এই গরমে এমন কোনও রিফ্রেশিং মাস্ক খুঁজছেন যা একইসাথে আপনার স্কিনের ট্যান দূর করে স্কিনে আনবে একটা গ্লোইং ফিনিশ এবং কমাবে এক্সেস অয়েল? তাহলে আজকের রিভিউটি আপনারই জন্য! বলবো তেমনি একটা প্রোডাক্ট প্লাম ক্যামোমাইল ফেইস মাস্ক নিয়ে কথা।
প্লাম ক্যামোমাইল অ্যান্ড হোয়াইট টি গ্লো গেটার ফেইস মাস্ক (Plum Chamomile & White Tea Glow-Getter Face Mask)-টা হচ্ছে আসলে একটা ক্লে বেইজড মাস্ক। এটার মেইন কাজ স্কিনের ডেড সেল এবং নোংরা ময়লা দূর করে ডিটক্সিফাই করা। এটা ড্রাই, কম্বিনেশন আর নরমাল স্কিনের জন্য তৈরি আর আমার স্কিন নরমাল টু অয়েলি টাইপ, তাই আমি এটা ইউজ করেছি। আর আমার মনে হয়েছে এই প্লাম ক্যামোমাইল ফেইস মাস্ক আসলে যেকোনো ত্বকেই বেশ ভালো কাজ করবে। প্লাম ক্যামোমাইল ফেইস মাস্ক নিয়ে আমার ডিটেইলড রিভিউ জানতে চাইলে পড়তে থাকুন!
দাম ও প্রাপ্তিস্থল
যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার-এ অবস্থিত শপ.সাজগোজ.কম-এর ফিজিক্যাল শপদুটোতে পাবেন। তাছাড়া অনলাইন-এ তাদের ওয়েবসাইট-এ অর্ডার করেও কিনতে পারেন। দাম পড়বে ১০৫৬/-টাকা।
প্লাম ক্যামোমাইল ফেইস মাস্ক কিভাবে ব্যবহার করব?
প্লাম-এর ডিরেকশন হিসেবে মাস্কটা নিচের নিয়মে ইউজ করলেই বেস্ট রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব-
- চোখ এবং ঠোঁটের আশেপাশের জায়গা এড়িয়ে পুরো মুখে একটা মোটা লেয়ার-এর মাস্ক লাগিয়ে নিন।
- এবার ২০-৩০ মিনিট ওয়েট করুন। এর ভেতরে মাস্ক কমপ্লিটলি শুকিয়ে যাবে।
- পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে মাস্ক ধুয়ে ফেলুন।
- মাস্ক ব্যবহার করার পর মুখ ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধোবেন না বা টাওয়েল দিয়ে মুছবেন না।
- পানি শুকিয়ে গেলে নরমাল নিয়মে টোনার, ময়েশ্চারাইজার ইত্যাদি ইউজ করুন।
মনে রাখুন
১) এই মাস্কটা মুখে দেবার পর ইমেডিয়েটলি একটা টিংলিং সেন্সেশন হতে পারে। ঘাবড়াবেন না, এটা ২-৩ মিনিট পর ঠিক হয়ে যাবে।
২) মাস্কটা সপ্তাহে একবারের বেশি ইউজ করার দরকার নেই।
প্যাকেজিং
মাস্কটা খুব মোটা কাঁচের জারে করে পাওয়া যায়। এটার ক্যাপ সাদা এবং স্ক্রু টাইপ। ভালোভাবে আটকায়। ভেতরে আবার একটা আলাদা সাদা প্লাস্টিকের লিড থাকায় কোনভাবেই মাস্ক লিক হবার পসিবিলিটি নেই। নিচে দেখুন এর গায়েই ইনগ্রেডিয়েন্টস লিস্ট আছে।
প্রোডাক্টের টেক্সচার
ক্লে মাস্ক হওয়া সত্ত্বেও এটা খুবই স্মুথ ক্রিমি কনসিস্টেন্সি-এর। মাস্কটার রঙ একেবারে সাদা। এটায় একটা হালকা রিফ্রেশিং স্মেল আছে। যতক্ষণ মুখে মাস্ক দেয়া থাকবে ততক্ষণ এই স্মেল-টা পাবেন। আমার কাছে স্মেল-টা খুবই রিলাক্সিং মনে হয়। এটা এতো কড়া নয় যে কারও নাকে খুব লাগবে। তাই সেন্ট নিয়ে যারা সেন্সিটিভ তাদের প্রবলেম হবে না আশা করি।
আমার অভিজ্ঞতা
জার প্যাকেজিং-এ বারবার হাত দিলে প্রোডাক্ট-এ ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে। তাই আমি একটা ব্রাশ দিয়ে মাস্ক নিয়ে ইউজ করি পুরো ফেইস-এ। খুব ইজিলি এই ব্রাশ দিয়ে পুরো ফেইস-এ মাস্ক অ্যাপ্লাই করা পসিবল। শুরুতে ১-২ মিনিট একটু হালকা টিংলিং ফিল পাই। এরপর পুরো নরমাল হয়ে যায়। আমি ২০-২৫ মিনিট পরেই পানি দিয়ে মাস্কটা ধুয়ে ফেলি।
মাস্কটা আমার মতে যা যা ক্লেইম করেছে তার সবই করে। মাস্ক ধোয়ার পর মুখ একদম ক্লিন হয়ে যায় আর খুব ফ্রেশ লাগে! যেটা নরমালি ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধোয়ার পর হয় না! আবার সাথে সাথে স্কিনটা একদম সফট হয়ে যায়!! আর সারাদিন এত সফট থাকে বার বার নিজের গাল টাচ করতে ইচ্ছে হয়! সফট সফট স্কিনের ফিলটা কত ভালো লাগে সেটাতো আপনারা জানেনই!
আমি মাস্ক ধোয়ার পর দেখছি, ইমেডিয়েটলি স্কিনের রেডনেস কমে যায় আর স্কিনে সাথে সাথে একটা গ্লো চলে আসে। গ্লো-টা ২-৩ দিন থাকে। আর পরপর ২-৩ সপ্তাহ নিয়মমত ইউজ করলে আপনি ত্বকের ট্যান-এও একটা পজিটিভ চেইঞ্জ দেখবেন!
মাস্কটার কিছু ভালো এবং মন্দ দিক
- খুব ডিপলি স্কিন ক্লিন করে, ব্ল্যাকহেডস কমায়। এটা ইউজ করার পর আমার নাকের উপরের স্কিন অনেক ক্লিন লাগে!
- স্কিনের ট্যান কমায় নিয়মিত ব্যবহারে।
- স্কিনে ২-৩ দিন ধরে একটা সফট ফিল আর গ্লোয়ি ভাব এনে দেয়!
- সেনসিটিভ স্কিনে রিঅ্যাকশন দেখায় না।
- স্কিনের রেডনেস আর ইরিটেশন কমায়।
- প্লামের প্রোডাক্ট সবধরনের টক্সিক কেমিক্যাল ফ্রি।
- এটা একটা ভিগান প্রোডাক্ট!
আমার মতে, হয়ত এই মাস্কের জার প্যাকেজিং সবার পছন্দ হবে না। ভিজে হাতে জারের ভেতর দিয়ে মাস্ক বের করলে মাস্কে ব্যাকটেরিয়া চলে যাওয়ার পসিবিলিটি থাকে। তাই একটা ব্রাশ বা স্প্যাচুলা ইউজ করা উচিত! যেটা অনেকের কাছে একটু বিরক্তিকর লাগতে পারে। এছাড়া আর তেমন কোনও খারাপ দিক আমার চোখে পড়ে নি।
তাই আপনার যদি একটু বাজেট থাকে আর খুব ভালো একটা ট্যান রিমুভিং মাস্ক ট্রাই করতে চান, তবে প্লাম-এর এই অসাধারণ মাস্কটাকে একটা চান্স দিয়েই দেখতে পারেন।
ইউজ করে কেমন লাগলো অবশ্যই আমাকে জানাবেন, ওকে? অপেক্ষায় থাকলাম।
ছবি- সাজগোজ; সংগৃহীত