আমরা সবাই চাই মেহমানদারী করাটা যেন পারফেক্টলি হয়! তাই আজ আপনাদের সাথে থ্রি কোর্স ডিনার করার জন্য পারফেক্ট ৩টি রেসিপি নিয়ে এলাম। রেসিপিগুলো টুকে নিন চটজলদি!
[picture]
১) থ্রি কোর্স ডিনার – সটেড মাশরুম
মাশরুম এমন একটি খাবার যা খুব অল্প সময়েই পুষ্টিগুণ আর স্বাদের জন্য সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে। মাশরুমে আছে নিউক্লিক এসিড, এন্টি এলার্জেন, ফলিক এসিড, লৌহ, এমাইনো এসিড, এনজাইমস, ভিটামিন বি সি ও ডি এবং আরো অনেক উপাদান। মাশরুমের রেসিপিগুলো রান্না করাও একদম সোজা। লো-ক্যালোরি ও প্রোটিনযুক্ত মাশরুমের খুব পপুলার একটি আইটেম হল সটেড মাশরুম যা খুব অল্প কিছু উপাদান দিয়েই বানিয়ে ফেলা যায়।
উপকরণ
- মাশরুম ৪০০ গ্রাম
- ৩টি রসুনের কোয়া
- অলিভ অয়েল রান্নার জন্য
- গোল মরিচের গুড়ো ১/৩ চা চামচ
- গারলিক চিলি সস ১ টেবিল চামচ
- অর্ধেক লেবুর রস
- পার্সলে বা ধনেপাতা কুঁচি ২ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রনালী
– মাশরুমগুলো ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর টিস্যু দিয়ে চেপে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। মাশরুমের বোঁটা কেটে ফেলতে হবে।
– একটা বড় হেভি প্যানে অলিভ অয়েল নিয়ে মিডিয়াম হিটে রাখতে হবে। তেল গরম হয়ে গেলে এতে মাশরুম ও রসুন কুঁচি দিয়ে হালকা ভাজতে হবে। এরপর লবন ও গোল মরিচের গুঁড়ো দিয়ে দিয়ে আরো ৫মিনিট মাশরুমগুলো ব্রাউন হওয়া পর্যন্ত সটে করতে হবে।
– এরপর লেবুর রস মিক্স করে অর্ধেক পার্সলে বা ধনেপাতা কুঁচি দিয়ে ২মিনিট নেড়ে নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর বাকি ধনেপাতা কুঁচি উপরে ছিটিয়ে গার্নিশ করে পরিবেশন করতে হবে।
এই ডিশটা আপনারা পাস্তা, স্টেক অথবা অন্য যেকোনো ডিশের সাথে সাইড ডিশ হিসেবে পরিবেশন করতে পারবেন।
২) থ্রি কোর্স ডিনার – রূপচাঁদা ফ্রাই উইথ মাস্টার্ড অয়েল
রূপচাঁদা খুবই সুস্বাদু ও নিউট্রিশনে ভরপুর মাছ। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে রূপচাঁদা সবসময়ই বাঙালির মনে ও প্লেটে স্পেশাল জায়গা দখল করে থাকে। আজকে আপনাদের সাথে সরিষা তেলে রূপচাঁদা ফ্রাইয়ের রেসিপি শেয়ার করতে যাচ্ছি। এটা খুব সহজ ১টা রেসিপি যা অল্প কিছু উপকরণ দিয়েই বানিয়ে ফেলা যায়। চলুন দেখি কি কি লাগবে।
উপকরণ
- ১টি রূপচাঁদা মাছ
- ৬টি রসুনের কোয়া
- ১ চা চামচ বাটা সরিষা অথবা গুঁড়ো
- ১/২ চা চামচ হলুদ
- ২টা কাঁচা মরিচ
- ১/৩ চা চামচ জিরা
- খাঁটি সরিষা তেল
- ৩ টেবিল চামচ টকদই
প্রনালী
– প্রথমেই মাছটা ভালভাবে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। এরপর আড়াআড়ি ভাবে মাছের দুই পাশে ছুরি দিয়ে চিরে নিতে হবে যাতে মসলা ভিতরে ঢুকে যায়।
– এরপর জিরা, হলুদ, রসুন, কাঁচা মরিচ ও সরিষা বাটা সামান্য পানি দিয়ে একসাথে মিক্স করে পেস্ট বানাতে হবে।
– উপরের মসলা ও লবণ দিয়ে মাছটাকে ম্যারিনেট করে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।
– এরপর ফ্রাইপ্যানে সরিষা তেল নিয়ে মিডিয়াম আঁচে জ্বাল দিতে হবে। তেল ভালভাবে গরম হয়ে গেলে মাছ ছেড়ে দিতে হবে।
– মাছ উল্টেপাল্টে দুই পাশ গোল্ডেন ব্রাউন কালার না হওয়া পর্যন্ত ভাজতে হবে।
– পরিবেশনের সময় চাইলে একটু ধনেপাতা কুঁচি করে উপরে ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে।
৩) থ্রি কোর্স ডিনার – শাহী বাদাম কুলফি
মেইন কোর্সের পর ডেজার্ট না থাকলে খাওয়ার মজা কেমন যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই গরমে একটু ঠাণ্ডার পরশ পেতে আইসক্রিম কে না পছন্দ করে? তাই আজকে শাহী বাদাম কুলফির রেসিপি দিচ্ছি যা একই সাথে মালাই আইসক্রিম আর ডেজার্টের কাজ করবে। বলা যায় এটা হচ্ছে ফ্রোজেন ডেজার্ট। আইসক্রিমের মত কোন আর্টিফিসিয়াল স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার না করেই কুলফি বানানো যায়। অল্প কিছু উপকরণ দিয়ে ফ্যান্সি রেস্টুরেন্টের মত স্বাদের ক্রিমি আর ডেলিশিয়াস এই ডেজার্ট খাইয়ে চমকে দিতে পারেন ফ্যামিলিকে।
উপকরণ
- ফুল ফ্যাট মিল্ক, ১ লিটার
- ব্রাউন সুগার, ১ কাপ
- অ্যামন্ড বা কাঠবাদাম কুঁচি, ১ কাপ
- কাস্টার্ড পাউডার, ২ টেবিলচামচ
- ভ্যানিলা এসেন্স, ২ ফোঁটা
- ফ্রেশ ক্রিম, ১ কাপ (সুপারশপ গুলোতে পাওয়া যায়)
- এলাচি গুঁড়ো, ১ টেবিলচামচ
প্রস্তুত প্রনালী
– প্রথমেই কাঠবাদাম একটা মিক্সারে গুঁড়ো করে নিতে হবে। ইলেক্ট্রনিক মিক্সার/গ্রাইন্ডার না থাকলে শিল-পাটায় গুঁড়ো করে নিলেও চলবে।
– ১টা প্যানে দুধ মিডিয়াম হিটে জ্বাল দিয়ে ঘন করে ১/৩ ভাগ বানাতে হবে। দুধ ঘন হয়ে এলে কাস্টার্ড পাউডার ভালভাবে নেড়ে মিশাতে হবে। ক্রমাগত নাড়তে হবে কারন কাস্টার্ড পাউডার আস্তে আস্তে দুধকে ঘন করে ফেলে। না নাড়লে দুধ দলা পাকিয়ে যাবে এবং পাতিলের নিচে লেগে যেতে পারে।
– এরপর এতে কাঠবাদাম গুঁড়ো মিশাতে হবে। দুধ ঘন ও ক্রিমি হতে হবে অনেকটা কাস্টার্ডের মত। হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে।
– মিশ্রণ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে টা কুলফির ছাঁচে ঢালতে হবে। সাধারণ আইসক্রিমের ছাঁচে ঢাললেও চলবে। ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখতে হবে।
– জমে গেলে বের করে ছাঁচটা কিছুক্ষণ পানিতে ভিজালেই কুলফি বের করা যাবে।
এই ছিল আমাদের আজকের থ্রি কোর্স ডিনার নিয়ে আয়োজন। বাজারের যেকোনো গ্রোসারি স্টোর থেকে এই ডিস-গুলো বানানোর দরকারি উপকরণগুলো কিনে নিতে পারবেন। তবে নিশ্চিত হয়ে নেবেন যেন তা ভেজালমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। খাবার শুধু মজাদার হলেই চলবে না, সাথে স্বাস্থ্যকর হওয়া চাই। আর এর জন্য ভরসা রাখতে পারেন অনলাইন ফুডশপ-এর ওপর। তারা ন্যায্যমূল্যে নিরাপদ খাবার সরবরাহ করে থাকে।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ