিজন, আবার লটকনের সময়ে লটকন। মানে যে সিজনাল ফল পাবেন সেটারই এক সারভিং যেন দুপুরে খাওয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ফল ইজিলি ক্যারি করা যায়।
– কোনভাবেই একটা ইনস্ট্যান্ট নুডলস সেদ্ধ করে বা একগাদা তেলে ভেজে ব্যাগে ভরে সেটাকে ‘বাসা থেকে আনা হেলদি খাবার’ বলবেন না। এটা অভিভাবকরাও মনে রাখবেন।
তাই কি নিতে পারেন-
১) সকালের সবজিটাই এক কাপ + এক পিস মুরগির মাংস/ একটা সেদ্ধ ডিম + দুটো রুটি/এককাপ ভাত
২) মুরগির মাংস ছোট টুকরো করে এক সপ্তাহের স্যান্ডউইচ ফিলিং বানিয়ে ছুটির দিনেই ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। সকালে সেটা দিয়েই স্যান্ডউইচ বানিয়ে ব্যাগে নিয়ে নেবেন + একটা সেদ্ধ ডিম + এককাপ হালকা মসলায় রান্না ব্রকলি/ গাজর/ সিমের বীচি/ক্যাপ্সিকাম
৩) একটা রুটি আর একটু ঘি দিয়ে সপ্তাহের জন্য তৈরি করে রাখা সবজি আর চিকেনের ফিলিং দিয়ে একটা রোল বা র্যাপ বানিয়ে নেবেন + একটা ১.৫ ইঞ্চি ঢাকাই পনিরের কিউব।
– দুপুরে হেলদি খাবার সবচেয়ে কমসময়ে তৈরি করার সিক্রেট হচ্ছে ছুটির দিনে ‘মিল প্রেপ’ বা রান্নার কাজ একটু এগিয়ে রাখা। রুটি, মাংসের গ্রিল করা ফিলিং খুব ইজিলি ছুটির দিনে করে সারা সপ্তাহের জন্য ফ্রিজে রেখে দেয়া যায়। রোজ সকালে নুডলস রান্নার চেয়েও কম সময় লাগে এই প্রেপ করা খাবার থেকে চট করে একটা টিফিন তৈরি করে নিতে।
আর যারা বাইরে খাবেনই তারা কি করবেন?
– ইচ্ছাশক্তি এখানে প্রধান। আপনি যদি বাইরে খাবেন বলেই জেদ করে থাকেন তাহলে হেলদিও থাকবেন এই আশা ছেড়ে দিতে হবে। গাছের পাড়া আর তলের কুড়নো একত্রে হবে না। তাই আগে ডিসাইড করুন আপনার অদৌ একটু হেলদি ডায়েটের অভ্যাস করার স্বদিচ্ছা আছে কিনা।
– যদি থেকে থাকে তাহলে, আগেই বলেছি- হুট করে ঠিক করে বসবেন না যে কাল থেকেই সব বন্ধ… পারবেন না। আগের বাসার টিফিনের লিস্ট-গুলো দেখুন। ছুটির দিনে জাস্ট ১-২ ঘণ্টা সময়ে সারা সপ্তাহের খাবার তৈরি করা যায়। আপনি বরং সপ্তাহে ৩ দিন বাসা থেকে নিয়ে আসা খাবার খান। বাকি কদিন ক্যাফে-তে খান। আস্তে আস্তে দিনের সংখ্যা বাড়ান। আর বাইরের বা বাসার খাবার যা-ই হোক না কেন, বাসা থেকে একটা সিজনাল ফল আনতে কোনভাবেই ভুলবেন না যেন!
– আর যারা একেবারেই বাইরে খাবেন, একটু চেষ্টা করুন আনহেলদি অপশন-গুলোর ভেতরে হেলদি খাবার খুঁজতে। যেমন, চিকেন ফ্রাই-এর চেয়ে স্যান্ডউইচ একটু হলেও হেলদি, বেগুনি বা পিয়াজু থেকে একটু রাইস খাওয়াটা একটু ভালো। আর কোল্ডড্রিংক অর্ডার না দিয়ে ঠাণ্ডা পানি অর্ডার দিন। একটু হলেও কোল্ড ড্রিংক কম খাওয়া ভালো। আর সাথে ওই একি কথা, বাসা থেকে একটা ফল নিয়ে আসবেন, ওটা ডেসার্ট হিসেবে খাবেন।
বিকেলের নাস্তা
দিনের এই সময়টায় একটু আনহেলদি খাওয়াটা আসেই! কিন্তু যাই করবেন অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে।
– পিয়াজু, বেগুনি, পুরি- এসব খেলে দেখবেন সব মিলিয়ে যেন ভাজাভুজি ৩ টার বেশি না হয়।
– মাসে ২-৩ বার বার্গার পিজা চলতেই পারে।
– দিনের এই সময়ে কফি খাবেন না। চা বেছে নিন। বিকেলের টায়ারডনেস কাটানোর জন্য খাওয়া কফি রাতের ঘুমে সমস্যা করে। কফির পাট দুপুর দুটোর আগেই শেষ করবেন। এরপর শুধু চা।
– যাদের অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা আছে তারা সপ্তাহে ৩ দিন ভাজাভুজি খান, বাকি দিন একটু কনট্রোল। যেমন- এককাপ দুধ + একবাটি শসা, টমেটোর সালাদ + দুটো ক্র্যাকার খান।
অর্থাৎ, একদিন হেলদি খাবার খাবেন, আরেকদিন একটু জাঙ্ক ফুড টেস্ট করবেন।
রাতের খাবার
অনেক বাবা-মাই যা করে তা হচ্ছে- “ আহা! মেয়ে/ ছেলেটা সারাদিন কি ছাইপাশ খেয়েছে! একবেলা একটু ভালমত খাওয়াই”- ভেবে দুনিয়ার অস্বাস্থ্যকর খাবার আর গাদা গাদা ভাত প্লেটে তুলে দেয়ার চেষ্টা!
তাদের জন্য আগেই বলছি- এক বেলা এক গাদা করে না খাইয়ে সারাদিনে বাচ্চা কি খাচ্ছে সেটা জানুন। টিফিন, সকালের খাবার এগুলো হেলদি হওয়াটা বেশি জরুরী। তাই সেদিক থেকে সাপ্তাহিক মিল প্রেপ করায় বাচ্চাকে হেল্প করুন। সকালে ‘সময় নেই’ অজুহাতে প্যাকেট নুডলস সেদ্ধ খাইয়ে দিয়ে রাতে ২ প্লেট ভাত খাওয়ালেই সব শুদ্ধ হয়ে যাবে না। তাই যেখানে যতটুকু করা দরকার ততটুকু করুন। বাচ্চার খাবার হ্যাবিট ফ্যামিলি থেকেই তৈরি হয়। তাই আপনার টিন এজার বাচ্চা এই বয়সে অ্যাসিডিটি-এর ব্যথায় কাতরালে এই দোষ বাবা মায়ের উপরেই বর্তাবে।
– সারাদিন না খেয়ে বা জাঙ্কফুড খেয়ে এসে রাতে এক গাদা ভাত খাবেন না! হু হু করে ওজন বাড়বে! সবচেয়ে বেশি খাবেন ব্রেকফাস্টে > তারপর লাঞ্চে > আর রাতের খাবার হবে সবচেয়ে লাইট ! আমরা করি উল্টোটা!
– রাতের বেসিক খাবার আউটলাইন
এক কাপ ভাত + ১ কাপ সবজি + এক কাপ মাছ বা মাংস খাবেন। আরেকটু কিছু দরকার হলে আরও এককাপ সবজি নেবেন। কিন্তু রাতের বেলা ভাত দিয়ে পেট ভরার চেষ্টা যত কম করবেন তত ভালো।
রাত ৯ টার আগেই খেয়ে নেবার চেষ্টা করবেন। আর ঘুমাতে যাবার আগে খুব হালকা উষ্ম এককাপ দুধ খাবেন।
মোটামুটি সাধারণ একদিনে এভাবে খাওয়া দাওয়া করাটাই নরমাল। আপনার খাবার হ্যাবিট এই আউট লাইনের কতো কাছাকাছি তার উপর ভিত্তি করে আপনি কতটুকু হেলদি ডায়েটে আছেন সেটা নিজেই ঠিক করতে পারেন।
বিঃ দ্রঃ– ডেইলি এককাপ দুধ, ফল, একটা ডিম খাওয়া যেন টিন এজ-এ বাদ না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
– লাউ, কুমড়ার চেয়ে গাজর, টমেটো, পালং শাক, লাউশাক, লাল শাক, ব্রকলি অনেক অনেক বেশি হেলদি! তাই সবজি খেতে হবে বলে দিনের পর দিন লাউ-কুমড়া না খেয়ে একটু মাথা খাটিয়ে সবজি চুজ করবেন।
– সপ্তাহে ২-৩ বার কচুর শাক, কচুর লতি খাবার চেষ্টা করবেন। এটা আয়রন রিচ একটা সবজি। Your hair, skin & health will thank you later!
– মাংসের বেলায় মুরগিটাই বেস্ট! তবে ব্রয়লার খাবেন না। মাসে ৬-৭ দিনের বেশি রেড মিট মানে গরু বা খাসির মাংস খাবেন না। তবে পরিমিত কলিজা খেতে পারেন। এতেও প্রচুর আয়রন আছে।
টিন এজ-এ কি খাবেন সেটা বাসার বাইরে ডিপেনড করে টিন এজার-এর উপর আর বাসায় ডিপেনড করে তার বাবা মায়ের উপর। তাই হেলদি ডায়েটের জন্য দুই পক্ষেরই হেলদি-আনহেলদি খাবার চেনা আর সেই হিসেবে রান্না আর খাওয়ার হ্যাবিট তৈরি করা জরুরী। আশা করি যারা ‘হেলদি ডায়েট’ শব্দ দুটো শুনলেই লস্ট হয়ে যান তাদের একটু আইডিয়া দিতে পেড়েছি। মিল প্রেপ বা খাবারের পুষ্টি নিয়ে আরও প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
বিশাল লম্বা লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ!
লিখেছেন- তাবাসসুম মীম
* আপনি কি টিন-এজার? আচ্ছা ডায়েট কন্ট্রোল বলতে কি বোঝেন? (পর্ব-৪)
* আপনি কি টিন-এজার? ব্রণ নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা! (পর্ব-৩)
* আপনি কি টিন-এজার? কীভাবে করবেন প্রপার ক্লিনজিং! (পর্ব-২)
* আপনি কি টিন-এজার? নিজের যত্ন নিজেই নিতে শিখুন (পর্ব-১)