গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ | প্রেগনেন্সির ১১টি সিম্পটম জানা আছে কি?

গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ | প্রেগনেন্সির ১১টি সিম্পটম জানা আছে কি?

গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে আল্ট্রাসোনগ্রাম করেছেন

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর অনেক ধরনের শারীরিক মানসিক পরিবর্তন আসে তা আমরা সবাই জানি। এই দীর্ঘ কঠিন সময়ে তাদের একেক সময়ে একেক উপসর্গ দেখা দেয়। গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা না থাকলে পরবর্তিতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে।

গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ সমূহ

১) ক্র্যাম্পিং

ক্র্যাম্পিং বা পেট আঁকড়ে ধরা প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের একটি কমন উপসর্গ। ব্যথা মৃদু থেকে মধ্যম ধরনের হতে পারে। এর সাথে কিছুটা ব্লিডিং বা রক্তপাতও দেখা দিতে পারে। মূলত ইমপ্ল্যানটেশনের (Implantation) জন্য এটা হয়ে থাকে। এই উপসর্গ দেখলে ভয় পেয়ে বা চিন্তিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Sale • Bath Time, Mom & Baby, Creams, Lotions & Oils

    ২) ক্লান্তি বা অবসাদ

    ক্লান্তি গর্ভাবস্থায় যেকোন সময়ে দেখা দিলেও প্রথম দিকে সেটা বেশি কমন। যেহেতু প্রোজেস্টেরন (progesterone) হরমোনের মাত্রা শরীরে অনেক বেশি থাকে কাজেই ক্লান্তি বা অবসাদও বেশি দেখা যায়। পর্যাপ্ত ঘুম ও খাদ্যাভাসে এর থেকে  মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

     ৩) ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করা

    প্রেগন্যান্সিতে হৃৎপিণ্ড শরীরে বেশি রক্ত পাম্প (pamp) করে। যার ফলে কিডনীর বেশি তরল ছাঁকতে হয় এবং মূত্রথলিতে সেই অতিরিক্ত তরল এসে জমা হয়। তাই ঘনঘন মূত্র ত্যাগের বেগ আসে এবং অস্বস্তি দেখা দেয়। এক্ষেত্রেও হরমোন প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৩০০ মি.লি পানি গ্রহণে মত প্রকাশ করেছেন।

     ৪) পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য 

    পিরিয়ডের লক্ষণের মতো পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যও প্রেগন্যান্সির শুরুতে দেখা দেয়। হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে পরিপাকতন্ত্রের কার্যকলাপ কিছুটা শিথিল হয়ে যায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দেখা দেয় এবং পেট ফাঁপা অনুভূত হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, আঁশ জাতীয় শাকসবজি ও ফল খেলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়।

    ৫) শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকা

    শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকাও প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের একটি লক্ষণ। আবহাওয়া ও ব্যায়াম করলে এই তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। এ সময় বেশি করে পানি পান করতে হবে এবং সাবধানতা অবলম্বন করে ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত।

    ৬) মর্নিং সিকনেস,বমি বমি ভাব ও বমি 

    বমি ভাব গর্ভধারনের প্রাথমিক লক্ষণ - shajgoj.com

    বমি বমি ভাব, মর্নিং সিকনেস সাধারণত (৪-৬) সপ্তাহেই শুরু হতে দেখা যায়। যদিও এর নাম মর্নিং সিকনেস, তাও এই দুর্বলতা বা অসুস্থতা দিন বা রাতের যে কোন সময়ই দেখা দিতে পারে। হরমোনের প্রভাব থাকলেও এর আসল কারণ এখনও অজানা। প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসে অনেক মহিলারই এই মর্নিং সিকনেস দেখা যায়। ধীরে ধীরে সেটা তীব্র হতে পারে প্রেগন্যান্সির  শেষের দিকে। অনেকের আবার সময়ের সাথে সাথে এর তীব্রতা কমতেও দেখা যায়। নোনতা ক্র্যার্কাস বা চিপস্ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান এই সমস্যা সমাধানে উপকারী।

    ৭) স্তনে ব্যথা অনুভূত হওয়া

    (৪-৬) সপ্তাহের দিকে স্তনে হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে এটি হয়ে থাকে। অনেক সময় এই ব্যথা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি ১১ সপ্তাহের দিকেও হতে পারে। আরামদায়ক ম্যার্টানিটি ব্রা এই সময় ব্যবহার করতে হবে।

    ৮) রক্তচাপ এবং মাথা ঘোরা

    প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের ধাপে রক্তচাপ নেমে যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। এর ফলে মাথা ঘুরে। রক্তচাপ ও মাথা  ঘুরা গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম। যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল লাগে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এবং অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা যাবে না দুর্বলতার জন্য।

    ৯) খাবারে অনীহা ও গন্ধ লাগা 

    খাবারে গন্ধ লাগার অভিযোগ অনেক গর্ভবতী নারী-ই গর্ভাবস্থার শুরুতে করে থাকেন। যদিও গবেষণাগুলো খুব একটা ভিত্তি খুঁজে পায়নি এ অভিযোগের। তবে এই অনুভূতি থেকে বমি বমি ভাব লাগতে পারে। তবে গবেষকদের মতে, মহিলাদের  এই ধরনের অনুভূতি প্রথম মাসেই বেশি দেখা যায়।

    ১০) হৃৎপিন্ডের দ্রুত হার 

    সাধারণত(৮-১০) সপ্তাহের দিকে আপনার হৃৎপিণ্ডের গতি দ্রুত হতে থাকে। এটি গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ। এর সাথে বুক ধড়ফড়ও থাকতে পারে। হরমোনের  তারতম্যের কারণেই এটি হয়ে থাকে।

    ১১) মুড সুয়িং

    মুড সুয়িং গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মেজাজও খিটখিটে হয়ে থাকে অনেক সময়। কখনো তারা ফুরফুরে থাকে আবার কখনো চড়া মেজাজে। এও হরমোনেরই খেলা। তখন দেখা যায় খাবার নয় এমন জিনিসও খেতে ইচ্ছা করে। যখন তখন মেজাজের এই পরিবর্তনকে মুড সুয়িং বলে। স্বামী বা পরিবারের পর্যাপ্ত সহযোগিতায় এই সমস্যা মেটানো সম্ভব।

    প্রেগন্যান্সি একটি দীর্ঘ কঠিন যাত্রা। খুব সাবধানে এবং চিন্তামুক্ত হয়ে এই সময় পার করতে হয়। সবার সহযোগিতাই পারে হবু মাকে এই সময়টি পার করতে। সুস্থ থাকুন নিজের খেয়াল রাখুন।

     

    ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক

     

    227 I like it
    36 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort