অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা | ৯টি ঘরোয়া সমাধানে সুস্থ থাকুন

অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা | ৯টি ঘরোয়া সমাধানে সুস্থ থাকুন!

মাসিকের ব্যথাতে পেটে হট ব্যাগ ধরা হয়েছে - shajgoj

অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা যে কোন বয়সের নারীদের মাঝেই দেখা যায়। বিশেষ করে যারা অবিবাহিত তাঁদের মাঝে এই অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত অনেক বেশি স্ট্রেস, পরিশ্রম, দুর্বলতা, জীবনযাত্রায় বড় কোন পরিবর্তন… এসব কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। আবার শারীরিক ত্রুটির কারণেও পিরিয়ড ইরেগ্যুলার হতে পারে। পিরিয়ড রেগ্যুলার করতে চিকিৎসকেরা সাধারণত হরমোন থেরাপি দিয়ে থাকেন, যা আমরা খাবার পিল হিসেবে চিনি। কিন্তু এসব পিল-এর অনেক ধরনের সাইড ইফেক্ট থাকে। মোটা হয়ে যাওয়া, খাবারে অরুচি, পিম্পলস, মাথা ব্যথা, পা ব্যথা, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সহ নানান অসুবিধা দেখা যায়। তাই আসুন জেনে নেই ৯টি ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে যার মাধ্যমে ঔষধ না খেয়েও অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দূর করে পিরিয়ড রেগ্যুলার করার চেষ্টা করতে পারেন।

অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সমাধানের কিছু টিপস

১) কাঁচা পেপে

অনিয়মিত মাসিকে কাঁচা পেপে উপকারী - shajgoj.com

Sale • Bath Time, Talcum Powder, Anti Acne

    কাঁচা পেপে পিরিয়ড রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। কাঁচা পেপে জরায়ুর মাসল ফাইবার কন্ট্রাকশন-এ সাহায্য করে। পর পর কয়েক মাস নিয়মিত কাঁচা পেপের রস সেবন পিরিয়ড নিয়মিত হয়, তবে পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে এটি না খাওয়াই ভালো। পিরিয়ড নিয়মিত করা ছাড়াও এর আরো নানান গুণ আছে। কাঁচা পেপে হজমে সাহায্য করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে।

    ২) কাঁচা হলুদ

    অনিয়মিত মাসিকে কাঁচা হলুদ উপকারী - shajgoj.com

    হলুদ মসলা জাতীয় দ্রব্য হলেও প্রাচীন কাল থেকেই চিকিৎসা শাস্ত্রে এর ব্যবহার নানামুখী। এটি পিরিয়ড নিয়মিত করতে এবং শরীরে হরমোন ব্যাল্যান্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা হলুদ জরায়ুর মাংসপেশী সঙ্কোচন-প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ পিরিয়ড-এর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ দুধে চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ কাঁচা হলুদ নিয়ে মধু বা গুঁড় দিয়ে কিছুদিন খেয়ে দেখুন, পরিবর্তন নিজেই টের পাবেন।

    ৩) অ্যালোভেরা

     

    অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর শাঁস রুপচর্চার পাশাপাশি মাসিক নিয়মিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি হরমোন রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। সবথেকে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তাজা অ্যালোভেরা পাতার রস সামান্য মধুর সাথে মিশিয়ে সেবন করুন। তবে পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে না খাওয়াই ভালো।

    ৪) যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন

     

    মাসিক নিয়মিত না হওয়ার প্রাথমিক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হল স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। শরীরে যে সমস্ত হরমোন পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণ করে স্ট্রেস-এর কারণে সেগুলোর ব্যাল্যান্স নষ্ট হয়। যার ফলে ঠিকমত পিরিয়ড হয় না। যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে। পিরিয়ড রেগ্যুলার করতে সব থেকে উপযোগী পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এই দুটি অন্যতম।

    ৫) আদা

     

    ১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ পরিমাণ মিহি আদা কুঁচি নিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এখন এর সঙ্গে অল্প পরিমাণে চিনি বা মধু মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর এই পানীয়টি তিন বেলা খাবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এই পানীয়টি ভরা পেটে খেতে হবে। কয়েক মাসের মধ্যেই সুফল পাবেন। আদা পিরিয়ড সাইকেল রেগুলেশন-এ সাহায্য করে এবং অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করে।

    ৬) জিরা

     

    রান্না করা খাবার সুস্বাদু করতে ব্যবহৃত মশলাগুলোর মধ্যে জিরার জুড়ি মেলা ভার। তবে রান্না ছাড়াও জিরার আরো অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। মাসিক নিয়মিত করতে জিরা অনেক ভালো কাজে দেয়। এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ জিরা নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এই পানি এবং জিরা দুটোই খেয়ে ফেলুন। নিয়মিত সেবন করে দেখুন, সুফল পাবেন।

    ৭) দারুচিনি

     

    যে সমস্ত খাবার বহুগুণে গুণান্বিত, দারুচিনি তাঁর মধ্যে অন্যতম। অনিয়মিত পিরিয়ড দূর করতে চা বা লেবুর রসের সাথে দারুচিনি গুড়া করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি পিরিয়ড নিয়মিত করার পাশাপাশি পিরিয়ড কালিন ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

    ৮) ফল ও সবজির জুস

    অনিয়মিত মাসিকে খাবেন ফল ও সবজির জুস - shajgoj.com

    খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি ফল ও সবজির জুস রাখুন। এটি শরীর ঠাণ্ডা রাখে ও হরমোন রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। যেমন গাজর, পুদিনা পাতা, করলার রস, ভিটামিন সি জাতিয় ফলের রস ইত্যাদি দিনে দু’বার করে খেতে পারেন। তবে পিরিয়ড রেগ্যুলার করতে গাজর এবং আঙুরের রসই সবথেকে বেশি কার্যকরী।

    ৯) অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার

     

    পিরিয়ড ইরেগ্যুলার হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে একটা হল রক্তে ইনসুলিন ও সুগার-এর মাত্রার তারতম্য। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার-এর মাধ্যমে আপনি এর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হল, এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আগে খেয়ে নিন। আপনার পিরিয়ড সাইকেল নিয়ন্ত্রণে এটি অনেক সাহায্য করবে।

     

    একটা বিষয় মনে রাখা উচিত, শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলেও অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা হতে পারে। এজন্য এই পদ্ধতিগুলোর পাশাপাশি আয়রন বা লৌহসমৃদ্ধ খাবার যেমন- গরু, মুরগীর মাংস, কলিজা, চিংড়ি, ডিম, কচু শাক, লাল শাক, পালং শাক, মিষ্টি আলু, ফুলকপি, মটরশুঁটি, তরমুজ, খেজুর, গাব, টমেটো, ডাল, ভুট্টা, শস্যদানা ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।

    আর এতেও যদি উপকার না পান তাহলে একজন গাইনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

     

    ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ

    48 I like it
    14 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort