চুল পড়া এখন একটি কমন প্রবলেম। জানেন কি, অতিরিক্ত চুল তখনই পড়ে যখন আপনার স্ক্যাল্প ও হেয়ার ফলিকলে কোনো সমস্যা থাকে! এটা পুষ্টির অভাবেও হতে পারে, অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহারের জন্যও হতে পারে, আবার জেনেটিক্যাল কোনো প্রবলেমের জন্যও হতে পারে। কারণ অনেক সময় দেখা যায় আমরা যত হেলদি খাবারই খাই না কেন, শারীরিক সকল ঘাটতি পূরণ হয় না। সেজন্য প্রয়োজন চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া। তাছাড়াও আমাদের দেশের আবহাওয়া ও ধুলাবালির অবস্থা নিয়ে তো আর বলার কিছুই নেই। চুল পড়া কমাতে কার্যকরী কোনো সল্যুশন আছে কি?
এক্সপার্ট ওপিনিয়ন (Expert opinion) অনুযায়ী প্রতিদিন ১০০টা চুল পড়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এর থেকে বেশি হলে তখন চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া আবশ্যক। প্রকৃতিই আমাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছে যা দিয়ে আমরা আমাদের নানা শারীরিক সমস্যার সমাধান করতে পারি। কিন্তু কোনটা কিসের জন্য কীভাবে কাজ করে, সেটাই মূলত জানা থাকতে হবে। তাই আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম খুবই বিশেষ একটি প্রাকৃতিক উপাদানের ট্রিটমেন্ট টিপস যা আপনার চুল পড়া বন্ধ করবে এবং চুলকে হেলদি ও সুন্দর করে তুলবে অল্প কিছু দিনেই।
ন্যাচারাল ট্রিটমেন্ট
শুনলে অবাক হবেন, এই প্রাকৃতিক ট্রিটমেন্টটা করা হবে শুধুমাত্র অ্যালোভেরা ও নারিকেলের দুধ দিয়ে! এই দুটো উপাদানের নাম শুনেইতো বুঝা যাচ্ছে যে চুলের জন্য এটা কতটা কার্যকরী। এই দুটোর কম্বিনেশনে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যাসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড, আর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা আপনার চুলের ন্যাচারাল পি.এইচ লেভেলকে রিস্টোর করবে, সেই সাথে চুলের গোড়াকে করবে মজবুত।
তাছাড়া রুক্ষতা ও চুল ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে, একদম ভেতর থেকে স্বাস্থ্যোজ্জল করে তুলবে, চুলকে অনেক বেশি হাইড্রেট করবে, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে, চুলে পুষ্টি যোগাবে। ডিপ কন্ডিশনার ও হেয়ার মাস্ক হিসেবে কাজ করবে। দেখলেন তো, এই একটি প্যাকের কত গুণাগুণ! চুল পড়া কমাতে কীভাবে এই হেয়ার মাস্কটি বানাতে হবে, চলুন দেখে নেই।
চুল পড়া সমস্যা দূর করতে হোমমেইড সল্যুশন
যা যা লাগছে-
- অ্যালোভেরা জেল
- নারিকেলের দুধ
একটি ব্লেন্ডারে নারিকেলের দুধ ও অ্যালোভেরা নিয়ে কয়েক সেকেন্ড ব্লেন্ড করে স্মুথ একটি ক্রিম তৈরি করে ফেলুন।
চুলে লাগানোর পদ্ধতি
আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত খুব ভালো করে সব জায়গায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। একটি মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল ভালোভাবে আঁচড়িয়ে নিবেন মাস্ক লাগিয়ে। মাইল্ড কোনো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ৪০ মিনিট পর। সাথে সাথেই একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন চুলে! এভাবে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে চুল পড়া একদম কমে যাবে। আর যাদের চুল পড়ার সমস্যা নেই, তারা ডিপ কন্ডিশনিং-এর জন্য সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করলেই হবে।
চুল পড়া সমস্যা দূর করতে অ্যালোভেরার গুণাগুণ
চুলের যত্নের জন্য অ্যালোভেরা হচ্ছে একটি বেস্ট চয়েজ। যত রকম প্রোডাক্ট আমরা কিনে থাকি সবগুলোতে যত গুণাগুণ আছে, তা এই অ্যালোভেরা একাই কভার করে দিতে পারে। শুধু তাই-ই নয়, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি ও সি কমপ্লেক্স এবং ২০ ধরনের মিনারেলস যা আপনার চুলের বৃদ্ধির জন্য অতুলনীয়। এতে ভিটামিন ই-ও রয়েছে।
এটি চুলের তৈলাক্তভাবকে ব্যালেন্স করে, চুলের ন্যাচারাল তেল তৈরির কোষকে কোনো ক্ষতি করা ছাড়াই চুলকে মোলায়েম করে, চুলে শাইনিভাব আনে। যেহেতু এতে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এলিমেন্ট আছে, তাই খুশকি ও স্ক্যাল্প-এর অন্যান্য ইনফেকশন দূর করে। বাসায় যদি অ্যালোভেরা গাছ না থাকে তাহলে মার্কেটে যে অ্যালোভেরা জেল পাওয়া যায়, সেটিও ইউজ করতে পারেন।
নারিকেলের দুধের গুণাগুণ
নারিকেলের দুধ চুলের জন্য খুবই উপকারী এবং এটি চুল পড়া কমায় লক্ষণীয়ভাবে। এতে আছে অ্যামিনো অ্যাসিড ও হেলদি ফ্যাট। চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায়, চুল সিল্কি করে তোলে। এমন অনেক বেনিফিট পাবেন এই উপাদানে। আরেকটা সিক্রেট শেয়ার করি, নারিকেল দুধ কিন্তু চুল স্ট্রেইট করতেও হেল্প করে। যারা রিবন্ডিং ছাড়াই ন্যাচারালি স্ট্রেইট হেয়ার পেতে চান, তাদের জন্য এই উপাদানটি দারুণ কার্যকরী।
তাই, দেখা যাচ্ছে যে এই দু’টোর কম্বিনেশন খুবই দারুণ একটি ডিপ-কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট হিসেবে কাজ করবে যা আপনি ঘরে বসেই খুব সহজেই করতে পারবেন। বিশেষ করে চুল পড়ার সমস্যা তো সমাধান হবে সবার আগে। তাহলে ট্রাই করুন আজই।
চুলের যত্নে আপনি যদি অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকেন, তাহলে সাজগোজ হতে পারে একটি ভালো অপশন! অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!
ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ