ত্বকের যে কোন দাগই বড্ড বেশি বিরক্তিকর ও অস্বস্তিকর। স্ট্রেচ মার্ক বা শরীরে ফাটা দাগ সেদিক দিয়ে আরো একধাপ এগিয়ে। কখনো কখনো এ দাগগুলো এত তীব্র সমস্যার সৃষ্টি করে যে বলা বাহুল্য। স্ট্রেচ মার্কের প্রধান কারণ হচ্ছে একবারে অনেক বেশি ওজন কমানো বা বাড়ানো, ওজনের উঠা নামা এবং প্রেগনেন্সি। অনেকেই শুরুর দিকে একে অবহেলা করে যার ফলে সমস্যা আরো বাড়তে পারে। এজন্য সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যা একান্ত প্রয়োজন। আজকাল বাজারে অনেক রকম স্ট্রেচ মার্ক রিমুভার ক্রীম পাওয়া যায়, যদিও কোনটাই আশানুরূপ ফল দিতে পারে না। তাই চলুন জেনে নিই কীভাবে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ঘরোয়া রূপচর্চায় এই দাগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
শরীরে ফাটা দাগ দূর করার উপায়
০১. কোকোয়া বাটার ক্রীম
কোকোয়া বাটারে আছে অনেক উন্নত মানের ময়েশ্চারাইজিং উপাদান। এটি এমনই এক প্রাকৃতিক উপাদান যার নিয়মিত ব্যবহারে স্ট্রেচ মার্ক(strech mark) হালকাই করে না, পুরোপুরি সারিয়ে দেয়। তাছাড়া এর ময়েশ্চারাইজিং গুণের কারণে আপনি পান নরম, কোমল আর গ্লোয়িং ত্বক।
বাজারের প্রচলিত ক্রীম ব্যবহার না করতে চাইলে নিজেই বানিয়ে নিন আপনার কোকোয়া বাটার ক্রীম। এজন্য লাগবে –
– ১ কাপ কোকোয়া বাটার
– ২ চা চামচ ভিটামিন ই তেল
– ২ টেবিল চামচ হোয়েট গার্ম তেল
– ৪ টেবিল চামচ বীজ ওয়্যাক্স
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে ওভেনের তাপে গলাতে থাকুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে পছন্দ মত জারে করে রেফ্রিজারেটর-এ সংগ্রহ করুন। ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিদিন ব্যবহার করুন।
০২. অ্যাভোকাডো ক্রীম
অ্যাভোকাডো ক্রীম তৈরী করা খুবই সহজ। এজন্য যা লাগবে –
– ১ টি পাকা অ্যাভোকাডো
– ৪ টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল
– ৪ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল
– ৬টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল
– ৫টি ভিটামিন এ ক্যাপসুল
হাতের কাছে পেলে কয়েক ফোঁটা তরল জিংক মেশাতে পারেন, তবে জরুরী না।
সব উপকরণ ব্লেন্ডার-এ দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার আক্রান্ত জায়গায় প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করুন। ৩০ মিনিট পর ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে দিনে কয়েকবার ব্যবহার করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে একটু লেবু্র রস মিশিয়ে নিতে ভুলবেন না। আর ব্যবহারের পর অবশিষ্টাংশ ফ্রিজ-এ রেখে দিন।
০৩. শীয়া বাটার
এটি ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস। অন্যান্য অ্যাসেনসিয়াল তেলের সাথে শীয়া বাটার মিশিয়ে ব্যবহার করলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়।
০৪. এসেনসিয়াল তেল
ল্যাভেন্ডার, রোজমেরি, পেপারমিন্ট, জোজোবা, রোজ, লেমন ওয়েল ফাটা দাগ দূরীকরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে প্রেগনেন্সি-এর সময়ে যে দাগগুলো পড়ে সেগুলো সারাতে তেলগুলো অদ্বিতীয়।
০৫. অলিভ অয়েল
এসব ঝামেলা এড়াতে চাইলে শুধু অলিভ অয়েল ব্যবহার করেও উপকার পাবেন। তবে তা কিছুটা সময় সাপেক্ষ।
অনেকের কাছেই হয়ত উপকরণগুলো অপরিচিত মনে হতে পারে, তবে আজকাল সবগুলো উপকরণই সুপার শপ-গুলোতে সহজলভ্য। একটু কষ্ট করে উপাদানগুলো সংগ্রহ করে আজ থেকেই শুরু করুন শরীরে ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক-এর বিরুদ্ধে আপনার অভিযান। আর বাই বাই বলুন শরীরের অনাকাঙ্খিত ফাটা দাগকে!
ছবি- সংগৃহীতঃ সাজগোজ.কম, ইমেজেসবাজার.কম