ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে ১২টি উপায়

ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে ১২টি উপায়

bad smell

এই তীব্র গরমে সবার ঘাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। মানুষের ভিড় পলিউশন, আবহাওয়ার আর্দ্রতা কোনটার সাথেই যেন মার্কেটগুলোর দুর্দান্ত গতিতে চলা এয়ারকনডিশনগুলো পেরে উঠছে না। এসব কিছুর ফলাফল গায়ে ঘামের দুর্গন্ধ। এটা যেমন আপনাকে সবার মাঝে বিব্রত করে তেমনি আপনি হয়ে ওঠেন সবার বিরক্তির কারণ। শুধু মার্কেট কেন অফিস-আদালত, বন্ধুদের আড্ডা সব জায়গায় আপনার উপস্থিতি কারও কাম্য থাকে না। অনেক সময় অনেকে বুঝতে পারেন না নিজের গায়ের উটকো ঘামের দুর্গন্ধ। যারা বুঝতে পারেন আর যারা বুঝতে পারেন না তাদের সবার জন্য বলছি সাবধানতা অবলম্বন করা তো দোষের কিছু না। এতে করে নিজে যেমন ঝর ঝরে থাকবেন তেমনি সবার কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত আপনি হয়ে উঠবেন আসরের মধ্যমণি। চলুন জেনে নেই ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে কিছু উপায়।

ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে কিছু উপায়

ঘামের দুর্গন্ধ কেন হয়?

আমাদের ত্বকে কিছু ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে যখন তারা এপোক্রাইন গ্ল্যান্ড ও ইকক্রাইন গ্ল্যান্ড থেকে নির্গত ঘাম ভেঙ্গে প্রপানয়িক এবং ভ্যালেরিক এসিডে রূপান্তরিত করে তখন ঘামের দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। অনেকে বলে থাকেন, ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে গেলে এমনটি হয় কিন্তু আসলে যখন ব্যাকটেরিয়া প্রোটিনকে এসিডে পরিণত করছে তখনি এমনটি হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়া তার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বা আবহাওয়া না পেলে প্রোটিন ভাঙতে থাকে। এমনকি সোডিয়ামযুক্ত খাবার বেশি খেলেও এমনটি হয়।

Sale • Body Mist/Spray, Shower Gels & Body Wash

    ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে করনীয়

    ০১. আর্ম পিট

    আর্ম পিট বা বগলে এপোক্রাইন গ্ল্যান্ড অনেক বেশি থাকে। ফলে ঘামের উৎপত্তি এখানে অনেক বেশি।

    • আর্ম পিট পরিষ্কার রাখুন – প্রতিদিন anti-bacterial সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। এতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন কম হবে আর ঘামও কম হবে। ফাইনাল ফলাফল শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ কম হবে।

    • আর্ম পিটের লোম পরিষ্কার করুন – বগলের লোম জমে থাকা ঘামকে বাষ্পীভূত হতে দেয় না, ব্যাকটেরিয়া অনেক সময় ধরে দূর্গন্ধ তৈরি করে। তাই নিয়মিত আর্ম পিট ওয়াক্স করুন।

    • Deodarant ব্যবহার – Deodarant ত্বককে আরও বেশি এসিডিক করে তোলে, যা ব্যাকটেরিয়ার জন্য অগ্রহণযোগ্য অবস্থা। Antiperspirant গ্লান্ডের sweating কার্যকারিতাকে বন্ধ করে দেয় ফলে শরীরে কম ঘাম হয়।

    ০২. গরম পানি দিয়ে গোসল করুন

    প্রতিদিন অন্তত একবার গোসল করুন। মনে রাখবেন গরম পানি শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে আর যদি আবহাওয়া গরম থাকে তাহলে চেষ্টা করবেন কয়েকবার গোসল করে নিতে।

    ০৩. ন্যাচারাল ফাইবার যুক্ত কাপড় পরিধান করুন

    সিল্ক, সুতি জাতীয় কাপড় ত্বককে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেয়। ফলে ঘাম সহজে বাস্পায়িত হতে পারে।

    ০৪. ঘামযুক্ত পায়ের ট্রিটমেন্ট

    পায়ে ঘামের দুর্গন্ধ থাকলে জুতা খোলার সঙ্গে সঙ্গে সবার সামনে নিজেকে কি বিব্রতকর অবস্থাতেই না পড়তে হয়।

    • পায়ের তালুতে গরম পানির ছোঁয়া – আগেই বলেছি গরম পানি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। তাই প্রতিদিন অন্তত একবার হালকা গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন।

    • মোজা – মোজার কাপড়টা এমন হওয়া উচিত যেন বাতাস এর ভেতর দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারে। উল আর ম্যানমেড ফাইবারের সংমিশ্রণে তৈরি মোজাই উৎকৃষ্ট। প্রতিদিন পরিষ্কারভাবে ধোয়া মোজা পরবেন।

    • জুতা – চামড়ার জুতা পায়ের ঘাম বাষ্পীভূত হতে সাহায্য করে। পর পর দুইদিন একই জুতা পরবেন না, কারণ জুতার ভেতরের ঘাম শুকানোর জন্য এক রাত যথেষ্ট না।

    ০৫. লেবু এবং মধু

    ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে লেবু এবং মধু - shajgoj.com

    লেবুর সাথে মধুর সংমিশ্রণ ঘামের দুর্গন্ধ প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান ঘরোয়া উপায়। খুবই সিম্পল ,একটি বাটিতে হালকা গরম পানি নিন, তাতে ২ টেবিল চামচ মধু আর ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস নিন। তারপর আপনার যেসব স্থান ঘামে সে সব জায়গায় এই সলিউশন দিয়ে রিন্স করে নিন। তারপর শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। লেবু শরীরে ঘামের পরিমান কমিয়ে আনে।

    ০৬. আপনি শুনে হয়ত অবাক হবেন যে ভিনেগার অতিরিক্ত ঘামের পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনে। রাতে ঘুমানোর আগে ভিনেগার আপনার আর্ম পিটে লাগিয়ে ঘুমান আর সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করতে থাকলে আস্তে আস্তে আপনি ঘামের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।

    ০৭. গরম পানির সাথে নিম এক্সট্রাকট

    নিম এক্সট্রাকট একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী যা শরীরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। একটি বাটিতে ফুটন্ত গরম পানি নিয়ে তাতে কিছু নিমের পাতা ছেড়ে দিন। তারপর অপেক্ষা করুন ২০ মিনিট। এই কয় মিনিটে নিম পাতা থেকে সমস্ত নির্যাস বের হয়ে যাবে আর পানিও একটু ঠাণ্ডা হয়ে আসবে। এবার শুকনো তোয়ালে এই পানিতে ডুবিয়ে আপনার যেসব স্থান ঘামে সেসব স্থান মুছে নিন।

    ০৮. টি ট্রি অয়েল

    যদিও এটা আমাদের দেশে সহজলভ্য নয় তবুও কেউ যদি পেয়ে থাকেন তবে ঘামের দুর্গন্ধ সারাবার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। টি ট্রি অয়েলও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য উপকারী। একটি স্প্রে বোতলে পানি ভরুন তারপর এর সাথে ৩ ফোটা অয়েল মিশান। প্রতিদিন গোসল করার আগে ব্যবহার করুন।

    ০৯. রোজ ওয়াটার বা মিনট বাথ

    গোসল করার আগে বালতিতে কিছু পুদিনা পাতা বা কয়েক ফোঁটা গোলাপ পানি দিন। তারপর ঐ পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে তাৎক্ষনিকভাবে আপনার শরীর deoderize হবে।

    ১০. সব সময় নিজেকে শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। গোসল করার পর ভালোভাবে শরীর শুকিয়ে ভালো মানের deodarant ব্যবহার করুন।

    ১১. শশাতে পানির ভাগ বেশি থাকে যা শরীরের গন্ধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটি করে শশা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

    ১২. ডায়টেশিয়ানের মতে সালফিউরিক সম্মৃধ খাবার যেমন ব্রকলি, বাধাকপি, ফুলকপি পরিমাণে কম খেতে হবে। কারণ এগুলোতে মিনারেল সালফার থাকে যা গন্ধযুক্ত গ্যাস আমাদের ত্বকের সাহায্যে নির্গত করে।

    তাহলে কিভাবে শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ দূর করবেন এই ব্যাপারে আর কোন সংশয় থাকার কথা না। কারণ উপরের সাধারন প্রাকৃতিক উপায় আর টিপস আপনাকে মুক্তি দিবে সকল বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে আর আপনিও থাকবেন প্রতিনিয়ত ক্লিন, ফ্রেশ।

    ছবিঃ সংগৃহীত – মেকআপঅ্যান্ডবিউটি.কম, ইমেজেসবাজার.কম

    95 I like it
    20 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort